আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং
নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় স্ত্রীকে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় স্বামী সাহেদ আহমদকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৩ জুন) দিবাগত রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সাহেদ আহমদ বড়লেখা সদর ইউনিয়নের মুছেগুল গ্রামের আনু মিয়ার ছেলে।
গত ৪ জুন ভোররাতে উপজেলার বড়লেখা সদর ইউনিয়নের মুছেগুল গ্রামে বিক্রির জন্য কানের সোনার অলংকার না পেয়ে আছমিনা বেগম (২৫) নামের ওই গৃহবধূকে তার স্বামী সাহেদ আহমদ আগুনে পুড়িয়ে দগ্ধ করে। আগুনে ওই গৃহবধূর শরীরের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে যায়। এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার (১১ জুন) ওই গৃহবধূর বাবা ছমির উদ্দিন বাদী হয়ে আছমিনার স্বামী ও শাশুড়িকে আসামি করে বড়লেখা থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পরদিন পুলিশ আছমিনার শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে করাগারে পাঠায়।
অপরদিকে আগুনে পোড়ানো হত দরিদ্র গৃহবধূ আছমিনা বেগমের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেন বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক। তাঁর উদ্যোগে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ওই গৃহবধূর চিকিৎসা চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই স্ত্রী হাসপাতালে রেখে উধাও হয়ে যায় স্বামী সাহেদ আহমদ। স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে পুলিশ নির্যাতিতার বাড়িতে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে আইনী সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। এরপর তাঁর পরিবার থানায় দুজনের নামে মামলা দেয়। এই ঘটনায় মামলার পরই স্বামীকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের বেশ কয়েকটি চৌকস টিম মাঠে নামানো হয়। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা পুলিশের পক্ষে সহজ ছিল না। পালিয়ে যাওয়ার পর সে কোনো মুঠোফোন ব্যবহার করেনি। যার কারণে তার অবস্থান জানা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু পুলিশ থেমে থাকেনি। সাহেদ পালিয়ে অবস্থান নিতে পারে এমন সব সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালানো হয়। চট্টগ্রাম ও ফেনীতে কয়েকবার অভিযান চালানো হয়। এরই মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের কাছে খবর আসে সে ঢাকার কামরাঙ্গীর চর এলাকায় কাজ করে। এই তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার রাতে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে অংশ নেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বড়লেখা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) শরীফ উদ্দিন ও সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) পিযুষ কান্তি দাস।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক সোমবার (২৪ জুন) রাতে বলেন, ‘ঘটনার পর সে পালিয়ে ঢাকা চলে যায়। এরপর নিজেকে আত্মগোপন রাখতে ব্যাগ তৈরির ওই কারখানায় শ্রমিকের কাজ নেয়। তাকে গ্রেফতার করেতে মাঠে দুটি চৌকস টিম কাজ করে। ওর মুঠোফোন ছিল না। তাই অবস্থান জানা কঠিন হয়ে পড়ে। গোপন সংবাদে কামরাঙ্গীর চরে অভিযান চালানো হয়। সেখানে একটি ব্যাগ তৈরির কারখানা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ডেরও আবেদন করা হবে।'
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৫ জুন ২০১৯/এজেএল/ডিজেএস