Sylhet View 24 PRINT

রমজান : ক্ষুধার্তের পাশে দাঁড়াতে শেখায় রোজা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৫-০৯ ০৩:২১:৫৪

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী :: পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় কষ্ট হল ক্ষুধার কষ্ট। এ ক্ষুধার জন্যই আমাদের এত পরিশ্রম এত ছোটাছুটি। পেটপুরে দু’মুঠো খাওয়ার জন্য কি না করে মানুষ। এমনও শোনা যায়, পেটের জ্বালা নিভাতে পেটের সন্তানকেই বিক্রি করে দিয়েছে মানুষ।

রোজার আগে একটি সংবাদে দেখলাম, খেতে না পেয়ে দরিদ্র বাবার এক হতভাগ্য সন্তান গলায় ফাঁস দিয়েছে। একজন মানুষ যতক্ষণ না ক্ষুধায় কষ্ট পাবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কোনোভাবেই ক্ষুধার জ্বালা কেমন তা বোঝানো যাবে না। মানুষের ক্ষুধার কষ্ট কী তা বোঝার জন্যও নবীজি (সা.) অনেক সময় না খেয়ে থাকতেন।

বেশিরভাগ সময় তিনি নিজের খাবার অন্যকে দিয়ে অনাহারে কাটাতেন। হাদিস শরিফে পাওয়া যায়, গরিব সাহাবিরা ক্ষুধার কষ্ট সইতে না পেরে পেটে পাথর বাঁধত, নবীজি (সা.) তাদের কষ্ট অনুভব করার জন্য না খেয়ে পেটে পাথর বেঁধে দিনের পর দিন মাসের পর মাস কাটিয়ে দিতেন।

রমজানে আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত না খেয়ে থাকি। দুপুরের পর থেকে ক্ষুধার মাত্রা বাড়তে থাকে। এক সময় মনে হয় আর যেন পারছি না। মাঝে মাঝে এমনও হয়, কাজকর্ম বাদ দিয়ে অপেক্ষা করতে হয় ইফতারের জন্য। আমাদের এ কষ্ট তখনই সার্থক হবে যখন ভাবব, আমাদের আশপাশে যারা না খেয়ে আছে তাদেরও ঠিক এমনই বা এর চেয়েও বেশি কষ্ট হচ্ছে। ওইসব ক্ষুধার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের মুখে দু’মুঠো খাবার নিশ্চিত করা একজন রোজাদারের কর্তব্য ও রমজানের অন্যতম শিক্ষা। আর এ জন্যই আল্লাহতায়ালা সামর্থ্যবানদের ওপর জাকাত, সদকাতুল ফিতরসহ দান-খয়রাত ফরজ করে দিয়েছেন।

আমরা যদি দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়তে না পারি, করোনাভাইরাসের এ দুঃসময়ে ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে না পারি, তাহলে ব্যক্তিগত পর্যায়ে যত বড় মুত্তাকিই হই না কেন, জাহান্নাম থেকে আমরা কেউ বাঁচতে পারব না। সূরা দাহারে আল্লাহ বলেন, “ফেরেশতারা জাহান্নামিদের জিজ্ঞেস করবে, ‘কেন তোমরা জাহান্নামি হলে?’ জাহান্নামিরা বলবে, ‘আমরা ধার্মিক ছিলাম না। আর ক্ষুধামুক্ত সমাজ গড়ার কর্মসূচি আমাদের অর্থ ব্যবস্থায় ছিল না।”

মনে রাখতে হবে, সারা দিন না খেয়ে থাকা, সারা রাত নামাজ পড়া অনেক সহজ, নিজের কষ্টার্জিত একটি পয়সা খোদার রাস্তায় অন্যের কল্যাণে বিলিয়ে দেয়া সত্যিই বড় কষ্টের। তো এ কষ্ট সয়ে আমরা যদি সঠিক রোজা করতে পারি এবং দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়ার কর্মসূচি নিতে পারি, আশা করা যায় এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার পরপরই অপরূপ জান্নাত আল্লাহ আমাদের দান করবেন।

লেখক : মুফাসসিরে কোরআন; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৯ মে ২০২০/মিআচৌ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.