আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সাংবাদিক নির্যাতন: অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-১৮ ১৯:২৮:৪৭

সানোয়ার হাসান সুনু :: ত্রিশলাখ শহীদ ও তিনলাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রিয় মাতৃভ‚মি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। সাংবিধানিকভাবে আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান হলেও বাস্তবে দেশে কি ঘটছে? অতি সম্প্রতি কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের উপর প্রশাসনের কতিপয় উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক মধ্য রাতে যেভাবে মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালানো হলো তা নজির বিহীন। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা যেভাবে ক্ষমতার দাপট দেখালেন তাতে দেশবাসী হতবাক।

তৎ সময়ে কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীনের নির্দেশে ডিসি অফিসের সহকারী কমিশনার (আরডিসি) নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিশ্বাস চাকমা এবং রাহাতুল ইসলামের নেতৃত্বে ৪০ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ দল মধ্য রাতে সাংবাদিক আরিফের বাড়িতে হানা দিয়ে তার হাত, মুখ ও চোখ বেধেঁ নির্মমভাবে নির্যাতন চালায় এবং রাতে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে মদ গাজাঁ দিয়ে এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। এই ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠে।

নির্যাতিত সাংবাদিক আরিফুল হক ডিসি সুলতানার দুর্নীতি নিয়ে ট্রিউবিন পত্রিকায় রির্পোট প্রকাশ করে কি অপরাধ করেছেন? এই ঘটনার জের ধরেই ডিসি অফিসের কর্মকর্তারা সাংবাদিক আরিফুল হককে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন।

ঘটনার পরপরই অভিযুক্তদের প্রতাহার করা হলেও প্রশ্ন হচ্ছে সাংবাদিক আরিফ যদি মিথ্যা রির্পোট দিয়ে থাকেন ডিসি সুলতানা ঐ পত্রিকায় প্রতিবাদ বা প্রেস কাউন্সিলে মামলা অথবা আদালতে মামলা করতে পারতেন। সেটা না করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে সঙ্গবদ্ধভাবে রাতের আধারে চোখঁ, হাত বেধেঁ মারপিট করে অফিসে নিয়ে আসেন। মাদকের ঘটনা সাজিয়ে ১বছরের জেল দিলেন! প্রশ্ন হচ্ছে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফৌজদারী অপরাধ করেও বহাল তবিয়তে আছেন ঐ কর্মকর্তারা। আইন যদি সবার জন্য সমান হয়ে থাকে তবে অবিলম্বে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

নির্যাতিত সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম বলেছেন, ডিসি সুলতানা ও আরডিসি নাজিম উদ্দিন, রিন্টু বিশ্বাস চাকমা গংরা মদ গাজাঁ দিয়ে ঘটনা সাজিয়ে ভূয়া মামলা দিয়ে তাকে ফাসিঁয়েছেন। এই বিষয়ে মদ গাজাঁ কোথায় থেকে এলো ডিসি সুলতানা ও আরডিসি নাজিম উদ্দিন গংদের কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে অনেকই মনে করছেন। এব্যাপারে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার। দেশবাসী আশা করছেন সরকার মোবাইল কোর্টের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুধ্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আন্তরিক পদক্ষেপ গ্রহন করবেন। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় এর বিকল্প নেই।

লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন