আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

মৌলভীবাজারে হেমন্তের ঘ্রাণে ছড়ায় নবান্ন উৎসব

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-২১ ১৮:১৪:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার :: শুরু হয়েছে হেমন্ত ঋতু। হেমন্তের চিরচেনা বাংলার রুপ নবান্ন উৎসব। বাঙালির নবান্ন উৎসব শুরু হয় পয়লা অগ্রহায়ণ থেকে। চারিদিকে শুরু হয়েছে নবান্নের আমেজ। তবে এখন আর অনেক সময় অগ্রহায়ণের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়না। আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হওয়ায় নবান্নের ঘ্রাণে মুখরিত মৌলভীবাজারের বাতাস।

হেমন্তের ঘ্রাণে ছড়ায় নবান্ন উৎসব। কৃষকের জমিতে সোনালি ধান দেখে হেমন্তের ঘ্রাণযুক্ত বাতাস শরীরে লাগতে শুরু করে। তখন আর বুঝতে অসুবিধা হয় না যে সময়টা কী? এখন মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধানকাটা উৎসব। হেমন্তের প্রাণ যে নবান্ন উৎসব। তাই কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে নতুন ধানের নতুন চালের পিঠাপুলির আয়োজন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কম সময়ে অধিক ফলন হয় এমন জাতের ধান জমিতে লাগানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রি-৭৫ জাতের ধান। এ ধান ১১৫ দিনে ফসল কাটার জন্য উপযোগী হয়ে যায়। ব্রি-৭৫ জাতের চাল সরু থাকায় খেতে অধিকাংশ মানুষ পছন্দ করেন। এর চাল মানসম্পন্ন হওয়ায় বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। হেক্টর প্রতি এ ধানের উৎপাদন সাড়ে ৫ মেট্রিক টন পাওয়া গেছে।

এছাড়াও জমি থেকে ধান কাটার পর একই জমিতে সময়মতো রবিশস্য যেমন সরিষা, সুর্যমূখি, ভুট্রা, ডাল চাষ করা যায়। রবিশস্য চাষাবাদ বৃদ্ধি পেলে বিদেশ থেকে তৈল ও ডাল আমদানি নির্ভরতা অনেকটা কমে আসবে।

কৃষকরা বলছেন, সরকার কৃষি খাতে ভর্তুকী দেয়। কিন্তু আমরা কৃষি অফিস থেকে কোন ধরণের সহযোগীতা পাই না। এমনকি আমাদের কোন খোজ খবর নেয় না। পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হয় কিন্তু তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।

অনেকেই আবার বলছেন, কৃষি অফিস থেকে যে উপকরণগুলো দেওয়া হয় সেগুলো অনেকটা নিম্নমানের। সরকার যেহেতু কৃষিখাতে ভর্তুকী দেয় তাই মানসম্মত উপকরণগুলো যেন আমরা পাই।

কৃষক এস.এইচ.এ শাহিন জানান, এ বছর ১৩০ কেয়ার জমিতে রোপা আমন ব্রি ধান-৪৯, বিআর ১১ ও পরিক্ষামূলক ২ কেয়ার জমিতে ব্রি ধান-৭৫ চাষ করেছেন। প্রত্যেকটি জাতের ধানের ফলন ভাল হয়েছে। এর মধ্যে স্বল্পকালিন ব্রি ধান-৭৫ আশাতিত ফলন হয়েছে। গতবছর আমন মৌসুমে ১৩০ কেয়ার জমিতে ১ হাজার ৯শত ৭০ মন ধান পেয়েছেন। এ বছরও ২ হাজার মনের বেশী ধান পাবেন বলে আশাবাদি। তবে তিনি ধানের ন্যায্যমূল্য পাবেন কিনা এ নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন।

তিনি আরোও বলেন, সবাই যদি আগাম জাতের ধান লাগায় তাহলে ফসল পোকা মাকড় থেকে রক্ষা পাবে। কৃষি সম্প্রসরাণ অধিদপ্তর যে উপকরণ দেয় তা মানসম্মত নয়। মান সম্মত কৃষি উপকরণ দিলে কৃষকরা উপকৃত হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজারের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, এবছর রোপা আমনের আবাদ হয়েছে ১লক্ষ ১শত ৫০ হেক্টর জমিতে। রোপা আমন উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ২লক্ষ ৭০হাজার ৪শত ৫ মেট্টিক টন চাল।

তিনি বলেন, এ মৌসুমে ব্রি ধান-৪৯ সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। এছাড়াও চাষ হয়েছে হাইব্রিড, ব্রি-৫৮, ব্রি-৫২ ধান। নতুন ধান ব্রি-৭৫ ভালো হয়েছে। এছাড়াও ব্রি ধান-৭১, ব্রি ধান-১৪ ফলন ভালো হয়েছে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/২১ নভেম্বর ২০১৯/ওএফএন/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন