আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

মেয়াদ শেষ হতে চললেও জুড়িতে শুরু হয়নি স্কুলভবনের নির্মাণ কাজ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০২-২৮ ১৬:৩০:৫৪

জুড়ী প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজের নির্ধারিত মেয়াদ শেষে বর্ধিত মেয়াদও প্রায় শেষ পর্যায়ে। পাইলিং ছাড়া প্রায় এক বছরের মধ্যে আর কোন কাজই করে নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২৫ ফেব্রচয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন।

জানা যায়, চাহিদা ভিত্তিক নতুন জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (১ম পর্যায়) এর আওতায় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে জুড়ী উপজেলার সোনারূপা চা বাগান, কুচাই চা বাগান, পূূর্ব বেলাগাঁও, পশ্চিম গবিন্দপুর ও উত্তর ভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজের ই-টেন্ডার আহবান করে উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর। ২ মে ২০১৯ তারিখে আহবানকৃত টেন্ডার ১১ জুন ২০১৯ তারিখে খোলা হয়। বিভিন্ন ঠিকাদার কাজ গুলো পান। সেপ্টেম্বর ২০২০ এর মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। উত্তর ভবানীপুর ও সোনারূপা চা বাগান বিদ্যালয় ভবনের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। কালাছড়া চা বাগান বিদ্যালয় ভবনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। পশ্চিম গবিন্দপুর বিদ্যালয় ভবন ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু পূূর্ব বেলাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজের পাইলিং করে প্রায় এক বছর থেকে ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার। ভবনটি নির্মাণের কাজ পায় ঢাকার বিএম ট্রেড সেন্টার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ১ কোটি ৯১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮শ ৫৮ টাকা চুক্তিমূল্যে ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে বালু ফিলিংয়ের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। কিন্তু পাইলিং করে দীর্ঘদিন থেকে কাজ ফেলে রেখেছেন। ভবনটি নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় গত বছরের সেপ্টেম্বরে চলে যাওয়ায় বিভিন্ন অযুহাতে ঠিকাদার চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করান। বর্ধিত মেয়াদের আর দুই মাস বাকী।

বিদ্যালয় এসএমসি সভাপতি তাহের আলী, সহ-সভাপতি আলী আহমদ, সদস্য কুহিনুুর বেগম, আমেনা বেগম, মরিয়ম বেগম, আব্দুল হাসিম, গৌছ উদ্দিন, ফজলু মিয়া, আফজাল হোসেন, পিটিএ সভাপতি সুরুজ আলী, প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া, শিক্ষক মইয়ব আলী, লাভলী রানী দাশ, সাহেলা আক্তার, রেশমা আক্তারসহ অভিভাবকরা অভিযোগ করেন- বেলাগাঁও গ্রামে যাতায়াতের কোন রাস্তা নেই, নদীর তীরটাই রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হয়। বৃষ্টি শুরু হলেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। ঠিকাদার কাজের সাইটে এখনও কোন মালামাল না নেয়ায় আরো এক বছরেও কাজ শেষ হবে কি না সন্দেহ আছে। কেননা, বৃষ্টি ও বর্ষায় নৌকাযুগে মালামাল আনা-নেয়ায় খরচ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বাহানায় কাজ পড়ে থাকার আশংকা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকির তীরবর্তী বেলাগাঁও গ্রামের পূর্বপারে ১৯৮২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তিতে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়। সর্বশেষ ২০১৩-২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ করা হয়। জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয় গুলোতে চাহিদা ভিত্তিক ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বন্যা কবলিত, ঘনবসতিপূর্ণ এ গ্রামের পশ্চিম পারে আরও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। দুইটি বিদ্যালয়ই বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বর্ষার আগে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবার কোন সম্ভাবনা নেই। ওই ঠিকাদার পশ্চিম গবিন্দপুর বিদ্যালয় ভবনেরও কাজ করছেন। একই প্রকল্পের ৫টি বিদ্যালয় ভবনের ৩টির কাজ প্রায় শেষই। তবে এই ঠিকাদারের কাজে কোন গতি নেই। পশ্চিম গবিন্দপুর বিদ্যালয় ভবনের কাজ শেষ করে বেলাগাঁও বিদ্যালয়ের কাজ শুরু করতে আরও এক বছর পার হয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ফান্ডের অভাবে কাজ করতে পারছেন না জানিয়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিএম ট্রেড সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মুহিবুর রহমান আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে পুরোদমে কাজ শুরু করবেন বলে জানান।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), জুড়ী উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, ঠিকাদারের সাথে কথা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বলে দিয়েছি।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/এমএএল/এসডি-৩

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন