আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বড়লেখার সাবেক সাংসদ মু‌ক্তি‌যোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম আর নেই

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৪-০৫ ০৭:৫৩:৪২

এ.জে লাভলু, বড়লেখা :: মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য মুক্তিযাদ্ধা সিরাজুল ইসলাম আর নেই। শনিবার আমেরিকার সময় সন্ধ্যা ৫টা ৪০ মিনিটে স্থানীয় একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও ৪ মেয়ে, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

রবিবার (০৫ এপ্রিল) সকাল ৭টায় সিরাজুল ইসলামের ছেলে আনিসুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাবা দীর্ঘদিন থেকে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গতরাত বাংলাদেশ সময় সাড়ে এগোরাটায় আমার সাথে ফোনে কথা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অসুস্থবোধ করে মাটিতে পড়ে যান। পরে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, বাবার জানাজার সময় এখনো নির্ধারণ হয়নি। নির্ধারণ হলে জানিয়ে দেওয়া হবে। আর লাশ দেশে আনার চেষ্টা চলছে।

এদিকে মুক্তিযাদ্ধা সিরাজুল ইসলামের মৃত্যুতে তাৎক্ষিণকভাবে গভীর শোক ও শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুনেজর আহমদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, সিরাজুল ইসলামের মতোন জনঘিনষ্ট রাজনীতিবিদ বড়লেখার মাটিতে আর জন্ম নেবেন না। তিনি আক্ষিরক অর্থেই একজন হাকালুকি পারের মাটি ও মানুষের জননেতা ছিলেন। তিন তাঁর সন্তানদের আর্থিক সম্পদ না রেখে গেলেও ব্যক্তি সিরাজুল ইসলাম বড়লেখার রাজনীতির একটি প্রতিষ্ঠান। ইতিহাস একদিন তাঁকে যথার্থ মূল্যায়ন করবে। বিনয়ী, বিচক্ষণ, বাগ্মী এ নেতাকে বড়লেখার মানুষ বহুকাল ভুলবে না।

মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ১৯৪৩ সালে মৌলভীবাজার বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের টেকাহালি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষকতা দিয়ে পেশা জীবন শুরু করেন। ষাটের দশকে তিনি বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন।

১৯৬৩-৬৪ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সালে বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের থানা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রথম সারির একজন সংগঠকের ভূমিকা পালনের পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭২ সালে মৌলভীবাজার মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৩ ও ১৯৭৯ সালে পর পর দুইবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে মৌলভীবাজার-১ আসনে সাংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে বড়লেখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আমেরিকায় পাড়ি জমান। এরপর থেকে তিনি রাজনীতিতে অনেকটা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েন। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ৫ এপ্রিল ২০২০/ লাভলু

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন