আজ বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং

জীববৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব সমন্বয় সুন্দরবন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-০৯ ১১:৫৫:৩০

মোঃ ওসমান গনি শুভ :: ‌বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়গুলোর মধ্যে অন্যতম সুন্দরবন বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত৷ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা এই তিন নদীর অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গরাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগণা এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জুড়ে বিস্তৃত।

১০,০০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ রয়েছে ভারতের মধ্যে। নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় বনভূমি হলো সুন্দরবন।

মোট বনভূমির ৩১.১ শতাংশ অর্থাৎ ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা,খাঁড়ি,বিল মিলিয়ে জনাকীর্ণ অঞ্চল।
সুন্দরবনে বিভিন্ন প্রকার জীববৈচিত্র্য যেমন - রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, কুমির এবং সাপসহ বিভিন্ন জাতের প্রাণী। জরিপ অনুযায়ী ১০৬টি বাঘ এবং ১,০০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ চিত্রা হরিণ রয়েছে সুন্দরবন এলাকায়। ১৯৯২ সালের ২১শে মে সুন্দরবন রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। সুন্দরবন বাংলাদেশে "সুন্দরবন" এবং ভারতে "সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান" নামে পরিচিত। সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। সুন্দরবনে জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে
সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা, চর এবং ছোটো ছোটো দ্বীপমালা।

পুরো সুন্দরবন অঞ্চল জুড়ে রয়েছ সুন্দরী এবং গেওয়ার পাশাপাশি ধুন্দল,কেউড়া,শন,নল খাগড়া,গোলপাতা। কেউড়া নতুন তৈরি হওয়া পলিভূমিকে নির্দেশ করে।বনভূমির পাশাপাশি সুন্দরবনের বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে নোনা এবং মিঠা পানির জলাধার, আন্ত:স্রোতীয় পলিভূমি, বালুচর, বালিয়াড়ি। বেলে মাটিতে উন্মুক্ত তৃণভূমি এবং গাছ ও গুল্মের এলাকা।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের অর্থনীতিতে যেমন, ঠিক তেমনি জাতীয় অর্থনীতিতেও সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।এটি দেশের বনজ সম্পদের মধ্যে একক বৃহত্তম উৎস। এই বন কাঠের উপর নির্ভরশীল শিল্পে কাঁচামালের যোগান দেয়।এছাড়াও কাঠ, জ্বালানি ও মন্ডের পাশাপাশি এই বন থেকে নিয়মিত ব্যাপকভাবে আহোরণ করা হয় ঘর ছাওয়ার পাতা,মধু,মৌচাকের মোম, মাছ, কচ্ছপ,কুঁচি, কাঁকড়া,শামুক এবং ঝিনুক।বৃক্ষপূর্ণ সুন্দরবনের ভূমি একই সাথে প্রয়োজনীয় আবাসস্থল, পুষ্টি উৎপাদক, পানি বিশুদ্ধকারক, পলি সঞ্চয়কারী, ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধক, উপকূল স্থিতিকারী, শক্তি সম্পদের আধার এবং পর্যটনকেন্দ্র।

লেখক : শিক্ষার্থী, পালি এ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন