আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

দয়াল বাবা কেবলার কাবা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৯-০৯ ১৪:০৭:৪৪

ফারজানা ইসলাম লিনু :: শাহজালালের সফর সঙ্গীদের ৩৬০ আউলিয়ার একজন ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে বড়লেখায় এসেছিলেন। সেই সুফি সাধকের স্মৃতি বিজড়িত অতি পুরনো এক মোকাম ও দরগা আছে একেবারে আমাদের বাড়ির পাশে। দরগার নামানুসারে এই অঞ্চলের নাম দরগাবাজার।

কথিত আছে শিষ্যের ধর্ম প্রচারের অগ্রগতি দেখতে হজরত শাহজালাল (রঃ) স্বয়ং এই দুর্গম এলাকায় পা রেখেছিলেন সেই সাতশো বছর আগে।

আমার জন্মভূমি, শৈশব কৈশোরের ধুলিমাখা গ্রাম শাহজালালের পদস্পর্শে ধন্য এই মোকামে কখনো ওরস হতে দেখিনি। তবে দূর দুরান্ত থেকে মানুষ আসতো এই মাজারে শিরনি দিতে। হয়তো এখনো আসে।

মোকামের প্রবেশপথে প্রায় পরিত্যক্ত এক পুকুর।

জলে কুমির ডাঙায় বাঘ না হলেও মোকামের গহীন জঙ্গলের ভেতর টলা, বন বিড়াল, শেয়াল বেজিদের অভয়ারণ্য। অমাবস্যার অন্ধকার রাতে শেয়ালের হুঁক্কাহুয়ায় কান ঝালাপালা। শুনেছি একসময় নাকি বাঘও ছিলো এই বনে। গাছের পাতার চেয়ে ডাল ভর্তি কানা বাদুড়।

মজা পুকুরে শাপলা,শ্বেত পদ্ম আর হিংগাইর লতার ভীড়ে দানব আকৃতির গজার মাছের ভারিক্কি বিচরণ। ভরদুপুরে নাগরাজ,বুড়া, পাতালত, জিনিলত সাপ পদ্ম পাতার উপর বেড়ি দিয়ে শুয়ে রোদ পোহায়।

মোকাম আর আমাদের পাঠশালা মুখোমুখি। শিশুরা স্বভাবতঃ কৌতুহলী। মাটির উচু দেয়াল টপকে লুটকি বনের ঝুপ ভেঙে মোকামের পুকুরের গজার মাছ দেখা ছিলো স্কুলের শিশুদের নিত্যকার রুটিন।

তাছাড়া প্রায় প্রতিদিন পূন্যার্থীরা মানতের শিরনি নিয়ে মাজারে আসেন। সালাম খানায় মোমবাতি দিয়ে তাদের মাজার পুজার শুরু। স্কুলের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাদা ভাত, মুরগী দিয়ে আলু কিংবা কদুর ঝোল, ক্ষীর ও তুষা শিরনি কলাপাতায় মেখে খেয়ে শিশুরা আবার খেলার মাঠে নয়তো ক্লাসে ফিরে আসে।

পুকুরে মাছেদের শিরনি হিসেবে দুই টাকার মুরি খই ছিটিয়ে দেন ভক্তরা।
খাবারের সন্ধানে লম্বা ঘাই দিয়ে মাছেরা উঠে আসে।মুরি মুখে দিয়ে পানসে মুখে আবার পানির নিচে আউড়ি দিয়ে আত্মগোপন করে।

হতাশ পূণ্যার্থীরা হাপুশ নয়নে চোখের জল ফেলে ডাকতে থাকেন,আও, আও মোকামের বাবা হকল মুখ তোলা দিয়া আরেক ফুটা পানি খাও।
মাজার তপস্যার অংশ হিসেবে ভক্তরা মোকামের মাটিতে সেজদায় পড়ে গড়াগড়ি করেন।

মাছের অখাদ্য মুরি, খই দিলে বাবা হকলে ফের মুখ তুলেনা। পাঁচ টাকার চান্দা, চিংড়ি ও গুড়া মাছ দিলে রাক্ষুসে মাছেদের মন ভরে। বিমলানন্দে লেজ দুলিয়ে খাবার ভক্ষণ করেন।

তৃপ্ত পূর্ণ্যার্থী ও মানতকারীদের মুখে তখন রাজ্য জয়ের হাসি, বাবা হকলে মুখ তুলিয়া চাইছইন।

গজার মাছেদের অর্ঘ্য দিয়ে আসলেই কারো মনোষ্কামনা পূর্ণ হয়েছে কিনা জানিনা তবে মাছেদের দেয়া মুরি, বিস্কিট ও ছোট মাছের পচা গন্ধে দূষিত হতো পুকুরের স্বচ্ছ পানি।

সেই পানিও আবার হাতের আজলায় ভরে খাওয়া হয় রোগ মুক্তির আশায়। বোতলে ভরেও কিছু নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ীতে। দুরারোগ্য ব্যাধি হলে ওষুধের বদলে দুই চুমুক খাইয়ে দেয়া হবে মুমুর্ষ রোগীকে।

কথায় বলে মক্কার মানুষ হজ্জ পায়না। আশপাশের গ্রামের মানুষের মোকাম নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি ছিলো না, তবে অনতি দূরের কচুকাটার মোকামের উপর গ্রামবাসীর আবার অগাধ ভরসা।

বহু বছর পর আমাদের ধনিয়া চাচা এই মোকামের সংস্কারে হাত দেন। জঙ্গল সাফ করে উচু মাটির ঢিবি কেটে লম্বা শান বাধানো ঘাট ও বসার বেঞ্চ করা হয়। মোকাম ও সংলগ্ন প্রাচীন ইদগাহেরও দৃষ্টিনন্দন মেরামত করা হয়।

ধনিয়া চাচা খুব ভালো কবিতা লিখতেন। শাহজালালের উদ্দেশ্যে চার লাইনের শ্রুতিমধুর এক কবিতা লিখে খোদাই করে লাগিয়ে দেন মাজারের শতবর্ষী আম গাছের গায়ে। প্রথম দুই লাইন মনে পড়লেও পুরো কবিতাটা মনে আসছেনা এখন, " লভিয়াছো অশেষ পূণ্য ইসলামের সেবায়, ভ্রমিয়াছো কতনা দিবানিশি কত না জায়গায়।
আরবে জন্মিয়া শেষে......

যাই হউক, মোকাম নিয়ে অনেক ভুতুড়ে ও আধ্যাত্মিক গল্প প্রচলিত আছে লোকের মুখে মুখে। প্রতি বৃহস্পতিবারে গজার মাছেরা সুড়ঙ্গপথে শাহজালালের মাজার জিয়ারতে যায়, পূণ্য সেরে আবার শনিবারে ফিরে আসে দরগাবাজারের মোকামে।
পুকুরের এক কোনায় সোনার শিং মাগুরও আছে। পরম সৌভাগ্যবানরা কস্মিনকালে এই সোনার শিং মাগুরের সাক্ষাত পেয়েছেন, সে অনেক আগের লোকমুখে শুনা কাহিনি।

বিখ্যাত এই মাজারের অতি নিকটে শৈশব কৈশোরের বড় অংশ কেটেছে আমার। কিন্তু মোকামের ত্রিসীমানা পার হতে হয় চোখ বন্ধ করে। মনে শংকা দৈত্যাকৃতির গজার মাছের পেটে আমার ক্ষীনকায় শরীর হাড়গোড় সুদ্ধা আস্ত জায়গা হয়ে যাবে অবলীলায়।

রাক্ষুসে গজার মাছের প্রতি আশৈশবের ভয় আমার আজও কাটেনি।

পাঠশালার সহপাঠিরা বলতো, খবরদার মোকামের মাছ নিয়ে কু কথা বলবে না। অলি-আউলিয়ারা মনের কথা বুঝতে পারেন, তোমার অমঙ্গল হবে, পরিক্ষায় ফেল করবে।

পরিবারের যুক্তিবাদী বয়োজ্যেষ্ঠদের মাজার অনীহার কারণে মাজার ভক্তি বা মাজার প্রীতি কখনো আমাদের ছিলো না। তাছাড়া সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর লালসালু উপন্যাসও কিশোর বয়সে মাজারের প্রতি অনাসক্তির এক বড় নিয়ামক।

এখন সাতাশ বছরের বেশি সময় থেকে সিলেটে আছি। কখনোই শখ করে কিংবা মনোবাঞ্ছা পূরণে শাহজালাল, শাহপরানের কাছে যাইনি।
শাহপরানের মাজারে একবার গিয়েছিলাম তাও আরেকজনের অনুরোধে।

শাহজালালের ওরসকে কেন্দ্র করে দেশের প্রত্যন্ত জেলা এমনকি পাশের দেশ ভারত থেকেও আত্মীয়, পরিচিত, বন্ধুবান্ধব অনেকেই আসেন। ওরস শেষে এক আধ দিনের আতিথ্যগ্রহণ করেন আমাদের বাসায়।

একবার এক বন্ধু পরিবার ওরসের সময় নিতান্ত ঠেকায় পড়ে যেচে আতিথ্য নিতে চাইলেন। ওরসে আসার জন্য হোটেল বুকিং দিয়েছিলেন চারমাস আগে। কি এক কারণে হোটেলের বুকিং কনফার্ম হয়নি।

এইদিকে বেশ কয়েকটা মানত উপলক্ষ করে ওরসে আসার বাকি প্রস্তুতি সম্পন্ন।

হোটেল বিভ্রাটের কারণে এইবার ওরসে আসতে না পারলে অমঙ্গল হবে নির্ঘাত।

ভদ্রমহিলা আমাদের ভালো বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী। ওরসের উসিলায় আমাদের সাথে দু'দিন থাকবেন এ তো পরম আনন্দের সংবাদ।

নির্ধারিত দিনে তিন চারটা শিশু সহ ১৬/১৭ জনের

বিরাট এক লট বহর নিয়ে হাজির। একটা হাইয়েসে গাদাগাদি করে দীর্ঘ আঠারো ঘন্টার লম্বা জার্নি করেছেন। অতিথিরা ভীষণ কাহিল।
একটু এগিয়ে তাদের স্বাগত জানাতে গিয়ে দেখি ছাগলের ম্যাঁয় ম্যাঁয় ডাক। ভ্রম ভেবে এদিক ওদিক তাকাই।
আমার ভ্রম মিথ্যা প্রমাণিত হয়, জলজ্যান্ত দুটো ছাগল নামানো হচ্ছে গাড়ি থেকে। অবলা প্রাণীর গাড়ি চড়ার শখ ভোতা হয়েছে জন্মের মতো। ভীত সন্ত্রস্ত উদভ্রান্ত চোখ, উষ্কখুষ্ক জোড়া খাসি পাড়া মাথায় তুলে চেঁচাচ্ছে। আশপাশের বাসার উৎসুক জনতার জিজ্ঞাসু দৃষ্টি, ব্যাপার খানা কি?

নিজেই জানিনা আর তাদেরকে কি বলবো।

গাড়ি থেকে একে একে চাল ডাল, সবজি মশল্লাপাতি, ঠ্যাং বাঁধা মুরগি নামানো হচ্ছে। আমি কিছুটা দ্বিধায়,অতিথিরা কি আমার বাসায় পিকনিক করতে এসেছে নাকি? নিজেদের খাবার নিজেরা রান্নাবান্না করে খাবেন ভেবে লজ্জায় রীতিমতো আড়ষ্ট।

কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাপারটা খোলাসা হলো। কান লম্বা হৃষ্টপুষ্ট খাসি জোড়া, লাল মোরগা ও চাল ডাল মাজারের ডেক্সিতে মুক্ত হস্তে দান করা হবে ওরস উপলক্ষে।

অতিথিদের মধ্যমণি সৌম্যদর্শন শুশ্রুমন্ডিত এক ভদ্রলোককে নিয়ে সবার একটু বেশি ব্যস্ততা।
ছোট বড় সকলেই বাবা সম্বোধন করছেন। আমাদের বন্ধুর পিতৃবিয়োগ হয়েছে অনেক আগে, তাহলে ইনি কে?

অতিথি সেবার ব্যস্ততার ফাঁকে বন্ধু মহিলা আমাকে ডেকে বললেন, ভাবি আপনার সৌভাগ্য 'বাবা' যেচে আপনার আতিথ্য গ্রহন করেছেন।

জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমি মহিলার দিকে তাকিয়ে 'বাবার' গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করছি।

বাবার পরিচয় এইবার পরিষ্কার হলো কিছুটা।

বিখ্যাত এই পীরবাবার মুরিদান আমার বন্ধু পরিবার। বাবারও হোটেল বিভ্রাট হয়েছে কোন কারণে। তাই যাত্রাপথে বাবাকে কতিপয় ভক্ত আশেকান সহ ধরে আনা হয়েছে আমাদের বাসায়।

নির্ধারিত পাঁচ ছয় জন লোকের জায়গায় এতো অচেনা লোক একসাথে দেখে আমি নিজেও কিছুটা বিব্রত। কিশোরী কন্যা জোড়াকে পাঠিয়ে দিয়েছি বোনের বাসায়।

এইদিকে আমাদের খোলা ড্রয়িং রুমে আগরবাতি জ্বালিয়ে আব্বাজান পীরকে ঘিরে শুরু হয়েছে হালকা জিকির। কামেল পীর আব্বাজান চোখ বন্ধ করে সোফায় বসে ধ্যানে করছেন। উচ্চশিক্ষিত এমনকি পেশাগত ক্ষেত্রে উচ্চপদে আসীন প্রতিষ্ঠিত মুরিদানরা পীরের পায়ের কাছে বসা।

অতিথি সেবার ফাঁকে ট্যারা চোখে পীর সাহেবের ভেলকি ভালকি দেখছি আমি। আসার পথে জুম্মার নামাজ মিস হয়েছে। ড্রয়িংরুমে জামাতে নামাজ পড়লেন সবাই। অথচ চাইলেই রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে কোন একটা মসজিদে জুম্মা পড়তে পারতেন। পীর সাহেবের স্ত্রী ছাড়া মহিলাদের কেউই ক্বাজা কিংবা কসর নামাজ আদায় করলেন না।

পুরুষরা সাদা লুঙ্গী, সাদা পাঞ্জাবি ও মাথায় লাল গামছা বেঁধে তৈরি। খালি পায়ে এবার সবাই মিলে শাহজালালের দরগা তওয়াফে যাবেন।

"দয়াল বাবা কেবলা কাবা আয়নার কারিগর"।

মাজারের ডেক্সিতে দান দক্ষিণা ও ইবাদত বন্দেগীতে আধারাত্রি শেষ। ভীড়ের ঠেলা ধাক্কায় পড়ে বসার জায়গা না পেয়ে মহিলারা একসময় বাসায় ফিরে আসেন। ফজরের সময় আবার যাবেন আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে।

পীর সাহেবের স্ত্রী সকলের আম্মাজান। মাজারের পূণ্যস্থান তাদের ভাষায় হেরেম শরিফ ছেড়ে আম্মাজান আসতে নারাজ,তাই রেখে এসেছেন স্টার পেসিফিক হোটেলে পরিচিত একজনের জিম্মায়।

সকালবেলা নতুন কিছু ভক্ত আশেকানদের নিয়ে পীর বাবা ঘরে ফিরে আসেন। কার আগে কে বাবার হাত পা টিপে দিবেন এই নিয়ে বিস্তর প্রতিযোগিতা। বাসার নিচে ভক্তদের ভীড়। এক রকম জোর করে আব্বাজান পীরকে তারা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন সিলেটের বাইরের কোন এক খানকা শরীফে। গুণমুগ্ধ ভক্তদের সেবা নিতে সেখানে পীর সাহেব থাকবেন কয়েকদিন।

আমার বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও তার আইনজীবী বোন আমাকে আবার বাবার দোয়া নিতে অনুরোধ করেন।

এইবার তাদের অনুরোধের জবাব দিতেই হলো। মুখের কাঠিন্য কোনমতে গোপন করে বললাম, বেগানা বাবাদের দোয়া নিয়ে পাপের পাল্লা ভারি করতে চাইনা।

আতিথেয়তায় কমতি না হলেও গত দুই দিনে একবারও পীর সাহেবের সামনে পড়িনি, আর দোয়াতো দূরে থাক। তাই আব্বাজান পীরেরও আমার মনোভাব বুঝতে বাকি থাকলো না।

পীরের প্রস্থানের পর মাজার ও পীর আউলিয়াদের পক্ষে নাতিদীর্ঘ এক বয়ান দিলেন আমার বন্ধু।

একজন ধার্মিক মহিলা হয়ে এতোদিন থেকে কেন আমি কোন পীরের শিষ্যত্ব গ্রহন করিনি এই নিয়ে মৃদু ভৎর্সনাও করলেন।

স্বপ্নে পাওয়া আধ্যাত্মিকতা, গভীর সাধনা বা পীর তত্ত্ব নিয়ে আমি আদতে কোন তর্কে না জড়ালেও বন্ধুর উচ্চশিক্ষিত পুত্রকে একবার জিজ্ঞেস করলাম, পীর পুজা ও মাজার পুজা বিদায়াত নয় কি?
তার জ্ঞানগর্ভ বয়ানে আমি লা-জবাব। ছেড়ে দেয় মা কেঁদে বাঁচি। কোন মতে রণে ভঙ্গ দিয়ে তর্কের মাঝপথে অতিথি সেবায় মনোনিবেশ করি।

পূর্বে আমার ধারনা ছিলো অশিক্ষিত মুর্খরাই ভ্রান্ত আকিদা আঁকড়ে ধরে মাজার পুজা করে। কিন্তু না, শিক্ষিত এক শ্রেণির মানুষও ধর্মের ভ্রান্ত ছায়ায় প্রতারিত হয় ও অন্যদের প্রতারিত হতে উৎসাহিত করে।

নিত্যনতুন মানত পূরণের জন্য আমার সেই বন্ধু নিয়ম করে প্রতিবার ওরসে আসেন। ওরস শেষে মাজারের রঙিলা সুতলি হাতের কব্জিতে ও গলায় পরে যথারীতি আমাদের সাথে দেখা করেন।

তবরুকের ভাগ দিয়ে পূন্যকাজে শরীক হওয়ার অনুরোধ করেন আমাকে।

বুজরুকি ভং ছং ছেড়ে একমাত্র আল্লাহর পথে ফিরে আসার পালটা অনুরোধ করি আমি। বেচারি খানিকটা মনঃক্ষুণ্ণ হলেও হাসিমুখে বলেন, ভাবি একদিন বুঝবেন।

যার যার ভাবে লাভ।

সারা বছর ফরজ পালন না করে ওরসে এসে কল্লা আছড়ে ইহকাল ও পরকালের পূণ্যার্জনের নির্দেশনা আল্লাহর পাক কালামে লিখা নাই।

ভ্রান্ত আকিদা ত্যাগ করে পাক কালামের নির্দেশিত পথে চলার তওফিক আল্লাহ আমাদের সবাইকে দান করুন।

নির্বোধের মতো হেড়ে গলায় তর্ক করে স্রষ্টাকে পাওয়ার বদলে হারানোর সম্ভাবনাই বেশি।

ফারজানা ইসলাম লিনু : শিক্ষিকা ও গল্পাকার

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন