Sylhet View 24 PRINT

কুলাউড়ায় সরকারি গাছ কাটার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন ইউএনও

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-২১ ১৯:২০:৪৭


নিজস্ব সংবাদদাতা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচালে সরকারি ভূমি থেকে অবৈধভাবে গাছ কাটার হিড়িক পড়েছে। অবৈধভাবে ভূমি দখল করে গাছ ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

গতকাল ২০ জানুয়ারী (সোমবার) সিলেটভিউ২৪ডটকম-এ সংবাদ প্রকাশের পর আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারী) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি টিম।

এদিকে গাছ কর্তন করে বিক্রয়ের অভিযোগ এনে বনবিভাগ বাদী হয়ে জড়িত লিয়াকত আলী ও আব্দুল আহাদকে আসামী করে মামলা (নং-৪) দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়ার বরমচাল ইউনিয়নের পশ্চিম সিঙ্গুর এলাকায় সরকারি খাস ভূমির কয়েকটি টিলা দখল করে কয়েকদিন থেকে অবাধে চলছিলো আকাশমনি, বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা। স্থানীয়দের অভিযোগ ছিলো খোদ বরমচাল বনবিট কর্মকর্তা আহমদ আলী এই গাছ ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত। উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের চকেরগ্রামের বাসিন্দা লিয়াকত আলী ও একই ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আহাদসহ আরও কয়েকজন স্থানীয় এই গাছগুলো কর্তনের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। লিয়াকত আলী এই খাস জমি জবরদখল করে গাছ রোপন করেন। পরে গাছগুলো তিনি বিক্রি করেছেন আব্দুল আহাদের কাছে। আব্দুল আহাদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে তার লোকজন দিয়ে এই গাছগুলো অবাধে কর্তন করছেন।

অবাধে গাছ কাটার ঘটনা স্থানীয় মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হলে কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্য পান। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে গাছ কাটার বিষয়টি অস্বীকার করেন বনবিট কর্মকর্তা আহমদ আলী। পরে বিষয়টি চাউর হলে তিনি কিছু গাছ জব্দ করেন। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে জানান, গাছগুলো রিজার্ভ ফরেস্টের না, ওগুলো ডিসি খতিয়ানের ভূমির গাছ।’ এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি স্থানীয় বরমচাল ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তার সহযোগীতায় আকাশমনি, বেলজিয়ামসহ নানা প্রজাতির প্রায় ১৩০টি গাছ জব্দ করেন।
অবাধে গাছ কাটার অভিযোগ শুনে বুধবার সকালে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী, বনবিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জের কর্মকর্তা এনামুল হক, বন সম্প্রসারণ কেন্দ্র কুলাউড়ার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন, বরমচাল বনবিট কর্মকর্তা আহমদ আলী ও বরমচাল ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দেব। পরে জব্দকৃত গাছগুলো তারা বিট অফিসে নিয়ে আসেন।

সরকারি ভূমি দখলকারী ও গাছ বিক্রেতা লিয়াকত আলী জানান, সরকারি খাস জমি আমাদের দখলে আছে কিন্তুু এখানে কোন গাছ কাটা হচ্ছে না। তিনি গাছ কাটার বিষয়ে কিছুই জানেন না।

অভিযোগ অস্বীকার করে বরমচাল বন বিট কর্মকর্তা আহমদ আলী জানান, সরকারি খাস জমি থেকে বেআইনীভাবে গাছ কাটা হচ্ছে শুনে সরেজমিন টিলায় গিয়ে কর্তনকৃত গাছগুলো জব্দ করি।

বন বিভাগের কুলাউড়ার রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করে জব্দকৃত গাছগুলো বিট অফিসে আনা হয়েছে। আর এই ভূমি হলো ডিসির খাস খতিয়ানের। গাছ কাটার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী জানান, বিষয়টি জানার পর বনবিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করি এবং বনবিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আরো সতর্ক ও  দায়িত্বশীল থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গাছ কাটার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বনবিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/২১জানুয়ারী২০২০/শাকির

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.