আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কমলগঞ্জে অবাধে টিলা কাটা হচ্ছে, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-১৪ ১৫:২৯:১৪

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা পাহাড়ি টিলা ও বনাঞ্চলে পরিপূর্ণ। বিভিন্ন স্থানে রয়েছে টিলা কাটা অব্যাহত। সাবাড় হচ্ছে টিলা। পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব টিলা কাটা চলছে।

ইউএনও’র বরাবর আবেদন করেই ব্যক্তি স্বার্থে সদর উবাহাটা গ্রামে লিজকৃত টিলা কেটে সাবাড় করা হচ্ছে বলে  অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সদর ইউনিয়নের উবাহাটা গ্রামের আব্দুল কাদির ব্র্যাকের একটি প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুবিধার অজুহাত দেখিয়ে বিশাল টিলা কেটে সাবাড় করছেন। বিদ্যালয়ের অজুহাত দেখিয়ে পাহাড়ি টিলার লাল মাটি কেটে নিজের বাড়ির ভিটে ভরাট ও মাটি বিক্রি করছেন। কয়েকদিন যাবত বনাঞ্চল সংলগ্ন এই টিলা কেটে নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে। উবাহাটা গ্রাম ঘেষেই কালাছড়া ও লাউয়াছড়া বনাঞ্চল। কয়েক মাস আগেও ঐ এলাকায় টিলা কাটার ফলে মাটি ধ্বসে এক গৃহিনীর মৃত্যু হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন এসব বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না কেন সাধারন মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জাগছে।

উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নেও কয়েক মাস আগে টিলা কাটার অভিযোগ পেয়ে ইউএনও সরেজমিনে গিয়ে মাটি কাটার যন্ত্রাংশ জব্দ করেন। এছাড়া সদর ইউনিয়নের কালাছড়া বনের টিলা কেটে বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা এলাকায়ও পাহাড়ি টিলা কাটার খবর পাওয়া গেছে। তবে গত সপ্তাহে রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি জানতে পেরে সরেজমিনে গিয়ে টিলা কাটা বন্ধ করেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

অবাধে টিলা কাটার ফলে ধ্বসে পড়ছে টিলার মাটি। তাছাড়া নিচু জমি ভরাট, মাটি বিক্রি করা এসব নানা অপতৎপরতার ফলে বিলীন হচ্ছে পাহাড়ি টিলাভূমি। বন্যপ্রাণির চলাফেরা, খাবার সংগ্রহ, মাটির ক্ষয়রোধ ও পরিবেশের জন্য পাহাড়ি টিলাভূমি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে। অব্যাহতগতিতে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি টিলাভূমি কেটে ফেলায় মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অভিযোগ বিষয়ে উবাহাটা গ্রামের আব্দুল কাদির বলেন, খরিদা সূত্রে টিলার মালিক আমি। তবে ব্র্যাকের প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ভূমি অফিস ও ইউএনওকে জানিয়ে টিলা কাটা হচ্ছে।

এব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, টিলা কাটার অনুমতি দেওয়ার আমার কোন অধিকার নেই। কে বা কাহারা টিলা কাটছে তদন্তক্রমে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

মৌলভীবাজারের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: বদরুল হুদা বলেন, পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ এর ছয়ের (খ) অনুযায়ী সরকারী, বেসরকারী, ব্যাক্তি মালিকা দিন যে কোন টিলা বা পাহাড় কেউ কাটতে পারবেনা। এ উপজেলায় পাহাড় কাটার বিষয়টি তদন্ত ক্রমে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ জানুয়ারি ২০২০/জেএ/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন