আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

তথ্য সন্ত্রাস নিপাত যাক

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-০৩ ১২:৩৮:১২

ফরিদ উদ্দিন :: গণমাধ্যম বিশাল একটি শব্দ। যার অর্থে কেউ বলেন গণমাধ্যম সরকারের চোখ, কেউ বলেন সমাজের আয়না। যাই বলুন অর্থ একবিন্দু তেই দাঁড়ায়। কিন্তু এ গণমাধ্যম কোথায় দাঁড়াচ্ছে? একজন গণমাধ্যম কর্মীর কতটুকু যোগ্যতা, জ্ঞান থাকা জরুরী?

প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে কেউ সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী আবার কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭/৮ ধাপ ও পার করেন নি। এমন ধাপহীনদের দাপটই আজকের লেখা।

সাংবাদিকতায় জ্ঞান অর্জন দুরের কথা সংবাদপত্র পড়া অভ্যাস ইচ্ছাও কোন দিন ছিল না এমন সাংবাদিকের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। সহজতর আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে একটি বাইক, ক্যামেরা নিয়ে বাইকে ‘press’ স্টিকার দিয়ে শুরু হল অপ-সাংবাদিকতা! এমন সাংবাদিক চিনে থাকবেন নিশ্চয়। আপনার উপজেলায় খোজেও পাবেন। এরা নিজস্ব ও দায়ভারহীন অনলাইন পোর্টাল দিয়ে এক ধরণের তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন- অমুক গ্রামের অমুকের দুর্নীতি শিরোনাম দিয়ে অহেতুক কিছু কিচ্ছা লিখে তিনি নিজের চালিত দায়ভারহীন নিজস্ব অনলাইন পোর্টালে নিউজ করে লিংকটি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দিলেন।

কিন্তু ঐ নিউজের না আছে ভিত্তি, অভিযোগ, সত্যতার নমুনা, না থাকে অভিযুক্তের বক্তব্য! বিজ্ঞরা বুঝলেন এটি কোন নিউজই না। কেউ বলেন দূর ঐ দায়ভারহীন ডটকম কয় জন চিনে! কিন্তু ফেইসবুকে লিংকটি ছড়িয়ে দেওয়ায় উনার ফেইসবুক ফিডের বন্ধুরা ঐ অপ-সংবাদটি ঠিকই পড়লেন। ব্যক্তিরোশের শিকার অমুক লোকটি মানহানির শিকার হলেন।

কিন্তু এসব শিকারের প্রতিকার কি?
বলতেই পারেন আইসিটে মামলা করুন কেউ ৫৭ ধারাও চিনিয়ে দেন। কিন্তু মানহানি ঘটা লোকটি অশিক্ষিত, দরিদ্র হলে? পুলিশভীতি থাকলে?

জি ঐ রকম মানহানি ঘটা লোকজন সাধারণত অশিক্ষিত দরিদ্র হয়। এই সুযোগে সাংবাদিক নামধারী কলম সন্ত্রাসী রেশ মিটিয়ে নিলেন মধ্যপথে লোকটা ভয় দেখিয়ে বাইকের তেল খরচও।

এসব লোক ও ঘটনা অহরহ। কিন্তু প্রতিকার বলতে শুধু আইন পুলিশ নয় সাথে কিছু কাজও থাকে। প্রথমত যেটা করা যেতে পারে- মুদ্রন বা অনলাইন যেই মাধ্যম হোক ব্যক্তিকে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সদস্য হতে হবে বা তিনি যে সাংবাদিক স্থানীয় প্রেসক্লাব সেই সনদ দিতে হবে। এটি কার্যকর করতে পারলে মূল থেকে অপ-সাংবাদিকতা বা কলম সন্ত্রাস যাই বলুন তা উবে যাবে। আইন আদালত অনেকের কাছে অনেক দূর কিন্তু প্রতি উপজেলায়ই প্রেসক্লাব আছে প্রবীণ সাংবাদিক আছেন। তাদের হাতে সাংবাদিক যাচাই কাজ দিলে, সাংবাদিক লিখতে হলে পরিচয় দিতে হলে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সনদ বাধ্যতামূলক করেই দেখুন। কেউ এই নিয়ম না মানলে ঐ প্রেসক্লাবই কুসাংবাদিকের বিরুদ্ধে কলম ধরুক আমি বিশ্বাস করি কলম সন্ত্রাস, অপ-সাংবাদিকতা' রোধ করা সম্ভব।

প্রশ্ন আসতে পারে ভূল তো হতে পারে তাই বলে নতুন সাংবাদিক তৈরি হবে না? জি ভূল হতেই পারে তবে ইচ্ছাকৃত ভূলও করেন অনেকে। যেমন ভূল ধরিয়ে দেওয়ার পর বা প্রতিবাদের পরও নিজ রোশে অনড় থেকে সংবাদ সংশোধন না করা! আর নতুন সাংবাদিক অবশ্যই প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে তিনি শিক্ষানবিশ হিসাবে থাকা উচিৎ, আগে শিখে নিন নিউজ কি?

নিউজের গুরুত্ব ও উপাদান কিসে ক্ষেত্রে আইন যদি করা হয় কোনু সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সাংবাদিকতায় শিক্ষানবিশ পাশ করা বাধ্যতামূলক তবেই কলমের অপব্যবহার থামতে পারে। সবাই তো জার্নালিজম পাশ করে না কিন্তু মেধা সাহস প্রত্যয় আছে তাই নতুন সাংবাদিকদের ব্যাপারে আশাবাদী। এরা সাংবাদিক পরিচয় দিতে আগ্রহী পরিশ্রমেও আগ্রহী। এরা সঠিক শিক্ষা প্রশিক্ষন পেলে দায়মুক্ত হয় গণমাধ্যম।

সঠিক সত্য ঘটনা ও ঘটনার নেপথ্য জানার পথ খোলে যাক গনমানুষের জন্য। হায়েনার থাবামুক্ত হোক কলম।

তথ্যসন্ত্রাস নিপাত যাক
তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা পাক।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস সফল হোক।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন