সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৫-২২ ১৯:৪৪:৫৮
|| আরাফাত হোসেন ||
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আবারও এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। প্রতিবারের চাইতে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে বিরাজ করছে এবারের ঈদ। করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আতঙ্ক, লকডাউনের অনিশ্চিত সম্ভাবনার জীবন, সাথে দুর্যোগ আম্পানের প্রভাব;সবকিছু মিলিয়ে এটাই এই খুশির ঈদের আবহ । এবার ঈদকে সামনে রেখে ছিলো না কোনো উৎসবমুখর পরিস্থিতির ধারাবাহিকতা। বলা চলে, করোনার প্রভাবে পাল্টে গেছে স্থিরচিত্রও। প্রতিবারের ন্যয় এবার ছিলো না কোনো ইফতারের বাহারি আয়োজন, ইফতার মাহফিল, তারাবির নামাজ আদায়সহ ঈদের অন্যতম আকর্ষণ শপিংমলগুলোতেও নেই বেচাকেনার ধুম।
প্রিয়জনদের সাথে ঈদ করতেও এবার কোনো তাগিদ নেই মানুষের। অনেক আক্ষেপ, দুঃখ নিয়ে অডিও আর ভিডিওকলই এখন একমাত্র ভরসা। বাস, ট্রেন কিংবা ফেরীঘাটেও এবার ভিড় করেননি ঘরমুখী মানুষগুলো ।
করোনা প্রভাব বিদ্যমান থাকায় বন্ধ রয়েছে অনেক বড় বড় শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ,অসংখ্য ছোটখাট ব্যবসাসমূহ। যার কারণে দেশের শিল্প ব্যবসা অঙ্গনকেও অনেক লোকসান গুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি বেতন ভাতাদি ভোগ করলেও বিপাকে পড়েছেন প্রাইভেট কোম্পানিভুক্ত চাকুরিজীবীরা। আয়ের উৎসস্থল বন্ধ থাকায় বন্ধ রয়েছে তাদের বেতনভাতাদিও। তাই বিপুলসংখ্যক মানুষ এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে ঈদ পালন করছে। করোনার মৃত্যুভয়ের এক থমথমে পরিবেশ সবখানেই বিরাজ করছে । যার কারণে মানুষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সব ক্ষতি স্বীকার করেও ঘরবন্দি থাকছে।
করোনাকালিন এ পরিবেশে ধনী-গরিব যেনো একই শ্রেণিভুক্ত। ঈদের বেলায় গরিবের ভাগে যেমন অন্ন,বস্ত্র জুটার চিন্তা থাকতো, তা এখন ধনিক-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও করে। এবার নতুন কাপড় ছাড়া ঈদ করছেন ধনী-গরিব সকলেই। সর্বত্রই একই সাম্যতা বিরাজমান।
তবে এ সাম্যতা বেশিদিন বিদ্যমান থাকুক তা মোটেও কাম্য নয়। বরং করোনাকালিন সাবধানতা অবলম্বন করে ধনী গরিব নির্বিশেষে এক হউক এটাই প্রাপ্য। খুশির ঈদ খুশি আর নির্ভয়ে কাটুক, এটাই সকলের আশা।
লেখক: যুক্তরাজ্য প্রবাসী