আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

দারিদ্র্য চ্যালেঞ্জ জয়ের পথে বাংলাদেশ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১০-১২ ১৩:০৫:৩১

ড. এ কে আবদুল মোমেন :: ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভূখ-ের স্বপ্ন দেখতেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই স্বপ্ন অর্জনের পেছনেই ছিল তার আজীবনের সংগ্রাম। এই স্বপ্নকে লালন করেই তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাধীনতা সংগ্রামে। একটি স্বাধীন দেশ বাংলার মানুষকে উপহার দিয়ে গেছেন। এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠন করাই ছিল তার সারা জীবনের প্রচেষ্টা। ‘কাউকে পেছনে ফেলে, কাউকে অর্থনীতির মূল স্রোতধারার বাইরে রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা নয়’। এ নীতিতেই প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাটি তিনি সাজিয়েছিলেন এ দেশের মানুষকে বৈষম্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে। তিনি তার কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি। তার সেই গুরুভারই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তার সুযোগ্য কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনা। যার হাত ধরে বাংলাদেশ আজ দারিদ্র্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য নিরসনের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি মিলছে বিশ^জুড়ে। দ্রুত দারিদ্র্য বিমোচনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে যেসব দেশ, তার মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষ তালিকায়।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত ‘মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স ২০১৯’-এ উঠে এসেছে বাংলাদেশের সাফল্যের এই চিত্র। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে (এসডিজি) যে ১৭টি লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে, তার প্রথমটি হলো দারিদ্র্য বিমোচন। ২০৩০ সালের মধ্যে সব জায়গা থেকে ‘বহুমাত্রিক’ দারিদ্র্য দূর করার কথা বলা হয়েছে সেখানে। এই লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘ অধিভুক্ত দেশগুলোর সক্ষমতা ও অগ্রগতি পর্যালোচনা ও বোঝার একটি কৌশল হলো ‘মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স’ বা এমপিআই। এর ভিত্তিতেই বিশে^র সবচেয়ে দ্রুত দারিদ্র্য নিরসন করছে এমন তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। অন্য দুটি দেশ হলোÑ ভারত ও কম্বোডিয়া। বাংলাদেশ ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে আনতে সক্ষম হয়েছে।

‘মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স’-এ দারিদ্র্য পরিমাপের জন্য কেবল মাথাপিছু আয়কে নির্ণায়ক হিসেবে বিবেচনা না করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মানসহ মোট ১০টি মানদ-ে দারিদ্র্যকে পরিমাপ করা হয়। ১০টি মানদ-ের মধ্যে কোনো পরিবারে যদি এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকে, তা হলে ওই পরিবার বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে বলে ধরা হয়। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পুষ্টি ও শিশুমৃত্যুর হার, জীবনযাত্রার মানের ক্ষেত্রে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা, নিরাপদ পানি, বিদ্যুৎ, সম্পদের মালিকানা ও বিছানা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে স্কুলে উপস্থিতি ও প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার হারকে মানদ- হিসেবে বিবেচনা করা হয় এ গবেষণায়। এ মানদ-ের বিচারেই দেখা যায়, বিশে^ সবচেয়ে দ্রুত বহুমাত্রিক দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারছে বাংলাদেশ, যা নিঃসন্দেহে একটি দুঃসাহসী কাজ। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, সফল পরিকল্পনা ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ফলে দ্রুত কমে আসছে দেশের দরিদ্র জনসংখ্যা।

ইউএনডিপি, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়Ñ ‘মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স’ ব্যবহার করে তারা ১০টি মানদ-ে পৃথিবীর ১০১টি দেশের দারিদ্র্যের দশা চিহ্নিত করার পাশাপাশি প্রতিবছর কোন মানদ-ে কতটা পরিবর্তন আসছে, তা বোঝার চেষ্টা করেছে। প্রতিবেদনে দেখিয়েছেÑ বর্তমানে পৃথিবীতে এই ১০১টি দেশের ১৩০ কোটি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে জর্জরিত। এই সংখ্যা দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার ২৩ দশমিক ১ শতাংশ। এদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের বসবাস মধ্যম আয়ের দেশগুলোয়। বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে থাকা এই ১৩০ কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বয়স ১৮ বছরের নিচে, এক-তৃতীয়াংশের বয়স ১০ বছরের কম। বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের রূপটি আরও স্পষ্ট বোঝার জন্য ১০টি দেশের তথ্য আলাদা করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সবগুলো অঞ্চল, সবগুলো অর্থনৈতিক শ্রেণি থেকে বাছাই করা এ দেশগুলোয় ২০০ কোটি মানুষের বসবাস। ১০টি দেশই জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) প্রথম লক্ষ্য পূরণে অগ্রগতি দেখিয়েছে। এর মধ্যে আটটি দেশ বহুমাত্রিক দরিদ্রের সংখ্যা কমিয়ে সূচকে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে গত এক বছরে। মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স ২০১৯’ বলছে, বাংলাদেশে এখনো ২ কোটি ৬৭ লাখ মানুষ ‘বহুমাত্রিক’ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে, যা মোট জনসংখ্যার ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এক বছর আগে এই হার ছিল ১৮ শতাংশের মতো। আশার কথা হলোÑ যে ১০টি মানদ-ে এ সূচক তৈরি হয়েছে তার নয়টিতেই বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হয়েছে এবং বহুমাত্রিক দারিদ্র্য কমার গতি গ্রাম ও শহরÑ দুই ক্ষেত্রেই প্রায় সমান। বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পয়েন্ট সমানÑ শূন্য দশমিক ১৯৮। কিন্তু পাকিস্তানে অসমতা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের আওতায় বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রমের যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, তা একদিনে এমনি এমনি হয়নি। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি যথার্থ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার ধারাবাহিক বাস্তবায়ন প্রয়োজন পড়েছে। এর সবই সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ক্যারিশমেটিক নেতৃত্বের ফলে। তার নেতৃত্বেই সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এমডিজি-১ অর্জনের মাধ্যমে বিশ^কে তাক লাগিয়ে দেয় বাংলাদেশ। দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগে, ২০১৩ সালেই অর্জন করে ফেলে। দারিদ্র্য হ্রাসকরণসংক্রান্ত এমডিজি-১ লক্ষ্য অর্জনে বিশ্বে অগ্রগামী ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘ কর্তৃক ‘বিশেষ স্বীকৃতি’ লাভ করে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বাংলাদেশকে এ জন্য ‘ডিপ্লোমা অ্যাওয়ার্ড’ও প্রদান করে। একই কারণে বাংলাদেশ ‘সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করে। এমডিজির চতুর্থ লক্ষ্য, শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে ২০১০ সালেই ২০১৫-এর লক্ষ্য অর্জন করে বাংলাদেশ। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘ ‘এমডিজি অ্যাওয়ার্ড-২০১০’-এ ভূষিত করে। শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার-সংক্রান্ত এমডিজি-৪ ও এমডিজি-৫ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করেছিল। ফলে বাংলাদেশের জন্য এ দুটি লক্ষ্য অর্জন করাও সহজ হয়েছিল। এ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশকে ‘সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করা হয়। নারী শিক্ষায় ব্যাপক সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘ থেকে ‘ইউনেস্কো পিস ট্রি’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। এমডিজি-৫ এর আওতায় নারীর ক্ষমতায়নে তার ভূমিকার জন্য ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয় এবং ইউএন-উইমেনের পক্ষ থেকে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ঘোষণা করা হয়। এমডিজি-৭ এর লক্ষ্য অনুযায়ী, পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাসংক্রান্ত সাফল্যের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে তার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বের জন্য ইউএনইপি থেকে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আজকের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার দারিদ্র্য বিমোচনের ভিত্তিমূল স্থাপিত হয়েছে মূলত ওইসব কার্যক্রম থেকেই।

দারিদ্র্য হ্রাসে শেখ হাসিনার সরকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে অর্জিত গতিশীলতা ও হতদরিদ্রদের জন্য টেকসই নিরাপত্তাবেষ্টনীর মাধ্যমে জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা, অতিদরিদ্র ও দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য ও টেস্ট রিলিফ, জিআর, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, আশ্রয়ণ, গৃহায়ণ, আদর্শ গ্রাম, গুচ্ছগ্রাম, ঘরে ফেরা প্রভৃতি কর্মসূচির পাশাপাশি ওএমএস, ফেয়ার প্রাইস কার্ড, ভিজিডি, প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতা, বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা ও দুস্থ মহিলা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা, চর জীবিকায়ন প্রভৃতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ ছাড়া দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্রঋণ, ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত গোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে। যেখানে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট ব্যয় ছিল ১১ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা, সেখানে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভাতার পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধিপূর্বক ৫৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, যা বাজেটের ১৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ‘খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০১৫-১৬’ থেকে দেখা যায়, দেশের ২৮ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতাভুক্ত। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীকে আরও যুগোপযোগী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে সরকার প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল’ (২০১৫) প্রণয়ন করেছে।

বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের গতিবিধির ওপর লক্ষ করলে দেখা যায়, ২০১০ সালে আমাদের দারিদ্র্যের হার যেখানে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ ও চরম দারিদ্র্যের হার ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল, সেখানে ২০১৬ সালে তা এসে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ ও ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০১৮ সালে দারিদ্র্যের হার আরও কমে হয়েছে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩ শতাংশে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উচ্চপ্রবৃদ্ধি অর্জন এবং সামাজিক নিরাপত্তাবলয় সুবিন্যস্ত ও গভীরতর করায় দেশের দারিদ্র্য কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১ অর্জনের পাশাপাশি এর দ্বিতীয় অভীষ্ট : ক্ষুধা মুক্তি-এর পুষ্টি সূচকের ক্ষেত্রে শিশুদের খর্বিত বিকাশ ২০১৬ সালে ছিল ৩৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ, তা কমে ২০১৭ সালে দাঁড়িয়েছে ৩৭ দশমিক ৮২ শতাংশ।

জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে অতিদারিদ্র্যের হার ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে শেখ হাসিনার সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। প্রবৃদ্ধির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে অতিদারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। এসডিজির এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে গড়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। সরকার এ লক্ষ্যেও বদ্ধপরিকর।

শেখ হাসিনা সরকারের পরিচালনায় গত ১০ বছরে দেশ বদলেছে, গতিশীল হয়েছে অর্থনীতির চাকা। বেড়েছে কর্মসংস্থান, বেড়েছে মানুষের মাথাপিছু আয়। অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই আজ স্পষ্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে উন্নয়নের ধারা। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রমে দারিদ্র্য বিমোচনসহ এসডিজির অধিকাংশ অভীষ্ট লক্ষ্যের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে। ‘রূপকল্প : ২০২১’ সামনে রেখে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১)’ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনার উন্নয়ন ভাবনাকে বাস্তবে রূপান্তরের লক্ষ্যে মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে প্রণীত ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১১-১৫) ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০) গ্রহণ করা হয়েছে। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন শেষে বর্তমানে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ রূপকল্প ২০২১-এ বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা এবং দারিদ্র্যের হার ১৩ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। সর্বক্ষেত্রে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় দেশ আজ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি নিরক্ষরতামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করবে। জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে ওঠার পথে সগৌরবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

লেখক : মন্ত্রী, পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন