আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বড়লেখায় খুন হওয়া চারজনসহ পাঁচজনের লাশ হস্তান্তর

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-২০ ২২:০৬:৩২

এজে লাভলু, বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার পাল্লাথল চা বাগানে নৃশংসভাবে খুন হওয়া চারজনসহ পাঁচজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাগান পঞ্চায়েত কমিটির কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।  সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাতেই বাগানের ৮ নম্বর শ্মশান ঘাটে তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
 
এর আগে সোমবার বিকেলে উপজেলার পাল্লাথল চা বাগানের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান। এ সময় মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ, সিলেটের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার গৌতম দেব, উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, কাজের দিনেও বাগানে নেই কোনো কর্মচাঞ্চল্য। প্রতিদিনের মত কেউ আর যার যার কাজ করছেন না। চায়ের ফ্যাক্টরিও বন্ধ। চা শ্রমিক পরিবারের লোকজনদের চেহারায় হতাশার চাপ। লোমহর্ষক এই হত্যাকান্ডের মত ঘটনা আগে কখনোই দেখেননি পাল্লাতল চা বাগানের শ্রমিকরা। এই ঘটনার আকস্মিকতায় প্রায় সকলেই বাকরুদ্ধ। বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে নিজেদের মধ্যে ফিস ফিস করে কথা বলছিলেন নারী চা শ্রমিকেরা। আফসোস আর আহাজারি ছাড়া তেমন কোনো কথাই বলতে পারছেন না কেউ।

বাগানের ফ্যাক্টরির সামনে কথা হয় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কার্তিক কর্মকারের সাথে। তিনি বলেন, ‘হত্যাকান্ডের এই ঘটনাটিতে সকলেই মর্মাহত। সোমবার বাগানের কাজের দিন। কিন্তু ঠিকমত কেউ কাজে যোগ দেয়নি। শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে সবাই। অনেকের ঘরে রান্নাই হয়নি। খাবার খেতে মন চাইনে। কেউ এই ঘটনাটি ভুলতে পারছে না।’

জানা গেছে, গত রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ভোররাতে বড়লেখার ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পাল্লাথল চা-বাগানে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী, শাশুড়ি এবং দুই প্রতিবেশীকে কুপিয়ে হত্যা করেন নির্মল কর্মকার (৩৮) নামের এক ব্যক্তি। এরপর ঘরের তীরের সাথে রশিতে ঝুলে নিজেই আত্মহত্যা করেন।

নিহতরা হচ্ছেন নির্মল কর্মকারের স্ত্রী জলি বুনার্জি (৩০), শাশুড়ি ল²ী বুনার্জি (৬০), প্রতিবেশী বসন্ত ভৌমিক (৬০) এবং বসন্তের মেয়ে শিউলী ভৌমিক (১৪)। হামলায় বসন্ত বক্তার স্ত্রী কানন ভৌমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সময় কোনোরকম পালিয়ে প্রাণে বেঁচে গেছে জলি বুনার্জির আগের স্বামীর পক্ষের মেয়ে চন্দনা বুনার্জি (৯)। সব হারিয়ে বেঁচে যাওয়া চন্দনা এখন বাগানের ফ্যাক্টরি বাবুর পরিবারের আশ্রয়ে আছে।

বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়াছিনুল হক সোমবার (২০ জানুয়ারি) বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু ও একটি হত্যা মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পঞ্চায়েত কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ জানুয়ারি ২০২০/লাভলু/পিডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন