আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

জুড়ীতে ক্ষুব্ধ জনতার আন্দোলন থামালেন ইউপি চেয়ারম্যান

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৫-২৯ ২১:৫৯:৫৭

জুড়ী প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় প্রায় ৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন জুড়ী-ফুলতলা-বটুলী রাস্তার কাজের ধীর গতি ও ব্যাপক অনিয়মের প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে ফুলতলা বাজারে ইউনিয়নবাসী মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল। যথাসময়ে মানববন্ধনের প্রস্তুতিও নিচ্ছিল লোকজন। কিন্তু উচ্চ পর্যায়ের অনুরোধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদের হস্তক্ষেপে ভুক্তভোগীরা এই কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ২৩কি.মি. দীর্ঘ জুড়ী-ফুলতলা-বটুলী চেকপোস্ট সড়কের পুরোটাই ভেঙ্গেচুরে বেহালদশায় পরিণত হয়। ২০১৮ সালের ২৯ মে জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর সভায় “জেলা মহাসড়কসমূহ যথাযথ মান ও প্রশস্থতায় উন্নতিকরণ (সিলেট জোন)” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সড়ক বিভাগ, মৌলভীবাজার এর বাস্তবায়নে জুড়ী-ফুলতলা (বটুলী) (জেড-২৮২৩) জেলা মহাসড়কটি ১২ ফুট হতে ১৮ ফুটে উন্নীতকরণসহ মজবুতিকরণ কাজের জন্য ৬৯ কোটি টাকা ব্যয় অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে তা ৭৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পায়। ২০১৯ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে এর কার্যাদেশ হয়। কাজের মেয়াদ দুই বছর নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

কাজের ধীরগতি ও ব্যাপক অনিয়মের প্রতিবাদে এবং এর ফলে সৃষ্ট জনভোগান্তি নিরসনের লক্ষ্যে ফুলতলা ইউনিয়নের ভুক্তভোগী জনসাধারণ শুক্রবার মানববন্ধন করার প্রস্তুতি নেয়। মানববন্ধনের প্রাক্কালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ সেখানে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে নিয়ে এক সভায় মিলিত হয়ে প্রশাসনের আশ্বাস বাণী শুনিয়ে মানববন্ধন স্থগিতের আহবান জানান। তাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে ভুক্তভোগী জনতা কর্মসূচি স্থগিত করেন।

এ সময় স্থানীয় জনতা ও উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অভিযোগ, ক্ষোভ, নিন্দা ও আবেগময়  বক্তব্যে তিনি বলেন, রাস্তার কাজ পায় ঢাকার ঠিকাদার, কিন্তু বড়লেখার শিমুল সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে। পুরো রাস্তায় শতভাগ অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। ফুলতলা-বটুলী রাস্তা এলোপাতাড়ী কেটে ফেলে রাখায় স্থানীয়দের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। ভুক্তভোগীদের আন্দোলন করার খবর গতকাল পেয়ে মন্ত্রী মহোদয়, ইউএনও মহোদয় এবং ওসি সাহেব এ আন্দোলন থামানোর অনুরোধ জানিয়ে আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন ১ জুন রাস্তাটি জনচলাচলের উপযোগী করার কাজ শুরু করাবেন।

তিনি বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ফুলতলা একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, এটি বাংলাদেশের অংশ নয়। জনগণ তাঁদের অধিকারের কথা বলায় সাব-ঠিকাদার শিমুল তার দালালদের মাধ্যমে লোকজনকে হুমকি দিচ্ছে। বার বার ফোন দিলেও সে আমার ফোন ধরেনা। কাজের সাইটে আসেনা। তার খুঁটির জোর কোথায় তা জনগণ জানতে চায়। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়া লোকজন তাঁদের অধিকারের কথা বলতে পারেনা। আজকের আন্দোলন জনতার অধিকার আদায়ের আন্দোলন, এটা অন্যায় নয়। আজ সবাই নাক গলাচ্ছেন। প্রায় দুই বছর হয়ে যাচ্ছে। এতদিন কোথায় ছিলেন? আমরা এখন রাস্তা নির্মাণ চাইনা। দ্রæত চলাচল উপযোগী করে জন দুর্ভোগ দুর করা হোক।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তনমন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, রাস্তার জন্য এত টাকা বরাদ্ধ দিলেন, কিন্তু কোন খবর নিচ্ছেন না।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২৯ মে ২০২০/লাল/পিডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন