আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

পেন্ডামিক চলাকালীন এবং পরবর্তীতে কি হবে আমাদের ভবিষ্যৎ?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৬-২৭ ০২:০৩:৫০

মিনার খান মুহিম :: করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে সারা বিশ্ব আজ নাজেহাল। বিশ্বের প্রত্যেক মানুষ আজ নিজের অস্তিত্ব বিলীনের দিকে ঝুঁকি নিয়েছে, সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। করোনার ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, ইন্ডাস্ট্রিগুলো বন্ধ থাকার কারণে অনেকেই তাদের চাকরি হারিয়েছে। ব্যাংক সেক্টর গুলো যেখানে ভালো একটা চাকরী বাজার ছিলো সেখানেও নাযেহাল অবস্থা, কোন কোন ব্যাংক এম্পলয়িদের বেতনের ১৫% কাটা শুরু করেছে।

এ অবস্থায় নতুন কোন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার চিন্তা করাটা অবাস্তব মনে হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির নিয়োগ ব্যবস্থা বন্ধ আছে এবং তা কতোদিন থাকবে বা এই অবস্থার অবসান ঘটবে কোথায়, তা কারো জানা নেই। দিন দিন বেকারত্ব থেমে নেই, আবার নেই কোন আলোর বাণী।

এই অবস্থায় অনেকের চাকরীর বয়সও শেষ হয়ে যাচ্ছে। একদিকে যেমন চাকরীর বয়স চলে যাচ্ছে অন্যদিকে এই ইয়ং জেনারেশন ডিপ্রেশনেও পরবে খুব অস্বাভাবিক নয়, এ থেকে বের হবার উপায় নেই। তাহলে কি এই প্রজন্ম ঝুঁকিতে পড়বে এই মহামারীতে। হয়তো বা হ্যা! অথবা কারো জন্য নতুন কিছু করা, নিজেকে নতুন বিশ্বে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি অথবা রাজনীতির এই অবস্থানকে নতুন এক মাত্রা তৈরী করে দেওয়া। নিজেকে আগের চেয়ে নতুন করে ভাবা, পেছনের গ্লানীকে মুছে ফেলা নিজেকে তৈরী করতে হবে নতুনের সাথে তাল মিলিয়ে।

শিক্ষিতদের একটা অংশ রাজনীতিতে যাবে এই জন্য- বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন যারা রাজনীতির সাথে জড়িত থাকে, পড়াশোনা শেষ হলে রাজনীতি না করে তাদের অনেকেই চাকরীর পড়াশোনার দিকে চলে যেতেন, অনেকের মাঝে আগের রাজনীতির ছবি হয়তো পাল্টেও যেতে পারে, আবার এক-দুই বছর পড়াশোনা করে চাকরীও হয়ে যায় অনেকের। কিন্তু বর্তমানে এই করোনা ভাইরাসের মহামারীর কারণে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ থাকায় অনেকের চাকরীর বয়স চলে যাবে। ফলে চাকরি না পেয়ে তারা আবার রাজনীতিতে আসতে পারে। জনগণ বিশ্বাস করে গণতন্ত্রের মহান দোহাই দিয়ে যে কেউ নেতৃত্বে আসতে পারে। কিন্তু অশিক্ষিত আর চরিত্রহীন কেউ যদি টাকা আর পেশীর জোরে নেতৃত্বে বসে যায় তার ফল আর যাই হোক শুভ হয় না। তাই জনগণ এখন আর রাজনৈতিক সেক্টরে অশিক্ষিতদের দেখতে চায় না।

চায় না কোনো নোংরা রাজনীতির পরিচর্যা। তারা শিক্ষিতদেরকেই রাজনৈতিক সেক্টরে দেখতে চায়। ফলে শিক্ষিতদের একটা অংশ আলোর প্রতীক হয়ে রাজনীতিতে আসবে। অন্যদিকে শিক্ষিতদের একটা অংশ উদ্যোক্তা হবে। কারণ বিশ্বে শিক্ষিত বেকারই বেশি। বাড়ছে শিক্ষার হার, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে মোকাবিলা করতে প্রধান অস্ত্র হচ্ছে জ্ঞান, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, স্মার্ট একটি কর্মপরিকল্পনা, সুস্থ মস্তিষ্কের ভাবনাই একমাত্র পৌঁছে দিতে পারে মূল লক্ষ্যে। চাকরি না পেয়ে দেশের অনেক জায়গায় এমনিতেই শিক্ষিতরা উদ্যোক্তা হতে ইচ্ছা প্রকাশ করছে, উদ্যোক্তা হতে যাচ্ছে এবং উদ্যোক্তা হচ্ছে। শিক্ষিত অনেক উদ্যোক্তা ইতোমধ্যে সফলও হয়েছে। করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে শিক্ষিতরা আরো বেশি উদ্যোক্তার দিকে ঝুঁকবে। কারণ চাকরির বয়স না থাকায় উচ্চ শিক্ষিত হয়ে তারা বেকার থাকবে না। শিক্ষিতদের কাছে পরিবার, সমাজ, দেশ, জাতি অনেককিছু প্রত্যাশা করে। তাদেরকে তাদের পরিবারের হাল ধরতে হবে। সে জন্য তারা কর্মসংস্থানের জন্য উদ্যোক্তার পথ বেছে নেবে।

ইতোমধ্যে অনলাইন প্লেটফর্ম একটা নতুন প্রজন্মের আশার আলো। আমরা দেখছি আমাদের ইউনিভার্সিটির অনেক ছোট ভাই, বোন অনেক অনলাইন পেইজের ইনভাইটেশন পাঠান দেখে ভালো লাগে অনেক, যে কিছু করতে চাই আমরা এই মনোভাবটা আমাদের কড়া নাড়ছে। তাই মন খারাপ করে বসে থেকে কোন লাভ নেই।

নিজেকে নতুন বিশ্বে নতুন একটা শিশু জন্মানোর মতো মনোভাব থাকতে হবে। পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে নতুন প্রজন্ম নতুন বিশ্বে পথ চলবে।

লেখক: অফিসার, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সিলেট।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন