আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

এরশাদ নামা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-১৭ ২১:৪৮:২১



:: শাহআলম সজীব ::

বাংলাদেশের দুই স্বৈরশাসকের একজন জেনারেল এরশাদ। সামরিকজান্তা এরশাদ যখন বন্দুকের নলের জুড়ে সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হন, তার অনেক পরে আমার জন্ম।

তবে সামরিক শাসনামলের পরবর্তী প্রজন্ম আমরা যারা, আমরা দেখেছি জনাব এরশাদকে একজন গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে। দেখেছি সংসদীয় রাজনীতিতে সরব উপস্থিতি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে।

৯০ পরবর্তী সময়ে বিএনপির ১০ বছর বাদ দিলে জনাব এরশাদ পুরোটা সময় ছিলেন দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন আ'লীগের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে। আজকের সংসদীয় গণতন্ত্রে বাংলাদেশের পুনঃঅভিযাত্রায় একজন এরশাদের ভূমিকা অপরিসীম। তাছাড়া আজকের উন্নয়নের যে বাংলাদেশ, সেখানেও জনাব এরশাদের ভূমিকা অনবদ্য।

২০০১ থেকে ২০০৬, রক্তাক্ত বাংলাদেশ। খুন খারাপি, রাষ্ট্রীয়ভাবে জঙ্গি লালনপালন, রাষ্ট্রীয় মদতে রাজনৈতিক হত্যাকান্ড, দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতাদের টার্গেট করে হত্যা, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, আ'লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র , নিজেদের দলীয় সাবেক নেতা বিচারপতি হাসান আরিফকে তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার নীলনকশা এবং এসবের বিরুদ্ধে একপর্যায়ে আ'লীগের নেতৃত্বে মহাজোট গঠন।

মনে আছে এখন দগদগে পল্টন ময়দানের সেই মহা সমাবেশের কথা। জনাব এরশাদসহ মহাজোট গঠন হবে, ঘোষণা আসবে পল্টনে। সময় গড়িয়ে যাচ্ছে, ঢাকা নগরী যেনো উত্তাল মিছিলের নগরী। সবচেয়ে বড় মিছিলটি নিয়ে এসেছিলেন সম্ভবত জনাব হাজী সেলিম। আর জনাব সাবের হোসেন চৌধুরীর মিছিল হবে দ্বিতীয়।

মঞ্চের সামনেই বসা ছিলাম। অন্যদিকে প্রতিটি মানুষ কি যেনো খোঁজে ফিরছিল ? সবারই জিজ্ঞাসা, শেষপর্যন্ত জনাব এরশাদ কি মহা সমাবেশে আসবেন ? ড. কামাল হোসেন বক্তব্য রাখছিলেন, এমন সময় মাইকে ঘোষণা আসলো এরশাদ সাহেব কিছুক্ষণের মধ্যে মঞ্চে এসে উপস্থিত হবেন (উপস্থাপকের নামটা মনে পড়ছে না এখন, সম্ভবত আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন)।
জনাব এরশাদ আসলেন, উপস্থিত লাখো লাখো নেতাকর্মীদের কি উচ্ছাস, আনন্দ দেখেছি সেই সময়। করতালির মাধ্যমে অভিবাদন জানানো হলো তাকে।

সেই আনন্দ আর উচ্ছাস ছিল বিএনপি জামাতের হত্যা, নিপীড়নের বিরুদ্ধে গঠিত মহাজোটের জন্য, জনাব এরশাদের মহা সমাবেশে যোগদানের জন্য। এরপর রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন আহমেদের প্রধান উপদেষ্টা হওয়া, ঘোষিত নির্বাচনের তফসিল বাতিলসহ আন্দোলন, মহাজোটের অধীনে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং ভূমিধ্বস বিজয় ........

উপরের উল্লেখিত অংশটুকু বাদ দিয়ে আমরা যদি শুধু ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের কথা ধরি, তাহলে জেনারেল এরশাদকে কি ভূমিকায় দেখি আমরা ?

বিএনপি জামাত জোট নির্বাচন বর্জন করে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণার মাঝে অনেক গণতান্ত্রিক দলকে, বিশেষ করে বাম দলগুলোকে নির্বাচন বর্জন করতে দেখেছি। অথচ ওইসব অনেক দলই সামরিক শাসক জিয়ার অধিনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। কিন্তু জনাব এরশাদ তাদের পথে হাটেননি। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রেখেই নির্বাচনের পথে হেটেছেন তার দলকে নিয়ে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাস রেখেছেন উন্নয়নে।

নতুন প্রজন্মের একজন হিসেবে 'আজকের সংসদীয় গণতন্ত্রে বাংলাদেশের পুনঃঅভিযাত্রায় এবং উন্নয়নের মহাসড়কে যে বাংলাদেশ দেখছি' সেখানে একজন এরশাদের ভূমিকা অপরিসীম।

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন