আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

নগরীর কল্যাণের ‘পৈতা’ টেনে ধরবেন না দয়া করে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-২৯ ০০:১১:০১

শামসুল ইসলাম শামীম :: তিনি ভাঙছেন, ভেঙেই চলেছেন। আজ এর বাড়ির দেয়াল তো কাল ওর বাড়ির দেয়াল! না পুলিশ, না মন্ত্রী! ভ্রুক্ষেপ নেই যেনো কোন দিকেই। ভেঙেচুরে একাকার করে দেয়াই যেনো তার কাজ! এই ভাঙাভাঙির কারনে করো কাছে ‘এ্যকশন মেয়র’ আবার কারো কাছে ’ভাঙাড়ি মেয়র’ হিসেবে পরিচিত হয়েছেন তিনি। তিনি কি শুধুই ভাঙ্গছেন? না গড়ছেনও তিনি!

একটি পরিচ্ছন্ন নগরীর খোয়াব, যে খোয়াব দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে একসময় মনের গহণে লালিত সেই স্বপ্নের কথা আমরা ভুলেই গেছিলাম, সেই আধমরা স্বপ্নকে আবার উসকে দিয়েছেন তিনি। দিবানিশি ছুটে চলছেন নগরীর এ মাথা থেকে ও মাথা। ক্লান্তিহীন, বিরামহীন এই ছুটে চলায় কি সুখ পান এই মানুষটি! প্রথম দফায় মেয়র হয়েই পুরো নগরীর জুড়ে একটি ঝঁকি দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হয়ে যেনো তনু-মন সঁপে দিয়েছেন এই জনপ্রতিনিধি।

নগরীর ফুটপাতের পুরোটা দখলমুক্ত না হলেও, হবে এটুকু অন্তত আশা করা যায় এবেলা এসে। এর জন্য নগরবাসীকে একটু সচেতন হতে হবে। ফুটপাত দখল করে যেসব ভাসমান ব্যবসায়ীরা নিজেদের বেসাতি খুলে বসেন শুধুমাত্র তাদের পৃষ্ঠপোষকতা না করলেই হলো। বাকি কাজটা এই কাজ পাগল মানুষটি সম্পন্ন করতে পারবেন বলে মনে হয়।

পরিকল্পিত নগরায়নের অভাবে দিনে দিনে অপরিকল্পিত নগরীতে পরিণত হওয়া এই নগরী হয়তো অদূর অতীতে বসবাসের উপযোগিতা হারাবে, যদি এখনই এই ’অপরিকল্পনা’র লাগাম টেনে ধরা না যায়। আরিফুল হক চৌধুরী এই বোধ-বোধনহীন লাগামই টেনে ধরার চেষ্ঠা করছেন। একটি বসবাস উপযোগি নগরী গড়তে একজন মানুষ তার সীমিত শক্তিমত্তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এই সময়ে আমাদের কি করা উচিৎ? শুধু তার পাশে দাঁড়ালেই হয়!

আমি আপ্লুত হই যখন দেখি মেয়রের আবেদনে সাড়া দিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা নিজেরা দাঁিড়য়ে থেকে চৌহাদ্দির দেয়াল ভাঙতে সহায়তা করছেন। অন্যরকম এক ভালোলাগায় ভেসে যাই, যখন দেখি একজন মধ্যবিত্ত গৃহস্থ নিজের বাড়ির কিছু যায়গা ছেড়ে দেন রাস্তা প্রশ্বস্থ করনের স্বার্থে। মেয়র আরিফ যখন ভিন্নমত-ভিন্নপথের রাজনৈতিক ধারায় বিশ্বাসী, তখনও তার অনুরোধে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও পররাস্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন নিজেদের বাসভবনের মূল্যবান পাঁচ ফুট যায়গা ছেড়ে দেন জনস্বার্থে। ওলি-আউলিয়ার পদধুলি ধন্য এই অঞ্চলের মানুষের ’কলিজা’ আল্লাহপাক যে কতো বড়ো করে বানিয়েছেন তা একমাত্র তিনিই বলতে পারবেন। আকাশের মতো উদার মনের এই মানুষগুলো আজীবন মানুষের কাছে দেবতুল্য হয়ে থাকুন।

সম্প্রতি দেখলাম, একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাতুড়ি হাতে নেমে পড়েছেন নিজ এলাকায়। এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে শুরু করেছেন সড়ক প্রশস্থকরণের কাজ। মনে হলো ’আরিফ ব্যরামা’ সংক্রমিত হয়েছে! এই ব্যাধি যতোই সংক্রমিত হবে আমাদের জন্য ততোই মঙল। এই ’ব্যামো’ দিকেদিকে-লোকেলোকে সংক্রমিত হোক।

নিজেদের বাড়িঘরের যায়গা ছেড়ে দিয়ে আমরা নিজেদের দেবতার আসনে বসাতে পারলেও কেন ফুটপাত ছাড়তে পারছিনা? এর জবাবের জন্য কঠিন কোন অংক কষতে হবেনা। যারা এই ফুটপাত নিয়ে ’ছ্যাচড়ামো’ করেছেন তারা দয়া করে এবার কান্ত দিন। সিলেট নগরীরবাসীর কল্যাণের ’পৈতা’ পেছন থেকে টেনে ধরবনে না দয়া করে।

লেখক: সিলেট ব্যুরো প্রধান, বাংলাভিশন।

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন