Sylhet View 24 PRINT

চাল আত্মসাৎ: অপসারণ হতে পারেন পূর্ব পাগলার চেয়ারম্যান

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৪-২২ ১৮:১৩:৪১

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পূর্ব পাগলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ভিজিডি’র চাল আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান, তার সহযোগি ইউপি সদস্য রইছ উদ্দিন ও সচিব মো. শামীম আহমদের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবরে চিঠি পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। চলতি মাসের ১৭ তারিখে স্বাক্ষতি চিঠিতে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান জেলা প্রশাসক।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পূর্ব পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ভিজিডি আত্মসাতের অভিযোগে গঠিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করেন। তদন্ত কমিটি সরেজমিনে অভিযোগের সত্যতা পায়। তদন্তপূর্বক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন মল্লিকপুরস্থ এলএসডি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে ৩০ কেজি ওজনের ২২৮ বস্তা করে ৬.৮৪ মেট্রিক টন চাল প্রতিমাসের হিসাবে ৩ মাসে মোট ৬৮৪ বস্তায় মোট ২০.৫২ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করেন। এসব বস্তাবন্দি চাল সরকারি বরাদ্দের নির্দিষ্ট ৩০ কেজির বস্তায় থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তা ছিলো ৫০ কেজির মোট ১৩৬ টি বস্তায়।

গণনায় দেখা যায়, ৪৫৬টি ৩০ কেজির বস্তা ও ১৩৬টি ৫০ কেজির বস্তা এবং ৪০ কেজির ভাঙা একটি বস্তা জব্দ করা হয়। যা উত্তোলনকৃত চালের সাথে গড়মিল লক্ষণীয়। এই চাল ওই বছর ৩ মাসে ইউনিয়নের উপকারভোগী সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা। অভিযোগ বিবরণী প্রাপ্ত বিশ্লেষণীতে দেখা যায়, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য রইছ মিয়া মিলে ৩৯ এবং ৫১নং কার্ডধারী ব্যক্তির যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও চাল বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। এই দুই উপকারভোগীদের মধ্যে একজন মৃত ও অপরজন প্রবাসী হওয়া সত্ত্বেও কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষতমার অপব্যবহার করে ইউপি সচিব শামীম আহমদ চাল বিতরণে সহযোগিতা করেছেন।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, সরকারি সম্পদের অপচয় করে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগিরা এই চাল নিজে ভোগ করছেন কিংবা নিজের লোকদের ভোগ করতে সহায়তা করেছিলেন। যা তদন্ত কমিটি সরেজমিন প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির এই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার আইন (২০০৯) অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এদিকে, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারায় অসদাচরণ বা ক্ষতমার অপব্যবহার দোষে দোষী হওয়া বা পরিষদের কোনো অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি সাধন বা উহার আত্মসাতের অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী হলে অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধি স্বীয় পদ থেকে অপসারণ হবেন মর্মে আইন থাকায় চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন ও ইউপি সদস্য রইচ উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

প্রতিবেদনের সত্যতা স্বীকার করে সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এমরান হোসেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

অভিযুক্তদের দায়িত্ব থেকে অপসারণের ব্যপারে তিনি বলেন, ‘তদন্ত সাপেক্ষ মন্ত্রণালয়ই বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২২ এপ্রিল ২০১৯/এসএন/আরআই-কে

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.