সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-১৮ ১৩:৪৫:০৬
বিপ্লব কুমার পোদ্দার :: মোদি আজ ক্ষমতা চ্যুতির দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে। যে দেশে সংখ্যালঘুরা আজ নির্যাতিত নীপিড়িত সেখানে মোদির সরকার নির্লিপ্তভাবে দাড়িয়ে থেকে নির্যাতনকারীদের এক প্রকার মৌন সমর্থন দিয়ে বিভাজন নীতির মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার এক অনৈতিক চেষ্টা বিফল ও অসার হতে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, ভারতের নতুন সরকার, উগ্র মৌলবাদ থেকে বেরিয়ে এসে নতুন এক গনতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরী করবে।
এবার ফিরে আসা যাক যারা নিজেদের ভুল সিদ্বান্ত ও অযোগ্যতাকে জায়েজ করার জন্য রাজনীতিতে শেষ কথা কিছু নেই বলে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রন করতে চান, সেই পক্ষটির কাছে আমার কিছু প্রশ্ন? যতদুর আলোচনা বা তৃনমুল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা তা থেকে দেখা যায়, বর্তমান বিএনপির নেতৃত্ব ও তৃনমুলের মধ্যে পাহাড়সমান পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যেটা সে রাজনৈতিক দলের জন্য অশনি সংকেত ছাড়া আর কিছু নয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এখনো তার নিজস্ব ভাবমুর্তি এবং আদর্শ থেকে কোন রকম বিচ্যুত হয়েছেন বলে পরিলক্ষিত হয় নি। বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, বিএনপির সংসদে যোগদান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সিদ্বান্তের বাইরে গিয়ে একটি মহল বিশেষ স্বার্থস্বিদ্ধির জন্য এক পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। আজ একথা সম্পুর্নভাবে প্রমানিত বিএনপি আর সাংগঠনিকভাবে বড় কোন রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব জানান দিতে অপারগ। আর তার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরন হলো বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মিছিল হয় শুধুমাত্র অল্প কয়েকজনের ঝটিকা মিছিল। যা মনে হয় শুধু খবরের শিরোনাম বা খোরাক হতেই করা হয়।
তবে একথাও সত্য ভোটের দল হিসেবে অথবা সুষ্ঠ নির্বাচনে যে কোন দলকে অনেক পিছনে ফেলে জয়ী হবার এখনো ক্ষমতা রাখে বিএণপি। একথা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বও জানেন। তারপরও যদি বিএনপি উপরোক্ত ভুল করেন এবং এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগন তথা ভোটাররা বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে এর দায় দায়িত্ব কে নেবে?
হঠাৎ করে দেখলাম, স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য দলের ভিতরে প্রতিরোধ প্রতিহত করার উত্তপ্ত বা মর্মস্পর্শী বক্তব্য প্রদানের পরে ত্রান কমিটির দায়িত্ব পেয়ে ইউটার্ন নিয়ে বিপরীতমুখী কথা বলছেন। এগুলো আজ ভেবে দেখবার সময় এসেছে। আজ খুবই প্রয়োজন বেগম খালেদা জিয়ার মতো একজন নেতৃত্ব। যার কোন উচ্চ ডিগ্রী নেই কিন্তু আছে মানুষ এবং দেশের অবস্থা বুঝে রাজনৈতিক সিদ্বান্ত গ্রহন করার মতো এক অপ্রতিরোধ্য নেতৃত্ব। যে একাই অপরীসীম বিরোধীতা ও ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ভেদ করে অভিষ্ট লক্ষে পৌছুঁতে পারেন। আপনাদের কাছে অনুরোধ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সিদ্বান্ত অনুযায়ী দলকে পরিচালিত করুন। নিজেদের স্বার্থ কেন্ত্রীক সিদ্বান্ত গ্রহন থেকে সরে দাড়ান।
এছাড়া নতুন ঘোড়ার সন্ধানে একজন মাত্র সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্যের প্রতিযোগীতায় কিছু লোক অবশ্যই উপকৃত হবেন। এবং এক্ষেত্রে হয়তো ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা ই শেষ হাসি হাসবেন। অন্যদিকে ড কামাল হোসেন, সুলতান মনসুর অথবা মান্নাদের সঙ্গ ত্যাগ করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দলকে বাচান। এমনকি পার্থ-ইরানদের মতো সঙ্গ অথবা জোট প্রয়োজনে জোট ত্যাগ করে একলা চলো নীতি গ্রহন করুন, দেখবেন সফলতা আসবেই।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে যুক্তরাজ্যে তার হোটেলের সামনে প্রতিবাদ এবং ডিম ছোড়ার প্রতিযোগীতায় দল,না-কি একটি গোষ্টী বিশেষভাবে লাভবান হচ্ছে খতিয়ে দেখা হোক।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ প্রকৃত বিরোধী দল বিহীন রাজনীতি সত্যিই কী আপনি উপভোগ করছেন? অথবা বিশ্ব স্বীকৃতিতে কতটা আপনি সফল? আজ কিন্তু সারাদেশে আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি নয়, সংঘর্ষ এবং হতাহত হয় আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। আর বাংলাদেশের ঐতিহ্য মধুর কেন্টিনে হামলা হয় ছাত্রলীগ বনাম ছাত্রলীগ। এর প্রধান কারন প্রকৃত বিরোধী দলের অভাব রাজনৈতিক শুন্যতা সৃষ্টি করছে। আপনারাই কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন, ভেবে দেখবেন। তাই রাজনৈতিক বিদ্বেষ আর আক্রোশ থেকে বেরিয়ে এসে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিয়ে নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহন করা হোক।
লেখক: লন্ডনে কর্মরত আইনজীবি, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৮ মে ২০১৯/এমএসি/এসডি