Sylhet View 24 PRINT

করোনাকে অবহেলা নয়, সচেতনতা জরুরী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-১২-৩০ ০১:৫৩:৩৮

আলী ফজল মোহাম্মদ কাওছার :: করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বের এক আতংকের নাম। পৃথিবীর সব শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলি পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কাছে অসহায়। এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের টিকা পর্যন্ত আবিস্কৃত হয়নি। যদিও কিছু দেশ দাবি করেছে আবিস্কারের। অনেকে করোনা রোগীর শরীরে প্রয়োগ করেছিলেন সেই টিকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই টিকার কার্যকারীতা প্রমাণিত হয়নি। চীন থেকে সক্রমিত হওয়া এই ভাইরাস সমগ্র পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
চীনের দাবী অনুযায়ী উহান শহরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি জরিপে সম্প্রতি আভাস দেয়া হয়েছে যে চীনের উহান শহরে হয়তো গত বছরের আগস্ট মাসেই করোনাভাইরাস দেখা দিয়েছিল। তবে শুধু চীনই যে ওই জরিপটি অবিশ্বাস্য রকমের হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেয়, তাই নয় - কিছু নিরপেক্ষ বৈজ্ঞানিকও এই জরিপের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
২৯ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত বিশ্বের ১৮৮টি দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮,১১,৯৩,৯৯৫ জন, সুস্থ হয়েছেন ৪,৫৯,১৭,২৫৮ জন, মৃত্যু বরণ করেছেন ১৭,৭২,৩২৫ জন। বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৫,১০,০৮০ জন, সুস্থ হয়েছেন ৪,৫৩,৩১৮ জন, মৃত্যু বরণ করেছেন ৭,৪৭৯ জন।

করোনা ভাইরাসে কারণে সারা বিশ্বের বিভিন্ন শহরে লকডাউন দেওয়া হয় মানুষ ছিল ঘরবন্দি।আমাদের বাংলাদেশেও ছিল লকডাউন। কয়েক মাস থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহ বাংলাদেশে লকডাউন তুলে নেওয়া হয়েছে। মানুষের মধ্যে এক ধরণের ঘা ছাড়া ভাব দেখা যায়। করোনা নিয়ে যেন আগের মতো কোন দুশ্চিন্তা নেই। রাস্তাঘাট, শপিং সেন্টার, বাজারগুলিতে মানুষের কোলাহল ভিড় বেড়েই চলেছে। আগের মতো সচেতনতা নেই। শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ এখন আর মাস্ক ব্যবহার করেননা। সাবান দিয়ে হাত ধোয়া কিংবা স্যানিটাইজারের ব্যবহার নেই বললে চলে। লকডাউন সময় ফার্মেসীগুলিতে মাস্ক, স্যানিটাইজার, জীবানুনাশক ব্যবহার্য জিনিসের সংকট দেখা দিয়েছিল। এখন এই সংকট নেই। কারণ সাধারণ মানুষের এই জিনিসগুলির কোন কদর নেই।

আমাদের মধ্যে সচেতনতার বড়ই অভাব।মাঝে কয়েক মাস একে অপরের সাথে সাক্ষাতে দুরত্ব বজায় রাখতো কোলাকোলি কিংবা হাত মেলাতো না। কিন্তু এখন প্রায় মানুষ একে অপরের সাথে হাত মেলানো, কোলাকোলি করে যাচ্ছে। আবার আগের মতো খেলাধুলা, জনাসমাগম বেড়ে গেছে। বিয়ে অনুষ্ঠানগুলিতে আগের মত লোকজনের উপস্থিতি বেড়ে চলেছে। এতে কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। আমাদের মধ্যে করোনাকে নিয়ে অবহেলার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেজ্ঞদের মতে শীতের মৌসুমে করোনার ভাইরাসের সক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শীত শুরু হওয়ার সাথে করোনায় সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অনেক শহরে লকডাউনের পথ বেছে নিয়েছে। আমাদের দেশে শীত মৌসুম এখন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে। করোনাকে নিয়ে আমাদের অবহেলা কিংবা আমাদের অসচেতনতা আমাদেরকে বিরাট ক্ষতির মুখে ফেলে দিতে পারে।

যেখানে বিশ্বের শক্তিশালী উন্নত দেশগুলি হিমশিম খাচ্ছে সেখানে আমাদের মতো দেশের মানুষের খামখেয়ালীপনা আমাদেরকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিতে পারে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে করোনা ভাইরাস নিজে থেকে আপনার ঘরে আসবেনা। আপনি বাইরে থেকে বয়ে নিয়ে আসবেন। নিজে শুধু আক্রান্ত কিংবা বিপদে পড়বেননা। পরিবার পরিজন আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।নিজের ভুলের জন্য পরিবারের অন্য সদস্যদের বিপদের ফেলার অধিকার আপনার নেই। কয়েক মাসের লকডাউনের কারণে বেশীরভাগ মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।অনেকে চাকরী হারিয়েছেন, ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবার গুলি অনাহারে, অর্ধহারে দিনযাপন করেছেন। সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মানুষ নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন। আবার যদি করোনা ভাইরাস ব্যপকভাবে আঘাত হানে তাহলে কি হবে একবার ভেবে দেখেছেন।

তাই আসুন আমরা করোনাকে অবহেলা না করে সচেতন হই। অন্যকে সচেতন হতে উৎসাহিত করি। বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করি। প্রয়োজনে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করি। জনসমাগম, খেলাধুলা এড়িয়ে চলি। কারো সাথে সাক্ষাতে দুরত্ব বজায় রাখি। ঘরে ফিরে জীবানুনাশক দিয়ে হাত মুখ পরিস্কার করি। আমাদের সচেতনতা দিতে পারে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি।

লেখক: চাকুরীজীবি, সিলেট।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.