আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কুরবানীর ঈদ, ত্যাগের শিক্ষা কি নিচ্ছি?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-২০ ১১:২১:০০

আলী ফজল মোহাম্মদ কাওছার :: ঈদ মানে খুশি। ঈদ মুসলিম উম্মাহর জন্য খুশির বার্তা বয়ে আনে। মুসলমানদের দুই ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় মুসলমানরা অনাবিল আনন্দে মেতে উঠে। কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা আমাদের কি শিক্ষা দেয়?

আমাদেরকে ত্যাগের শিক্ষা দেয়। ত্যাগের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জনের শিক্ষা দেয়। সারা বিশ্বজুড়ে পবিত্র ঈদুল আযহায় ধর্মপ্রাণ সামর্থ্যবান মুসলমানরা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কুরবানী দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন পশু জবাই করার মাধ্যমে তাদের কুরবানী আদায় করবেন। কুরবানীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর স্মৃতি বহন করে।

মহান আল্লাহ পাকের স্বপ্নের মাধ্যমে ইব্রাহিম আলাইহিস সালামকে উনার প্রিয় জিনিস কুরবানীর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি সর্বাধিক প্রিয় উনার পুত্র ইসমাইলকে মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কুরবানী দিতে চেয়েছিলেন। মহান আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কুরবানী দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এর মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা আল্লাহ পাকের খুব পছন্দ হয়েছে। এর জন্য আল্লাহ পাক এই স্মৃতি এখন পর্যন্ত জারি রেখেছেন যা অব্যাহত থাকবে।

যারা কুরবানী দেন কিংবা বছর পর বছর দিয়ে আসছেন আমরা কতটুকু ত্যাগের মানসিকতা রাখছি কিংবা কতটুকু কুরবানীর পরিপূর্ণভাবে আদায় করার চেষ্টা করছি। এই প্রশ্নটি রয়ে গেল। অনেক সময় দেখা যায় কুরবানীর ঈদ নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কার থেকে কার কুরবানীর পশু বড় হবে কার থেকে কার কুরবানীর পশু বেশি দাম দিয়ে কেনা হবে এনিয়ে যেন এক নিরব প্রতিযোগিতা। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না মহান আল্লাহ পাক আমাদের জবাইকৃত পশুর দাম কিংবা সাইজ দেখেন না তিনি আমাদের নিয়্যাত দেখেন।

কুরবানীর পশু জবাই করার সাথে আমরা কি আমাদের মনের পশুকে কি জবাই দিচ্ছি সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া জরুরী। অনেক সময় দেখা যায় পশু জবাই করে তা ফ্রিজে ভরে রাখা হয়। যেখানে বলা হয়েছে কুরবানীকৃত পশুর গোশত সমানভাগে তিনভাগে বন্টন করে এক অংশ নিজের জন্য রাখতে হবে, এক অংশ আত্মীয় স্বজনের মধ্যে বিলি করতে হবে, এক অংশ গরীব মিসকিনদের মধ্যে বিলি করতে হবে। এটা না করে যদি সব গোশত ফ্রিজে ভরে রাখা হয় তাহলে কি কুরবানীর হক আদায় হল? এর মাধ্যমে কি করে ত্যাগ স্বীকার করা হল কেউ কি বলতে পারবেন?

যারা কুরবানীর সামর্থ্য রাখেন আপনারা সারা বছর গোশত কিনে খাওয়ারও সামর্থ্যও রাখেন। অনেকে আছেন সারা বছরে একবার গোশত খেয়ে থাকেন যা শুধু মাত্র কুরবানীর ঈদে। তাই আসুন আমরা নির্দয় না হয়ে মানুষের প্রতি সহমর্মিতার হাত বাড়াই।

কুরবানী আমাদের যে শিক্ষা দেয় তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা করি। আমরা নামে মুসলমান না হয়ে প্রকৃত মুসলমান হওয়ার চেষ্টা করি। কুরবানী ঈদ থেকে শিক্ষা নিয়ে মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এর স্মৃতি থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রকৃত ত্যাগের শিক্ষা অর্জন করে মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করি।

লেখক: কলামিস্ট, সিলেট।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন