আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং
মজিবুর রহমান খান পাঠান :: ডাক বিভাগের উন্নয়নের জন্য অনেকে দিনরাত পরিশ্রম করছেন,সরকার শতশত কোটি টাকা খরচ করছে কিন্তু কাংখিত উন্নয়ন কি হয়েছে?
ডাক বিভাগের উন্নয়নের জন্য ২টি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া জরুরী।
১। ডাক গ্রহন ও বিতরণ।
২। ডাক কর্মচারীগণের উন্নয়ন।
ডাক গ্রহন ও বিতরণ:
ডাক গ্রহন ও বিতরণের কাজকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার না দিয়ে বিভিন্ন এজেন্সি সার্ভিসকে অগ্রাধিকার দেয়ার কারনে কুরিয়ার সার্ভিসের রমরমা ব্যবসা চলছে। ফলে জনগনের করের টাকায় পরিচালিত ডাক বিভাগ যেমন লোকসান গুনছে তেমনি জনগনকে কুরিয়ার সার্ভিসের সেবা নিতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। ডাক বিভাগের চৌকস সব কর্মকর্তা কর্মচারী এজেন্সি সার্ভিসের সাথে যুক্ত আর অপেক্ষাকৃত দুর্বল কর্মকর্তা কর্মচারীণ ডাক গ্রহন ও বিতরণের সাথে যুক্ত।
একসময় মোটরগাড়ীর কর গ্রহনের জন্য বিশাল প্রকল্প গ্রহন করে সেবাকে আধুনিকায়ন করা হয়। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই তা ব্যাংকে চলে যায়। ফলে জনগনের প্রচুর টাকার অপচয় হয়। এখন আবার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রেও তা শুনছি। কোন প্রকল্প গ্রহন করার পুর্বে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে যথাযথ চুক্তি সম্পাদন করেই তা করা উচিত।
ডাকবিভাগের যত লোকসান, দুর্নীতি, তদন্ত, মামলা তার অধিকাংশই এজেন্সি সার্ভিসকে কেন্দ্র করে। ডাক গ্রহন ও বিতরণের কাজকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য যে সকল উপ ডাকঘরে কাজ কম সে সকল উপডাকঘরে শাখা ডাকঘর স্থানান্তরিত করে অথবা এজেন্ট নিয়োগ করে উপ ডাকঘরের কর্মচারীগণকে উপজেলা বা প্রধান ডাকঘরে সংযুক্ত করা যায়। ফলে উপজেলা বা প্রধান ডাকঘরের কর্মচারী সংকট যেমন কমবে তেমনি শাখা ডাকঘরের ভাড়া প্রদান হতেও রেহাই পাওয়া যাবে।
ডাক কর্মচারীগণের উন্নয়ন:
ডাক বিভাগের উন্নয়ন করতে ডাক কর্মচারীগনের উন্নয়ন আবশ্যক। কয়েক বছর পর পর ডাকবিভাগে কর্মচারী নিয়োগ করা হলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই প্রায় সবাই ডাকবিভাগ ছেড়ে চলে যায়। কেন চলে যায়, কারো ভাবার সময় কি আছে?
কর্মচারীগনের উন্নয়নে কয়েকটি সুপারিশ:
১।সাব পোস্টমাস্টার পদকে ১১তম গ্রেডে উন্নয়ন।
২। সহকারী/উপজেলা পোস্টমাস্টার/সুপারভাইজার/পরিদর্শক/ সমমান পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নয়ন।
৩।ডেপুটি পোস্টমাস্টার/এইচএসজি/সুপার/ জুনিয়র হিসেব রক্ষক/ সমমান পদকে ৯ম গ্রেডে উন্নয়ন।
৪। কমপক্ষে প্রতি ৩ বৎসর পর পর প্রত্যেক পদে পদোন্নতি প্রদান।
ডাক বিভাগের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় ডাক গ্রহন ও বিতরণ এবং ডাক কর্মচারীগনের প্রতি চরম অবহেলা। ডাক বিভাগের উন্নতি চাইলে ডাক গ্রহন ও বিতরণকে যেমন প্রাধান্য দিতে হবে তেমনি ডাক কর্মচারীগনের উন্নয়নেও গুরুত্ব দিতে হবে।
তাই ডাকবিভাগের নেতৃবৃন্দ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রতিনিধি) ডাকবিভাগের উন্নয়নে সচেষ্ট হবেন আশা করি।
লেখক: সাধারন সম্পাদক, বাংলাদেশ পোস্টঅফিস কর্মচারী ইউনিয়ন
সিলেট-সুনামগঞ্জ জেলা শাখা, সিলেট।