আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ইফতারি আশির্বাদ না অভিশাপ!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-০৯ ০১:২৪:৪৪

মঞ্জুরে আলম লাল :: বছর ঘুরেই আমাদের মাঝে হাজির হয় রমজানুল মোবারক। রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের এই মাসের অন্যতম নেয়ামত হচ্ছে ইফতারি। সারাদিন রোজা রেখে উপবাস থাকার পর সন্ধ্যায় বাহারী রকমের খাদ্যদ্রব্য মুখের সামনে সাজিয়ে রেখেও শুধু মাত্র আল্লাহর হুকুমের অপেক্ষায় কেহ তাহা মুখে দেন না। আর এ ধৈর্যের পুরস্কার হিসেবে আল্লাহ রোজাদারদের জীবনের গোনাহ মাফ করার পাশাপাশি অশেষ নেয়ামতও দান করেন। রোজাদারকে ইফতার করানো সুন্নত। হোক সেটা এক গ্লাস পানি কিংবা একটি খেজুর।

আমাদের সমাজে কিছু লোক কুসংস্কারে জড়িয়ে আছেন, যারা অন্যের ইফতার সামগ্রী দিয়ে ইফতার করেন না। তাঁদের বদ্ধমূল ধারণা এতে তাঁর ছওয়াব থেকে কিছু ছওয়াব কেটে ইফতার করানেওয়ালাকে দেয়া হয়। যদিও কথাটি আদৌ সত্য নয়। কেননা, মহান আল্লাহর ছওয়াবের ভান্ডার অফুরন্ত। যিনি ইফতার করলেন আল্লাাহ পাক তাঁকে তাঁর প্রাপ্য ছওয়াবই দেন। আর যিনি রোজাদারকে ইফতার করালেন ন্যায় বিচারক আল্লাহ তাঁকে অতিরিক্ত ছওয়াব দিয়ে থাকেন। রোজাদারকে ইফতার করালে পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্যবোধ বৃদ্ধি পায়। এতে করে সমাজে হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ দুর হয়। এটাই ইফতারির মাহাত্ব। তবে যে ইফতারি আমাদের সমাজকে ভালোর দিকে নিয়ে যাবার কথা, সেই ইফতারিকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজব্যবস্থা কলুষতার দিকে ধাবিত হচ্ছে।

একটি উদাহরন দেয়া যাক- সখিনা, নিম্নবিত্ত পরিবারের অস্পরী কন্যা। নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে কাজ করতে অক্ষম দিনমজুর বাবা কবির উদ্দিনের বড় মেয়ে সখিনা রূপ-সৌন্দর্যে তুলনাহীন। পাঁচ কন্যাসহ সাত সদস্যের পরিবারে নিয়মিত ভরণপোষণ দিতে হিমশিম খান তিনি। দারিদ্র্য যার নিত্য সঙ্গী, সেই পিতা সন্তানদের লেখাপড়া করানো কিংবা অন্য চাহিদা মেটাতে না পারলেও আদরের মেয়েদের কোন কষ্ট করতে দেননি। ধর্মীয় শিক্ষা থেকেও তাদেরকে বঞ্চিত করেননি। এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী গ্রামের ধণাঢ্য জামিল সাহেব তাঁর দ্বিতীয় ছেলে কাদিরের পছন্দের কারণে বাধ্য হয়ে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও চৌদ্দ বছর বয়সী সখিনার বিয়ের প্রস্তাব দেন। বড় লোকের সম্পদের প্রতি লোভ না থাকলেও নিজের অসহায়ত্ব এবং মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মেয়েকে বিয়ে দেন কবির। সুখে দিন কাটলেও গরিবের মেয়ে হওয়ায় সংসারের সকল কাজ সখিনাকেই করতে হয়। বছর না যেতেই শুরু হয় রমজান মাস অন্যদিকে সন্তানের মা হবার সময়ও ঘনিয়ে আসে তার। বিয়ের পর প্রথম রমজান বিধায় পহেলা রোজায় বাবার বাড়ি থেকে ইফতারি নিয়ে না যাওয়ায় সখিনাকে নানান কথা শুনতে হয়। শুধু মাত্র শশুর-শাশুড়ী, ননদ-জা নয়, পুরোবাড়ি এমনকি প্রতিবেশি লোকজনের মুখ থেকে নানান অপমান মূলক কথা শুনতে শুনতে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে সন্তান-সম্ভবা সখিনা। একে একে বিশ রোজা চলে যাবার পর ইফতারির জন্য তার উপর চাপ বাড়তে থাকে, শুরু হয় মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার-নির্যাতন। বাবার আর্থিক দুরবস্থার কথা চিন্তা করে কোন কথা না বলে সব কিছুই নিরবে সহ্য করে সে। স্বামী ব্যাচারা তথাকথিত সমাজব্যবস্থার ভয়ে লোকজনের খোঁচাখোঁচির কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি। এরই মধ্যে জামিল সাহেবের বড় পুত্র বধূর বাবার বাড়ি থেকে পর পর তিনবার এবং বাড়ির অন্যান্য বউদের বাবার বাড়ি থেকে গাড়ি ভর্তি ইফতারি আসে। কিন্তু শেষ রোজা পর্যন্ত সখিনার ইফতারি না আসায় জামিল পুত্রবধূর জীবনের প্রথম মা হওয়া ও ঈদের আনন্দকে পদদলিত করে দুর দুর করে তাঁকে বাবার বাড়ি তাড়িয়ে দিয়ে সমাজে তাঁর মুখ রক্ষা করেন! যার নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেই বাবার বাড়ি বাড়তি বোঝা হিসেবে আশ্রয় নেয় সখিনা। কয়েক দিনের মধ্যেই তার কোল জুড়ে আসে একটি কন্যা সন্তান। এ খবর শুনেই নাতনিকে দেখতে যাওয়াতো দুরের কথা উপরন্তু ছেলেকে চাপ প্রয়োগ করে স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন জামিল। এদিকে প্রাপ্ত বয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছর হবার আগেই বিয়ে, বিয়ের বছরের মধ্যে সন্তান, সেই সাথে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ফলে পর্যায়ক্রমে সখিনার শরীর ভেঙ্গে যায়। হারিয়ে যায় তার চেহারা-রূপ-সৌন্দর্য-লাবণ্য সবকিছুই। কষ্টের সংসারে মেয়ে ও পরিবারের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে করতে এক সময় সংসারকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন কবির উদ্দিন।

সুধী পাঠক, বাংলাদেশের অন্য কোথাও মেয়ের শশুর বাড়ি ইফতারি নিয়ে যাবার এই প্রথা আছে কি না জানি না। তবে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে এই প্রবণতা দীর্ঘ দিন থেকে চলে আসছে। আলোচ্যাংশে উল্লেখিত নাম গুলো রুপক্ অর্থে ব্যবহার করা হলেও বাস্তব সত্য এ রকম ঘটনা আমাদের সমাজে লোকচক্ষুর আড়ালে অহরহ ঘটেই চলেছে। এ রকম হাজারো সখিনার সাজানো সোনার সংসার ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাচ্ছে। অভাবের তাড়নায় এক সময় বাধ্য হয়েই সখিনারা হচ্ছে বিপথগামী। নিরবে-নিভৃতে কবির উদ্দিনের মত হাজার হাজার অসহায় পিতার সংসার ভেসে যাচ্ছে চোখের জলে। মেয়ের সংসার-সন্তানের কথা চিন্তা করে সকলেই মুখবন্ধ করে ধুকে ধুকে মরছে।

এক সময় সিলেটে জমিদার শ্রেণির সংখ্যা ছিল খুবই বেশি। প্রবাদ ছিল “গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ, গাছ/বাগান ভরা ফল, এই নিয়ে সিলেট অঞ্চল”। তখন খাবার লোকের সংখ্যা ছিল কম। লোকজন মনের সুখে গরু বা ঘোড়ার গাড়ি ভর্তি করে মেয়ের শশুর বাড়ি ইফতারি, আম-কাঁঠাল নিয়ে যেত। যুগ যুগ আগের সেই প্রথা কালের ধারাবাহিকতায় এখনও সমাজে বিদ্যমান। তবে এখন সেটা বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। গ্রামের তথাকথিত মাতব্বররা এলাকাভেদে অঘোষিত ভাবে যৌতুকের মত ইফতারিকে ফরজে আইনে পরিণত করে ফেলেছেন! এ কারনে মেয়ের বাবাকে ঋণ করে বেয়াইয়ের বাড়ি ইফতারি নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু ছেলের বাবা ছেলের শশুর বাড়ি ইফতারি নিয়ে যাবার ঘটনা বিরল। মুলতো সখের বসে এই ইফতারি দেয়ার প্রচলন শুরু হলেও এখন সেটা অলিখিত আইনই বলা যায়। মেয়ের বাড়িতো বটেই। বোন, ভাতিজি, ভাগ্নি, ফুফু, নাতনি এভাবে মেয়ে সম্পর্কিয় সকল আতœীয়ের বাড়িতে ইফতারি নিয়ে যেতে হয়। আতœীয়তার ৫০/৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও ইফতারি দেয়া বন্ধ করা যাবেনা! ইফতারির জন্য আমাদের পরধন লোভী সমাজপতিরা কিছু নিয়মও চালু করেছেন। যেমন, বিয়ের প্রথম রমজান মাসের প্রথম রোজায় একবার ইফতারি দেয়া এবং ১৯ রোজার মধ্যে বড় আকারে আরেকবার ইফতারি দেয়া (১৯ রোজার পরে দিলে সেটা নাকি বিষ হয়ে যায়!)। দ্বিতীয় বছর থেকে মাসের যে কোন সময় একবার ইফতারি দেয়া। কেউ কেউ এক/দু’বছর দিয়ে আর না দিলে ২০ রোজা থেকেই মেয়েকে দিয়ে সুকৌশলে এই বলে তাকিদ দেওয়ানো হয় যে, “তোমার বাবার বাড়ির লোকজন কবে আসবেন। কারণ আমরাতো সব সময় বাড়ি-ঘরে থাকিনা। তাই তারিখটা জানলে আমরা বাড়িতে থাকবো”। এভাবেই মেয়ের বাবাকে ইফতারির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়। ইফতারিতে পোলাও, ছোলা, মিষ্টি, নিমকি, জিলাপি, নানান জাতের পিঠা-সন্দেশ, আম, আঙ্গুর, আপেল, খেজুর, মুড়ি, পেয়াজু ইত্যাদি থাকাটা বাধ্যতামূলক। একটি পদ না থাকলে বা পরিমাণ কম হলে মেয়েকে গালমন্দ শুনতে হয়!

এতো গেল ইফতারির কথা। এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে গাছ/বাগান ভরা ফসলের কথা। যদিও এক সময় প্রাকৃতিক ভাবে এ সকল গাছ বেড়ে উঠতো। তখন যেহেতু অভাব ছিল না তাই গাছে ফল ধরলে তা বিক্রি না করে মেয়ে-বোনের শ্বশুর বাড়ি পাঠানো হত। যাকে বলা হয় আম-কাঁঠালি বা জৈঠালী। যদিও সে স্বর্ণযুগ এখন আর নেই। এখন সব কিছুই বাণিজ্যিক হয়ে গেছে। আতœীয়-স্বজনকে দেয়াতো দুরের কথা নিজে না খেয়েও গাছে পুরোপুরি ফল আসার আগেই তা ব্যাপারীদের নিকট বিক্রি করে দেয়া হয়। বিষয়টি ইসলামের আলোকে কতটুকু জায়েজ তা বিজ্ঞ আলেমরা ভাল বলতে পারবেন। জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে বাড়ি-ঘর তৈরি হওয়ায় সেই বাগানও এখন আর নেই। যাও আছে তা এখন আগর-সেগুন-আকাশীর দখলে চলে গেছে। তাই বলে কি মেয়ের শ্বশুর বাড়ি আম-কাঁঠালি দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে? তা হতে পারেনা। জ্যৈষ্ঠ মাস এলে বাজার থেকে কিনে হলেও মেয়ে-বোনের শ্বশুর বাড়ি আম-কাঁঠালি দিতেই হবে। নতুবা শ্বশুর বাড়িতে মেয়ের উপর অত্যাচারের ষ্টিম রোলার চলতে শুরু করবে। বিশেষ করে মানসিক নির্যাতনের ফলে মেয়েরা নিষ্পেষিত হতে থাকবে আমৃত্যু।
আরেকটি প্রসঙ্গ না তুললেই নয়। বিয়ের পর মেয়ের গর্ভে সন্তান আসলে মা-বাবার আনন্দের শেষ থাকেনা। কিন্তু গরিব মা-বাবার সেই আনন্দ দুঃখের সাগরে ভেসে যায়। কারণ তখন মেয়ের শ্বশুর বাড়ির সকলের জন্য কাপড়, সন্দেশ, পিঠা, মিষ্টি ইত্যাদি নিয়ে যেতে হয়। যাকে বলা হয় ‘হাদা’ দেয়া। এখানেই শেষ নয়। সন্তান ভূমিষ্টের পর নাতি হলে একটি গরু বা দু’টি ছাগল এবং নাতনি হলে একটি ছাগল নিয়ে না গেলে মহাভারত যেন অশুদ্ধ হয়ে যায়! আর সারা জীবন মেয়েকে তার প্রায়শ্চিত্ত করতে হয় শ্বশুর বাড়ির গালমন্দ শুনতে শুনতে। এ গুলোও যেন সামাজিক সংবিধানের অংশ হয়ে গেছে।

প্রিয় পাঠক, এ লেখক মফস্বলের সংবাদকর্মী হওয়ার সুবাদে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়। জানা যায় তাঁদের সুখ-দুঃখের নানা কাহিনী। উচ্চবিত্ত পরিবারের কথা নাইবা বললাম। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের হাজারো সমস্যার মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা ও তার করুণ পরিণতির প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। বাবার অভাব অনটনের কথা ভেবে শত শত সখিনা নিরবে সবকিছু সয়ে গেলেও হাজারো সখিনার সংসার ভাঙ্গছে ও জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে। অতিশয় সুন্দরী সখিনার যদি এই অবস্থা, তাহলে কালো মেয়েদের পরিণতির কথা একটু চিন্তা করুন। লেখাটি পড়ে অনেকে হয়ত আমাকে গালমন্দ করতে ভুল করবেন না। আবার অনেকে তা অস্বীকারও করতে পারবেন না। কেননা, সিলেট বিভাগ জুড়ে স্থানীয় সমাজে প্রতিনিয়ত এ রকম ঘটনা ঘটেই চলেছে। সম্প্রীতি বাড়াতে যার প্রচলন হয়েছিল তা এখন সম্প্রীতি ভেঙ্গে সংঘাতের মুল কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইফতারি, হাদা, আম-কাঁঠালি ইত্যাদি এখন যৌতুকের মত অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ তা শুধু মেয়ে পক্ষ থেকে একতরফা ভাবেই নেয়া হয়। আর এই একতরফা ইফতারি, হাদা বা আম-কাঁঠালি খাওয়া কতটুকুই বা হালাল হবে তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। আমরা ছেলে পক্ষের ক’জনইবা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব যে, আমরাও শ্বশুর বাড়ি ফি বছর ইফতারি কিংবা আম-কাঁঠালি নিয়ে যাই? যদিও কিছু লোক পাওয়া যায় তবে সেই সংখ্যা না যাওয়াদের ভিড়ে হারিয়ে যাবে।

আমাদের তথাকথিত এই সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হতে হবে। বন্ধ করতে হবে যৌতুকরূপি এই ইফতারি, হাদা ও আম-কাঁঠালি প্রবণতা। সেই সাথে প্রতিরোধসহ বন্ধ করতে হবে বাল্য বিয়ে। সমাজ-সংসারের শান্তি বিনষ্টকারী এই প্রবণতা বন্ধের জন্য মসজিদের ইমামদের সর্বাগ্রে এগিয়ে আসা উচিত। শান্তির ধর্ম ইসলাম যা কিছু নিয়ে এসেছে তার সবই মানব জাতির কল্যাণের জন্য। কিন্তু আমাদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন গুটি কয়েক লোভী সমাজপতিদের জ্ঞানহীনতার কারনে সেই নিয়ামত গুলো এখন আমাদের জন্য আশির্বাদের বদলে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য ইমামগনকে দাওয়াতের তোয়াক্কা না করে ওয়াজ-নছিহতের মাধ্যমেই সমাজব্যবস্থাকে সু-পথে পরিচালিত করতে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে। সমাজ-সংসারে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁদের উপর অর্পিত গুরু দায়িত্ব যথাযথ ভাবে আদায় করতে হবে। বন্ধ করতে হবে যৌতুক প্রথা। নতুবা আল্লাহর কাছে তাঁদেরকেও সমভাবে জবাবদিহি করতে হবে। আমাদের সমাজপতিরাও রেহাই পাবার কথা নয়।

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, “তোমাদের মধ্যে রমজান মাস পেয়ে যে তার জীবনের গুনাহ মাফ করাতে পারেনি তার মত বখিল আর কেউ নেই”। তাই আসুন, আমরা এ সকল অন্যায় পাপ কাজ থেকে নিজেকে, নিজের পরিবার, প্রতিবেশি সকলকে বিরত রাখি। আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করি সিয়াম ও সংযম সাধনার মাস, রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমজানের নিয়ামত থেকে আমরা যেন বঞ্চিত না হই। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শান্তিময় সুন্দর সমাজ গঠন করি। ইফতারি, হাদা ও আম-কাঁঠালি দিয়ে-নিয়ে নয়, উত্তম আন্তরিকতা দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত করি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।

লেখক ঃ সংবাদকর্মী, সাবেক সভাপতি, জুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাব।

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন