Sylhet View 24 PRINT

এ ঋণ শোধ হবার নয়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৬-০১ ১৪:২০:০৬

এ ঋণ শোধ হবার নয়
:: ইসরাইল আলী সাদেক ::
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিনি। সিলেট-১ আসনের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। অনেক বড় মানুষ। অনেক গুণী মানুষ। তাঁর কাছে আমাদের মতো নার্সরা তো খুব ছোট মানুষ। এতো বড় মাপের মানুষের সান্নিধ্যে যাওয়া বা সান্নিধ্য পাওয়া আমাদের মতো নার্সিং কর্মকর্তারা চিন্তাই করতে পারি না। কিন্তু অল্পদিনেই আমাদের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সিলেটের নার্সদের এতো বেশি আপন করে নিয়েছেন যে, আমরা এখন তাকে আমাদের পরিবারেরই একজন মনেকরি। আমাদের দু:খ, কষ্ট আর প্রয়োজনের কথা তাকে মুখ ফুটে বলার প্রয়োজন হয় না। দূরে থেকেও তিনি তা অনুধাবন করতে পারেন।

বিশে^র বিভিন্ন দেশের সীমানা পেরিয়ে করোনা নামক মহামারি যখন আমাদের এই দেশে হানা দিল, তখন সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে নার্সরা স্বাভাবিকই কিছুটা ভীত ও আতঙ্কিত। এ সময়ে সিলেটের নার্সদের মাথার উপর ছায়া হয়ে দাঁড়ালেন মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নার্সিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনি সব উদ্যোগ নিলেন। ফোনে সাহস যুগালেন। বিপদে পাশে থাকার অভয় দিলেন। মন্ত্রী মহোদয়ের এই ভূমিকা উজ্জীবিত করে নার্সদের। সকল ভয় ভীতি আর শঙ্কা দূরে ঠেলে তারা নিয়োজিত হন মানবসেবায়। মন্ত্রীর পক্ষ থেকে নার্সদের জন্য পাঠানো হয় পিপিই সহ সবধরণের নিরাপত্তা সামগ্রী। মন্ত্রী মহোদয়ের এই আন্তরিকতাই হয়ে ওঠে আমাদের মতো নার্সদের বড় নিরাপত্তাবেষ্টনী। এরপর থেকে করোনা আক্রান্তদের সেবা দিতে দিতে ওসমানী ও শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের বহু নার্স আক্রান্ত হলেন। কিন্তু তাতে তাদের মনোবলে এক চিলতে চিড় ধরেনি। মাননীয় মন্ত্রীর নির্দেশে তারা চালিয়ে যান সেবা কাজ।

শুধু যে মন্ত্রী মহোদয় নার্সিং কর্মকর্তাদের জন্য করছেন, তা নয়। তাঁর সুযোগ্য সহধর্মিনী সমাজসেবী সেলিনা মোমেন ম্যাডামের কথা না বললে অবিচার হবে। আমাদের নার্সরা যখন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি হলেন, তখন নিয়মিত খোঁজ নিতে থাকেন ম্যাডাম। হাসপাতালে ভর্তি নার্সদের জন্য একাধিকবার পাঠান পুষ্টিকর খাবার ও ফলফলাদি। স্যার আর ম্যাডামের এই আন্তরিকতা সিলেটের নার্সিং কর্মকর্তাদের মনের মধ্যে লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে।

গত শুক্রবার যখন আমাদের সহকর্মী নার্সিং অফিসার রুহুল আমিন ভাই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান তখন সত্যিই আমরা অনেকটা ভেঙ্গে পড়ি। নিজেদের চোখের সামনে প্রিয় ভাইয়ের এভাবে চলে যাওয়া যেন আমরা কেউই মেনে নিতে পারছিলাম না। সেই মুহুর্তে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় ও সেলিনা মোমেন ম্যাডাম ফোনে আমাদের সাহস যোগান। সান্ত্বনা দেন। খোঁজ নেন রুহুল আমিন ভাইয়ের পরিবারের। আশ্বাস দেন তাঁর পরিবারের জন্য কিছু একটা করার।

মৃত্যুর একদিন পেরুতে না পেরুতেই স্যার ঘোষণা দিলেন রুহুল আমিন ভাইয়ের একমাত্র ছেলের পড়ালেখার দায়িত্ব নেওয়ার। একজন নার্স হিসেবে এরচেয়ে বড় পাওয়ার আর কি আছে। দেশে কতো নার্স মারা যান। কে কার খবর রাখে। কিন্তু আমাদের মন্ত্রী মহোদয় সত্যিই বড় মানবিক মানুষ। তাঁর তুলনা কেবলই তিনি। তাঁর এই ঋণ এক জনমে শোধ হবার নয়।

রুহুল আমিন ভাই দেখে যাও, তোমার পরিবার একা নয়। তোমার পরিবারের পাশে অভিভাবক হিসেবে, স্বজন হিসেবে ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছেন আমাদের শ্রদ্ধেয় স্যার, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.