আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কমলগঞ্জে বিদ্যুতের দাবিতে খাসিয়া সম্প্রদায়ের মানবন্ধন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-০৪ ২০:৫৬:৫৮

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিদ্যুতের দাবিতে খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন মানবন্ধন করছেন। শনিবার দুপুরে আদমপুর ইউনিয়নের কালিঞ্জিপুঞ্জিতে বসবাসকারী আদিবাসীরা খাসিয়া পুঞ্জির সামনে মানবন্ধন করেন।

পুঞ্জির হেডম্যান রিতেংগেন খেরিয়ামের সভাপত্বিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পুঞ্জির সহকারী হেডম্যান উয়াংবর সুটিং, সাবেক হেডম্যান নাইট খেরিয়েম, সামায়ের খেরিয়াম প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত ঘোষনা করা হলেও খাসিয়া পুঞ্জির বাসিন্দারা বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। তাই অতি শিগগিরই খাসিয়াপুঞ্জিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে। তা না হলে খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১২ ফেব্রুয়ারি গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমলগঞ্জ উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা করেছিলেন। তবে বন বিভাগ ও বিদ্যুৎ বিভাগের রশি টানাটানিতে শতভাগ বিদ্যুতের আওতাভুক্ত হতে পারেনি আদমপুর বনবিট এলাকার কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি ও পুঞ্জির বাইরের কালেঞ্জি গ্রাম।

পুঞ্জির হেডম্যান রিটেঙেন খেরিয়াম বলেন, বিদ্যুৎ ও রাস্তাঘাটের সমস্যার কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। লাউয়াছড়া ও মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও বন বিভাগ অহেতুক কালেঞ্জী খাসিয়া পুঞ্জির  বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনে বাঁধা  দিয়েছে। সরকারিভাবে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দিলেও কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি ও তৎসংলগ্ন গ্রাম বিদ্যুতায়নের বাইরে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে  বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর আবারও বনবিভাগ জরিপ কাজ করে। এ জরিপ কাজ শেষে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কালেঞ্জি পুঞ্জিতে নতুন করে বিদ্যুতায়নের কাজ শুরু করে। তখনও বন বিভাগের লোকজন এ কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে। এর প্রতিবাদে কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জির ৯৫ ও কালেঞ্জি গ্রামের ৫০ পরিবারের সদস্যের অংশগ্রহনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিতে বিদ্যুতায়নের আওতায় আসতে হবে। বনাঞ্চলে অন্যান্য খাসিয়া পুঞ্জিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও কেন বন বিভাগ কালেঞ্জি পুঞ্জিতে বাঁধা সৃষ্টি করছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না।

আদমপুর বনবিট কর্মকর্তা শ্যামল রায় বলেন, কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি ও গ্রামে বিদ্যুতায়নের জন্য ইতিপূর্বে বন বিভাগ একটি জরিপ সম্পন্ন করলে বিদ্যুতায়ন কাজ শুরু করার সম্পর্কে তার কাছে বন বিভাগের কোন নির্দেশনা আসেনি। তাই তিনি আপাতত কাজটি বন্ধ রাখতে বিদ্যুৎ বিভাগকে বলেছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী আশেকুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় কমলগঞ্জে শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত হলেও কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি ও একটি গ্রাম বিদ্যুত সুবিধার বাহিরে রয়েছে। বন বিভাগের বাঁধার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ কার্যালয়ের ডিজিএম প্রকৌশলী গণেশ চন্দ্র দাশ বলেন, কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি ও কালেঞ্জি গ্রামকে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনতে কাজ শুরু হয়েছিল। ঠিকাদারের লোকজনও খাসিয়া পুঞ্জি এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটিও এনে রাখছে। বন বিভাগের আপত্তির কারণে এ দুটি গ্রামকে এখনও বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা যায়নি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ০৪ জুলাই ২০২০/ জয়নাল/ শাদিআচৌ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন