Sylhet View 24 PRINT

বাংলা সাহিত্য ও আমাদের রবীন্দ্রনাথ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-২৩ ০০:২৩:৫৪

:: আল-আমিন :: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের মহাকবি। ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক।

বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক এই কবিকে মনে করা হয়। তিনি গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত। তিনি বিশ্বে বাংলা সাহিত্যকে সম্মৃদ্ধি করেছেন। তার গুটিকয়েক গ্রন্থ পড়ে তার সম্পর্কে লেখা যায় না। তাকে নিয়ে লিখতে হলে তার সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান থাকা দরকার। যা আমার এই জ্ঞানের পরিমান সিকি আনাও নেই। তারপরও সাহস করে লিখতে বসেছি। শত বছর আগে এই প্রেমের মহাকবি সিলেটে এসেছিলেন। পদাচারণ দিয়েছিলেন সিলেট এমসি কলেজে। আমি এই কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র। সেই হিসেব কষে রবীন্দ্রনাথকে আমি আমার খুব কাছের একজন মানুষ মনে করি এবং তিনিই আমার প্রিয় কবি সেই সুবাদে আজকের এই লেখাটি লিখছি। আমার কাছে রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা প্রকাশ পেয়েছে। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষা, কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করেছেন। সমাজকল্যাণে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। তিনি শহর থেকে গ্রামকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর।" এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। তিনি তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি গানকে মানুষের মাঝে আবেগ ভালবাসায় বিলিয়েছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাতসংগীত, ছবি ও গান ও কড়ি ও কোমল কাব্যগ্রন্থের মূল বিষয়বস্তু ছিল মানব হৃদয়ের বিষণ্ণতা, আনন্দ, মর্ত্যপ্রীতি ও মানবপ্রেম। ১৮৯০ সালে তাঁর প্রকাশিত মানসী এবং তারপর প্রকাশিত সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালি, কল্পনা ও ক্ষণিকা কাব্যগ্রন্থে ফুটে উঠেছে কবির প্রেম ও সৌন্দর্য সম্পর্কিত রোম্যান্টিক ভাবনা। তাঁর কবিতায় আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রাধান্য কবির রচিত নৈবেদ্য, খেয়া, গীতাঞ্জলি, গীতিমাল্য ও গীতালি কাব্যগ্রন্থে পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি পূরবী ও মহুয়া কাব্যগ্রন্থে প্রেমকে উপজীব্য করেছেন। তাঁর জনপ্রিয় কাব্য গ্রন্থ পুনশ্চ, শেষ সপ্তক, পত্রপুট ও শ্যামলী নামে চারটি গদ্যকাব্যও বাংলা সাহিত্যকে বেশ সাড়া জুগিয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের কবিতায় মধ্যযুগীয় বৈষ্ণব পদাবলি, কবীরের দোঁহাবলি, লালনের বাউল গান ও রামপ্রসাদ সেনের শক্ত পদাবলি সাহিত্যের প্রভাব রয়েছে। প্রাচীন সাহিত্যের দুরূহতার পরিবর্তে তিনি একটি সহজ ও কাব্যরচনার আঙ্গিক গ্রহণ করেছেন। তাঁর হাত ধরেই বাংলা সাহিত্যের আধুনিকতা ও বাস্তবতাবোধের প্রাথমিক আবির্ভাব হয়। সারা দুনিয়ায় এই কবিগুরুর সর্বাপেক্ষা সুপরিচিত কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি বাংলা ভাষার সব মানুয়ের মুখে মুখে। এ বইটির জন্যই তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন। এই কাব্যগ্রন্থটি একটি গভীরভাবে সংবেদনশীল, উজ্জ্বল ও সুন্দর কাব্যগ্রন্থ হিসেবে সমাধিত হয়েছে বলে আমরা রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে জানতে পারি।

বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ছোটগল্পকার হিসেবেও এই কবি বাংলা সাহিত্যে বেশ জায়গা দখল করেছে। হিতবাদী, সাধনা, ভারতী, সবুজপত্র মাসিক পত্রিকায় তার ছোটগল্পগুলি নিয়মিত প্রকাশ হতো। এই গল্পগুলিও ছিল উচ্চমানের সাহিত্য সম্পন্ন। কবির উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গল্প হল কঙ্কাল, নিশীথে, মণিহারা, ক্ষুধিত পাষাণ, স্ত্রীর পত্র, নষ্টনীড়, কাবুলিওয়ালা, হৈমন্তী, দেনাপাওনা, মুসলমানীর গল্প ইত্যাদি। কবি তার শেষ জীবনে লিপিকা, সে ও তিনসঙ্গী গল্পগ্রন্থ নতুন আঙ্গিকে গল্পরচনা করেছিলেন। তিনি তাঁর গল্পে পারিপার্শ্বিক ঘটনাবলি বা আধুনিক ধ্যানধারণা সম্পর্কে মতামত দিয়েছেন। কবির একাধিক ছোটগল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্র, নাটক ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মিত হয়েছে। তাঁর গল্পের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রায়ণ হল সত্যজিৎ রায় পরিচালিত মনিহারা, পোস্টমাস্টার ও সমাপ্তি অবলম্বনে "তিন কন্যা"। নষ্টনীড় অবলম্বনে "চারুলতা"। তপন সিংহ পরিচালিত অতিথি , কাবুলিওয়ালা ও ক্ষুধিত পাষাণ। পূর্ণেন্দু পত্রী পরিচালিত স্ত্রীর পত্র ইত্যাদি ব্যাপক সমাধিত হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট তেরোটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। বৌ-ঠাকুরাণীর হাট, রাজর্ষি, চোখের বালি, নৌকাডুবি, প্রজাপতির নির্বন্ধ, গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ, যোগাযোগ, শেষের কবিতা, দুই বোন, মালঞ্চ ও চার অধ্যায়। বৌ-ঠাকুরাণীর হাট ও রাজর্ষি রবীন্দ্রনাথের ঐতিহাসিক উপন্যাস এবং এদুটি উপন্যাস কবির প্রথম উপন্যাস রচনার প্রচেষ্টা। এরপর থেকে ছোটগল্পের মতো তাঁর উপন্যাসগুলিও মাসিকপত্রের চাহিদা অনুযায়ী নবপর্যায় বঙ্গদর্শন, প্রবাসী, সবুজপত্র, বিচিত্রা প্রভৃতি পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র সত্যজিৎ রায়ের ঘরে বাইরে ও ঋতুপর্ণ ঘোষের চোখের বালিও ছিল অসাধারণ সৃষ্টি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় অসংখ্য প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন। এইসব প্রবন্ধে তিনি সমাজ, রাষ্ট্রনীতি, ধর্ম, সাহিত্যতত্ত্ব, ইতিহাস, ভাষাতত্ত্ব, ছন্দ, সংগীত ইত্যাদি নানা বিষয়ে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেন। রবীন্দ্রনাথের সমাজচিন্তামূলক প্রবন্ধগুলি সমাজ সংকলনে সংকলিত হয়েছে। কবির বিভিন্ন সময়ে লেখা রাজনীতি সংক্রান্ত প্রবন্ধগুলি সংকলিত হয়েছে কালান্তর সংকলনে। তাঁর ধর্মভাবনা ও আধ্যাত্মিক অভিভাষণগুলিও সংকলিত হয়েছে
ধর্ম ও শান্তিনিকেতন অভিভাষণমালায়। তিনি ইতিহাস সংক্রান্ত প্রবন্ধগুলি ভারতবর্ষ, ইতিহাস ইত্যাদি গ্রন্থে তুলে এনেছেন। সাহিত্য, সাহিত্যের পথে ও সাহিত্যের স্বরূপ গ্রন্থগুলোতেও সাহিত্যতত্ত্ব রয়েছে। সভ্যতার সংকট তার সর্বশেষ প্রবন্ধগ্রন্থ। জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বপরিচয় নামে একটি তথ্যমূলক প্রবন্ধগ্রন্থ রয়েছে যা দিয়ে এখানকার সময়ের সাইন্সফিকশন সাহিত্য রচনাকারীদের জন্য খুব তথ্যবহুল গ্রন্থ হিসেবে পরিচিত। জীবনস্মৃতি, ছেলেবেলা ও আত্মপরিচয় তাঁর আত্মকথামূলক গ্রন্থ। রবীন্দ্রনাথের সামগ্রিক পত্রসাহিত্য আজ পর্যন্ত উনিশটি খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও ছিন্নপত্র ও ছিন্নপত্রাবলী, ভানুসিংহের পত্রাবলী ও পথে ও পথের প্রান্তে বই তিনটি রবীন্দ্রনাথের উল্লেখযোগ্য পত্রসংকল। বিশ্বকবির পূজা, প্রেম, প্রকৃতি, স্বদেশ, আনুষ্ঠানিক ও বিচিত্র পর্যায়ে মোট দেড় হাজার গান সংকলিত করা হয়েছে। এরমধ্যে গীতিনাট্য, নৃত্যনাট্য, নাটক, কাব্যগ্রন্থ ও অন্যান্য সংকলন বিশেষভাবে গ্রহনযোগ্য।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির হৃদয়ে বিরাজমান। তিনি নিরবচ্ছিন্ন সাহিত্য সাধনা, মেধা ও শ্রমে নিজেই ক্রমাগত নিজেকে অতিক্রম করেছেন যা তাঁকে বহুমাত্রিক শিল্পস্রষ্টার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। নিজের বিরাট সৃষ্টিশীল ক্ষমতা তাঁকে এক যুগোত্তীর্ণ মহাপুরুষের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। বাংলা সাহিত্যে হাতে গোনা যে ক’জন বড় মাপের কবি তার মধ্যে একজন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি তাঁর সাহিত্য সৃষ্টিতে অবিভক্ত বাংলায় নবজাগরণের রবি কিরণের উন্মেষ ঘটেছিল। সেই থেকে রবীন্দ্রনাথ আমাদের জীবনে সত্য ও সুন্দরের মতো বহমান এবং সমগ্র বাঙালির হৃদয়ে এবং বাংলা সাহিত্যজগতে পাহাড়ের মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন ঐশ্বর্য নিয়ে। বাঙালির সমৃদ্ধ ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতির বহুলাংশ জুড়েই আছেন আমাদের এই রবী ঠাকুর। বাঙালি তাই তাঁর প্রতিটি সংকটে, প্রতিটি সংশয়ে আশ্রয় নেয় তাঁর সৃষ্টির কাছে। রবীন্দ্রনাথ নিজের সমৃদ্ধ সাহিত্য চর্চার পরিধি দিয়ে বিস্তৃত করেছেন গোটা বাংলা সাহিত্যের পরিসর। তাঁর রচনা চির নতুন ও চিরকালের, কারণ তিনি জগৎ ও জীবনকে দেখেছেন দৃষ্টির সীমানায়। যে দৃষ্টি তৈরি হয়েছিল অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দর্শনের সমন্বয়ে। বাঙালির যাপিত জীবনাচরণের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে জীবনের প্রভাত থেকে অন্তিমলগ্ন পর্যন্ত।

তিনি বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিভায় সব্যসাচী লেখক, কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, সঙ্গীত রচয়িতা, সুর স্রষ্টা, গায়ক, সমালোচক, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ হিসেবে অনন্য। তিনি সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যকে, বিপুল সৃষ্টিসম্ভারে বদলে দিয়েছেন বাঙালির মানসজগত এবং বাংলাকে দিয়েছেন বিশ্ব পরিচিতি। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। যা অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই। আমাদের শিল্প-সাহিত্য, ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, রাজনীতি, জীবন- চেতনায় রবীন্দ্রনাথ অপরিহার্য হয়ে আছেন। আমাদের জীবনের সঙ্গে, চেতনার সঙ্গে, মননের সঙ্গে, আন্দোলনে, ভাষার মাধুর্যে, দেশপ্রেমে সৃষ্টিশীল কর্মের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। আমাদের প্রাণের টানে, জীবনের টানে, চেতনার টানে, শিল্প ও সাহিত্যের টানে রবীন্দ্রনাথের কাছে আমাদের বারবার ফিরে যেতে হচ্ছে শিল্পের সৃষ্টির টানে। তাঁর কবিতার ছন্দ, বাণী ও সুর আমাদের হৃদয়ে জাগিয়ে দেয় শান্তির শুভ্র পরশ। অনন্ত অসীমের সেই রবীন্দ্রনাথের কাছে আমরা প্রার্থনায় মগ্ন হই, পরম বিশ্বাসে,ভালোবাসায়।

রবীন্দ্রনাথ আমাদের প্রাণের কবি, প্রেমের কবি, জীবনের কবি, প্রকৃতির কবি, গানের কবি, মানুষের ভালোবাসার কবি হয়ে চেতনার আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে অপার্থিব আনন্দলোকে আনন্দের বিস্তৃৃতি ঘটিয়েছেন। তিনি বাঙালি হয়েও চিন্তা-চেতনায় আধুনিক ও আন্তর্জাতিক বোধসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। তাঁর শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা ছড়া, কবিতা কিংবা বড়দের জন্য লেখা কবিতা, গান, গল্প-উপন্যাসে আমরা বাঙালির সহজ সরল জীবনকে তুলে ধরতে দেখি। তাঁর নানা কাব্যগীতিতে আমরা প্রেম সৌন্দর্য, রোমান্টিক ভাবনা, আধ্যাত্মিক কল্পনার চিন্তাধারা পরিলক্ষিত হতে দেখি। রবীন্দ্রনাথের অসাধারণ গল্প উপন্যাস এখনো আমাদের সৃজনশীল মনকে আনন্দিত করে। আমরা বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও মঞ্চে রাজা ও রানী, বিসর্জন, রক্তকরবী, চিত্রাঙ্গদা, চিরকুমার সভা, বাল্মিকী প্রতিভা, তাসের দেশ, ডাকঘর, রাজা, মুক্তধারা, অচলায়তন, শেষের কবিতা কবির অসাধারণ সৃষ্টি। রবীন্দ্রনাথ আছেন বাঙালির হৃদয় জুড়ে তাঁর সৃষ্টির উৎসারণে কবিতা, ছড়া, গল্প, উপন্যাস, মঞ্চনাটক, টিভি নাটক, নৃত্যনাট্য, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত এবং বাংলার সমগ্র সংস্কৃতিতে। তিনি তাঁর মানবীয় উচ্চ ভাবনা-চেতনা আর মানুষের চিরায়ত অনুভূতি ভাষার সৌকর্য সাধন আর নিপুণ শৈল্পিক উপস্থাপনার মাধ্যমে কাব্য-সঙ্গীত-প্রবন্ধ-গল্পে আর চিত্রকলায় রূপায়িত করে মানুষের চেতনাকে শানিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির ব্যাপকতা বিশ্বজুড়ে শিখরস্পর্শী প্রতিভায় উদ্ভাসিত যা বাঙালির সাংস্কৃতিক স্বকীয়তায় ছড়িয়েছে রবির আলো।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনকে শিল্পবোধ থেকেই অনুভব করেছেন। আর সেজন্য তাঁর শিল্প-সৃষ্টি প্রায়শই জীবনসংলগ্ন। তিনি কাব্য, গল্প, উপন্যাস, সঙ্গীত, নাটককে জীবনের প্রতিভায় সঞ্চিত করেছেন। যা রূপালঙ্কার, প্রতীক ও বিমূর্ততার দ্যোতনায় হয়েছে উজ্জ্বল। সব মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় এক বিশেষ স্থান দখল করে আছেন। দেড়শ বছর পেরিয়েও কবি আমাদের মাঝে তাই চিরজাগরুক হয়ে আছেন। সমগ্র বাঙালির মানস জগতে রবীন্দ্রনাথ চিরকালীন আবেগ, প্রেরণায় জাগ্রত থাকবেন এবং বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির আলোর দিশারি হয়ে আলো ছড়াবেন যুগ থেকে যুগান্তরে। তাঁর সৃষ্টি, তাঁর স্বপ্ন আর জীবন দর্শন আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে সত্য ও সুন্দরের।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.