আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কমলগঞ্জে ‌‘রবীন্দ্রনাথ ও মণিপুরী সংস্কৃতি’র শতবর্ষ স্মরনোৎসব পালন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-০৬ ১৭:১৬:৩২

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ও মণিপুরী সংস্কৃতির শতবর্ষ উদযাপন করে পালন করা হয়েছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সমিতি, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠনের মণিপুরী যৌথ উদ্যোগে এক বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্টানের মধ্যে দিয়ে এ অনুষ্ঠান পালন করা হয়।

শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশেকুল হক। পরে মাধবপুর ললিতকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্টান হয়।

বাংলাদেশ মণিপুরী সমাজ কল্যান সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিংহের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক কমলা কান্ত সিংহের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন- লেখক ও গবেষক ড.রঞ্জিত সিংহ, আহমদ সিরাজ, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ধীরেন্দ্র কুমার সিংহ, ললিতকলা একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা প্রভাষ সিংহ, নাট্যনির্দেশক  শুভাশিষ সমির ও সাংবাদিক পিন্টু দেবনাথ প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৯ খ্রী: নভেম্বর মাসে সিলেট আসার পর প্রথমে মণিপুরী হস্তশিল্প নজরে পড়ে। এসব  কারুকাজ দেখে অভিভূত হয়েছেন তিনি। এই হস্তশিল্পে কাপড় মণিপুরীদের তৈরী।

বক্তারা আরও বলেন,  মণিপুরী সংস্কৃতি দেখতে আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। সিলেট শহরে অবস্থিত মণিপুরী পাড়া মাসিমপুরে তিনি যান এবং মণিপুরী সংস্কৃতি অংশ রাখাল নৃত্য দর্শন করে তিনি মুগ্ধ হয়ে রাসলীলা নৃত্য দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ঐ দিনই ৬ নভেম্বর রাতে মাসিমপুরের মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া মেয়েরা মণিপুরী রাসনৃত্য পরিবেশন করেন। কবিগুরু মণিপুরী রাসনৃত্যর সাজসজ্জা,  সাবলীল ছন্দ ও সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে কলকাতার শান্তিনিকেতনে ছেলেমেয়েদের নৃত্য শেখাবার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।

পরবর্তীতে কলকাতার শান্তিনিকেতনে মণিপুরী নৃত্যর একটি বিভাগ চালু করে মণিপুরী নৃত্যশিক্ষক নিয়োগ করেন।

মণিপুরী নৃত্য ব্যবহার করে শান্তিনিকেতনে মঞ্চস্থ হয় " নটীর পুজা" ও "ঋতুরাজ"। পরে কবি গুরুর
আমন্ত্রণে যোগ দেন মণিপুরী রাস নৃত্যের গুরু  মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার
বালিগাঁও গ্রামের নীলেশ্বর মুখার্জ্জী।

নৃত্য গুরু নীলেশ্বর মুখার্জ্জীর অনেক খ্যাতনামা শিষ্য রয়েছেন তাদের মধ্যে ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অন্যতম। রবীন্দ্রসংগীতের গভীরতা ও কাব্যময়তার সাথে মণিপুরী নৃত্যের সাবলীল গতি ও বিশুদ্ধ নান্দনিকতার মধ্যে বিশেষ সামঞ্জস্য থাকায় শান্তিনিকেতনে উচ্চাঙ্গ নৃত্যধারার মধ্যে মণিপুরী নৃত্য সর্বাপেক্ষা সমাদৃত হয়।


আলোচনা শেষে ৬ নভেম্বর মণিপুরী নৃত্য দিবস ঘোষনা করা হয় ও মণিপুরী ললিতকলার শিল্পীরা কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ স্মরণে কবিতা, রবীন্দ্রসংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৬ নভেম্বর ২০১৯/জেএ/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন