আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

কুলাউড়ার সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তে তিনটি কমিটি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-১২ ১৯:১২:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার :: কুলাউড়ার তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই আলোচিত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে ৩টি আলাদা কমিটি। নতুন করে তদন্তে নেমেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ। এর আগে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে কুলাউড়া  উপজেলা প্রশাসন আলাদা কমিটি গঠন করেছিল।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষকর নোমান আহমদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করেছিলো উপজেলা প্রশাসন। প্রধান শিক্ষক নোমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে গত ১৭ জুলাই কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ ও ৩০ জুলাই মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে যৌন হয়রানির অভিযোগে লিখিত অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকেও যৌন নিপীড়ন, বিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে ১ আগস্ট একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।

সহকারী শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও হয়। এরপর ২৯ জুলাই উচ্চ আদালত থেকে এক মাসের জামিন নেন। সর্বশেষ ২৮ সেপ্টেম্বর জেলা জজ আদালতে হাজির হয়ে চার্জশিট যাবার আগ পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে জামিন পান ওই প্রধান শিক্ষক।

জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৯ সেপ্টেম্বর এই ঘটনায় দ্বিতীয়বারের মতো তদন্তে নেমেছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মল্লিকা দে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ১ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে নতুন করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদকে আহবায়ক, সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মইনুল হক সদস্য ও কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ারকে সদস্য করে ৫ সেপ্টেম্বর এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কিন্তু ওই সহকারী শিক্ষিকার পরিবার থেকে কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ারের প্রতি অনাস্থা জানানো হয় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে। এর প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা বিভাগ তাদের গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে মো. আনোয়ারকে বাদ দিয়ে মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমানকে অন্তর্ভুক্ত করে।

এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ার সিলেটভিউকে বলেন, কোন কারণে তাকে তদন্ত কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে তা তিনি অবগত নন। নানা বিষয়ে বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক নোমানের কর্মকান্ড থেকে তিনি অনেক দূরে আছেন। তিনি প্রধান শিক্ষককে কোন ধরনের সহযোগিতা করেননি। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয় বলেও জানান।

তদন্তের ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ সিলেটভিউকে বলেন, চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ারের প্রতি বিভিন্ন অভিযোগ ও সহকারী শিক্ষিকার পরিবারের পক্ষ থেকে অনাস্থা থাকায় তাকে চিঠি দিয়ে তদন্ত কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়।

জেলা প্রশাসনের তদন্তের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মল্লিকা দে সিলেটভিউকে বলেন, পুরোপুরি তদন্ত কাজ এখনো শেষ হয়নি। ১ম ও ২য় ধাপের তদন্ত কাজ শেষ হয়েছে। আরো তদন্ত হবে তারপর প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। বর্তমানে এ ঘটনার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদও আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে সিলেটভিউকে জানান।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯/নাঈম/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন