আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সি‌লেট‌ভিউ‌য়ে সংবাদ প্রকা‌শের পর ব‌কেয়া মজুরী পা‌চ্ছে কুলাউড়ার চা শ্র‌মিকরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৫-১১ ১৫:৩০:১৬

শা‌কির আহমদ, কুলাউড়া :: সি‌লেট‌ভিউ২৪ডটকম-সহ বি‌ভিন্ন গণমাধ্যা‌মে ধারাবা‌হিক প্র‌তি‌বেদ‌নের পর অব‌শে‌ষে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কালিটি চা বাগানের ৫৩৭ চা-শ্রমিকের নগদ মজুরি, বকেয়া বোনাস দেওয়া শুরু হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী ১৩ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পাচ্ছেন তারা।

র‌বিবার (১১ মে) থে‌কে শ্র‌মিক‌দের মা‌ঝে ব‌কেয়া মজুরী প্রদান করা শুরু হয়। মজুরী পে‌য়ে বেজায় খুশি শ্রমিকরা। বেতন পাওয়ার এই আনন্দ‌কে তাদের দীর্ঘ‌দি‌নের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখছেন।

আ‌ন্দোলনকে ফলপ্রসু করতে সহায়তা করায় চা-শ্রমিকরা সি‌লেট‌ভিউ২৪ডটকম-সহ ‌বি‌ভিন্ন গণমাধ্যমমের প্র‌তি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। কারণ, শেষ পর্যন্ত ক‌য়েক‌টি গণমাধ্যম তাদের পাশে ছিল। ব‌কেয়া মজুরীর দা‌বি প্রস‌ঙ্গে চা-বাগান সংক্রান্ত বেশ কয়েকটা প্র‌তিবেদন প্রকাশ ক‌রে সি‌লেট‌ভিউ।

চা -শ্রমিক অনিমা অলমিক জানান, বকেয়া মজুরি আমাদের আন্দোলনের ফসল। ছেলে-মেয়ে নিয়ে কষ্টে দিন কেটেছে। তাদের লেখাপড়ার খরচসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে হিমশিম খেয়েছি। এখন নগদ মজুরি পেয়ে খুবই ভালো লাগছে।

চা শ্র‌মিক দয়াল অল‌মিক জানান, ব‌কেয়া মজুরীসহ নানা সমস্যায় জর্জ‌রিত কা‌লি‌টি চা বাগা‌নের শ্র‌মিকরা। আমরা আ‌ন্দোলন সংগ্রা‌মের পাশাপা‌শি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য বারবার প্রশাসনের সঙ্গে বসেছি। অবশেষে ব‌কেয়া মজুরীর সমস্যাটা সমাধান হলো। স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে মজুরি পেয়েছি। আমরা খুশি।

চা-শ্রমিক নেতা বিশ্বজিত রবিদাশ বলেন, অনেক কষ্টে দিন কেটেছে। ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন করেছি। আমাদের প্রাপ্য টাকা এতদিন আটকে রাখা হয়েছিল। অবশেষে মজুরি পেয়েছি। দে‌শের বি‌ভিন্ন জন‌প্রিয় গণমাধ্যম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে ছিল। এজন্য তা‌দের প্র‌তি অনেক কৃতজ্ঞতা।

চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কালোয়ার জানান, দীর্ঘ আন্দোলনের পর মজুরি দেওয়া হয়েছে। সব দাবি বাস্তবায়নের সম্মতি পাওয়া গেছে। তিনি আরও জানান, আমাদের ১৩ দফা দাবির ছয়টির বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি সাত দফা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে হবে।

চা-বাগানের ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দাশ জানান, শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া শুরু হয়েছে। কালিটি চা বাগানের ৫৩৭ চা-শ্রমিকের নগদ মজুরি ও বকেয়া বোনাস দেওয়া শুরু হয়েছে। তারা ১৩ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পাবেন।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, সবার ঐকান্তিক চেষ্টায় বিশেষ করে জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন স্যারের বিশেষ সহযোগিতায় বারবার মিটিং করে সমাধানের পথ খোঁজা হয়েছে। অবশেষে চা-বাগানের এই সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। সবার সহযোগিতায় চা-শিল্প টিকিয়ে রাখতে হবে। তিনি আরও জানান, নগদ প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৮৯৭ টাকা চা-শ্রমিকদের দেওয়া হবে।

এ‌বিষ‌য়ে জেলা প্রশাসক না‌জিয়া শি‌রিন জানান, শ্র‌মিক‌দের মজুরী আদায় কর‌তে মা‌লিক প‌ক্ষের সা‌থে ক‌য়েক দফা বৈঠক ক‌রি আমরা। স‌রেজ‌মিন ঘটনাস্থ‌লেও গি‌য়ে‌ছি বারবার। এক প্রকার চাপ প্র‌য়োগ ক‌রে মজুরীর বিষয়টা সমাধান করা হ‌য়ে‌ছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ মে ২০২০/এসএ/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন