আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং
মুনজের আহমদ চৌধুরী :: ব্রিটিশরা জাতিগতভাবেই দ্বিধাদ্বন্দে ভোগে। ক'দিন অাগে পুরো দেশ ব্রেক্সিটের রেফারেন্ডামে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোটে মত দিল। সে গনভোটের গনভোটে পক্ষে থেকে হেরে ডেভিট ক্যামেরনের মতো একজন সফল প্রধানমন্ত্রীকে দেশ হারাল। তিনি কেবল প্রধানমন্ত্রীত্ব নয়, রাজনীতি থেকেও বিদায় নিলেন। তার স্থলাভিষিক্ত হলেন থেরেসা মে। ব্রিটেনের ইতিহাসের দ্বিতীয় মার্গারেট থ্যাচার হতে চাইবার কিছু প্রচ্ছন্ন অনুকরন ছাড়া তার রাজনৈতিক তেমন কোন ভুল নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্যত ব্রেক্সিটের জনরায়কে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, ফলাফল হিসেবে পোহাচ্ছেন ব্রিটিশ গণতন্ত্রের বিড়ম্বনা। বিরোধী দল লেবার পার্টি প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিটনীতির বিরোধীতা করে এতদিন যা পারে নি, নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা সংসদে তাই করলেন। অাজ অাবার ব্রেক্সিট প্রশ্নে নিজ দলের এমপিরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধী দল লেবার পার্টির সাথে মিলে একাট্টা অবস্থান নিলেন। ভোট দিয়ে পার্লামেন্টে পরাজিত করলেন থেরেসা মে অর্থাৎ সরকারের ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে।
ফলাফল, কার্যত এগুচ্ছে অনিশ্চয়তার দিকেই অাবার। ব্রেক্সিট প্রশ্নে অাবার দেশে গনভোট হবার গন্তব্যে হাটছে ব্রিটিশ রাজনীতি।
২০১৬ র ২৩ জুন ব্রিটিশরা ব্রেক্সিটের পক্ষে গণভোট দিয়েছিল। অাড়াই বছর পর এখন পুরো দেশের মানুষের ভাবনা পাল্টে গেছে। হলফ করে বলতে পারি, এবার গনভোট হলে ব্রেক্সিটের বিপক্ষেই ভোট দেবে ব্রিটিশরা।
কিন্তু, জনগনের এই দ্বিধাদ্বন্দের ভুলে দেশটার ক্ষতি ছাড়া লাভ হচ্ছে না। অর্থনীতি মার খাচ্ছে। যদিও সরকার তার পরিসংখ্যানে যথারীতি বিভিন্ন বিচিত্র সারনীর মাধ্যমে অর্থনীতি স্থিতিশীল দেখাবার চেষ্টা করছে।
দুই
বিশ্বে দুটি বাঙালী রাজ্য একটি বাঙালী দেশ অাছে। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা অার বাংলাদেশ। বাঙ্গালীকে অান্দোলন ভুলিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে অান্দোলনকন্যা মমতা দিদিও। সেখানে বিরোধীদের নমিনেশনই জমা দিতে দেয় না সরকারীদল। ত্রিপুরাতেও ভোটের গনতন্ত্রের চর্চা এখন অতীত। অার ব্রিটেনে গণতন্ত্রের চর্চা এত প্রবলভাবেও অাছে যে, জনগন দেশের ক্ষতির চিন্তার চেয়ে নিজের মতামতের পরিবর্তনের চিন্তাকে, চিন্তার বাস্তবায়নকে বেশি দাম দেয়।
গণতন্ত্র ব্রিটেনে শত শত বছর চর্চিত হবার পর পরিশীলিত হয়েছে। সে গনতন্ত্র দেশকে বিপদে ফেলে দেবার মতো 'একবার হ্যা, একবার না' র দ্যেতনা দোতারার দুই তারে বাজাচ্ছে ব্রিটিশদের। অার সে গণতন্ত্রের দেশের রানীর জাদুঘরে ঘুম ভেঙ্গে মিটি মিটি হাসছে অামাদের কাছ থেকে চুরি করে অানা মহামুল্যবান কোহিনূর! বর্তমান ঠিকানা ব্রিটেনে কোহিনুর চোর-গৃহস্তের এক পরিনতি দেখে ব্যঙ্গ করছে। মোদ্দা কথা,কোহিনুরের অাসল ও বর্তমান দুই ঠিকানাতেই গণতন্ত্র দুই ভাবে বিড়ম্বনা পোহাচ্ছে।
মুনজের আহমদ চৌধুরী, লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিক।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১০ জানুয়ারি ২০১৯/সাআ