Sylhet View 24 PRINT

চায়ের রাজ্যে ‘ত্রিপুরাবাসী’কে আমন্ত্রণ জানালেন আব্দুস শহিদ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০২-২৪ ১৬:৪৬:৩৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার :: চায়ের রাজ্য মৌলভীবাজারে ত্রিপুরাবাসীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহিদ।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অনুষ্ঠিত ভারত-বাংলা পর্যটন উৎসবে এই আমন্ত্রণ জানান।

সম্প্রতি আগরতলার রাজবাড়ি উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদের সামনে বর্ণিল আলোক প্রদর্শনীর মাধ্যমে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আব্দুস শহিদ বলেন, “ত্রিপুরায় অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশী সংখ্যক পর্যটক বাংলাদেশ থেকে আসেন। শুধু বাংলাদেশ থেকে আসেন যেম, তেমনি আমার বৃহত্তর সিলেট বিভাগ, নিজ জেলা মৌলভীবাজার। যে জেলা চায়ে সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী বলা হয় আমার নির্বাচনী এলাকা শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জকে। সেই এলাকার মানুষও এখানে প্রায়শই ভ্রমণ করতে আসেন। আমার নির্বাচনী এলাকায়ও ত্রিপুরা রাজার অনেক কিছু রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকরা”।

তিনি আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, “সেই হিসাবে আমি আশা করব। আমাদের দেশের পক্ষ থেকে ত্রিপুরাবাসীকে এটুকু আমন্ত্রণ জানাবো। আমাদের বাংলাদেশেও ধর্মীয়সহ যে সমস্ত আকর্ষণীয় স্থান সমূহ রয়েছে। সে গুলো আপনার দেখলেও, আমার মনে হয় আপনাদের আরো উৎসাহ যোগাবে। যেমন সিলেটের হযরত শাহ জালালের পূর্ণভূমি তেমনি শ্রী চৈতন্যদেবের পূর্ণভূমি হিসেবে সবাই শ্রদ্ধা জানান। সিলেটের মাটিকে সবাই শ্রদ্ধা জানান”।

তিনি আরো বলেন, “অপার সম্ভবনা আমাদের পর্যটন এলাকার আছে। আমরা পর্যটন আইনকে সংশোধন করেছি সংসদে। পর্যটন এলাকা হিসেবে সিলেটকে আমরা আইনী আওতায় নিয়ে এসেছি। সে জন্য আমি আহবান জানবো মূখ্যমন্ত্রীকে, পর্যটন মন্ত্রীকে, পর্যটন বিভাককে, যে আপনারা আসুন। আপনাদেরকে আমি আমন্ত্রণ জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী, সরকার ও জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে। আপনারা আসুন, আমাদের এলাকা সফর করুন। আপনারা আমাদের এলাকা ভ্রমণ করুন। অবশ্যই আমরা আশা করব এই ভ্রমণের মাধ্যমে আমাদের শক্তি, আমাদের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। অর্থনৈতিক পরিসর আরো সমৃদ্ধ হবে। আমাদের সংস্কৃতির বন্ধন সেটা সুদৃঢ় হবে। আমাদের প্রত্যাশ আপনাদের আগমন-নির্গমন। দুটাই আরো বাড়বে”।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহিদ বলেন, “এই ত্রিপুরা ও বাংলাদেশ তথা ভারতের এই অঞ্চল বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গসহ সকল মানুষের সঙ্গে আমাদের জীবন ব্যবস্থার একটা সাদৃশ্য রয়েছে। আমাদের একটা ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির বন্ধন, এমনকি আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে একটা সাদৃশ্যতা রয়েছে বলেই এই সমস্ত কর্মকান্ড আমদের উৎসাহিত করে। সেই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদেরকে সাহায্য করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে আত্মহুতি দিয়েছেন ভারতের অনেক নাগরিক যারা সেনাবাহিনিতে কাজ করেছিলেন। আমি নিজেই একজন মুক্তিযুদ্ধা। আমি ১৯৭১ সনের ১ শে এপ্রিল যখন পাক বাহিনি আমার পরিবারকে অত্যাচার নির্যাতন করে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসাবে পরীক্ষা শেষ করে যখন ঘরে ফিরব, বাড়িতে ফিরব। তখন আমার আর ফিরা হয়নি। আমি আশ্রয় নিয়েছিলাম ভারতে এসে। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনিং গ্রহণ করে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। সেই নয় মাসের যুদ্ধে অংশ নেয়ার যে উৎসাহ। ভারতের জনগণ যুগিয়েছিল, সরকার যুগিয়েছিল। ভারতের মানুষের যে ভালবাসা ও এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দেয়ার তাদের যে দুসাহস ছিল। সেটার কারনেই আমরাও সে দিন যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলাম। আমরা জয়লাভ করেছিলাম। এই সহযোগীতা ভারতবাসীর কারণেই সম্ভব হয়েছিল”।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, বাংলাদেশের মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ, ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দফতরের মন্ত্রী প্রাণজিৎ সিংহ রায়, ত্রিপুরা রাজ্যের পশ্চিম আসনের সংসদ সদস্য প্রতিমা ভৌমিক, আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার কিরীটি চাকমা, ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দফতরের অধিকর্তা বিশ্বশ্রী বি উপস্থিত ছিলেন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০/এএফএন/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.