আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় সড়কের পাশে লাগানো এক যুগ পুরনো ৫ লক্ষ টাকা মূল্যের গাছ কর্তন করে চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জড়িতদের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বনবিভাগ এমনটি অভিযোগ স্থানীয়দের।
গত ১৩ মে উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ সড়কের পাশ থেকে মূল্যবান গাছগুলো কেটে নেয় দুষ্কৃতিকারীরা।
এই ঘটনায় গত ১৭ মে স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসন বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। যার অনুলিপি মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা দূর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে কর্তনকৃত গাছের ১৫.১২ ঘনফুট কাঠ জব্দ করেছে স্থানীয় বনবিভাগ তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে এখনো বনবিভাগ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ সড়কের দুই পাশে সরকারিভাবে রাস্তা রক্ষার জন্য ১২ বছর পূর্বে সামাজিক বনায়নের আওতায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপন করা হয়। এতে অনেক উপকারভোগী রয়েছেন। বর্তমানে গাছগুলো অনেক মূল্যবান ও বড় হওয়াতে ইউনিয়নের ভূকশিমইল গ্রামের বাসিন্দা সুনি মিয়ার ছেলে অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুস ছালামের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। গত ১৩ মে তাঁর যোগসাজশে একই এলাকার মৃত মন্তাজ মিয়ার ছেলে লাকি মিয়া ও আব্দুল হান্নানের ছেলে সাইফউদ্দিন সাজুসহ একটি সংঘবদ্ধচক্র রাতের আধারে মূল্যবান আকাশি ও মেহগনিসহ বেশ কয়েকটি গাছ কেটে নিয়ে যায়। এলাকাবাসীর ধারণা, কর্তনকৃত গাছের আনুমানিক মূল্য হবে ৪-৫ লক্ষ টাকা। এছাড়া এই সড়কের পাশ থেকে প্রায়শই গাছ কাটা হত বলে জানান এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর ধারণা, এই চক্রটি এই গাছগুলি চুরি করে কেটে নিয়ে যায়। ঘটনার দুইদিন পর কুলাউড়া বনবিভাগ কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুস ছালামের বাড়ির পাশে একটি পুকুর থেকে কাটাগাছগুলো উদ্ধার করে জব্দ করে বন অফিসে নিয়ে আসে।
অভিযুক্ত কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি এটাকে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র বলে জানান।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ভূকশিমইল ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, গাছ কাটার বিষয়টি বনবিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তুু এখনো জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বনবিভাগ। এলাকায় সামাজিক বনায়ন রক্ষার জন্য জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে বনবিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. এনামুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ না করাতে তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে কুলাউড়া বনবিভাগের স্টাফ আকবর জানান, অভিযোগ পেয়ে আমরা চুরিকৃত গাছের কিছু খন্ড উদ্ধার করেছি। তদন্তের পর বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে এ ব্যাপারে (শ্রীমঙ্গল) বিভাগীয় সহকারী বন সংরক্ষক জিএম আবু বকর সিদ্দিক জানান, গাছ কাটার বিষয়টি শুনেছি। ইতোমধ্যে কাঠগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। খুব দ্রুত জড়িতদের বিরুদ্ধে বন আইনে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এভাবে যেকোন এলাকায় সামাজিক বনায়নের গাছ কাটার কোন খবর পেলে তাৎক্ষণিক বনবিভাগসহ প্রশাসনকে দ্রুত জানানোর অনুরোধ জানান তিনি।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২১ মে ২০২০/শাকির/পিডি