সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-১২ ২২:৫২:২০
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: ৫ দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত ৮টায় সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৯০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার পানি কুল উপচে দ্রুত প্রত্যন্ত এলাকায় ঢুকছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরা।
এদিকে, পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে জেলার ৩ উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। বন্যা আক্রান্ত ৮ উপজেলায় কয়েক লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এই উপজেলাগুলোর প্রায় ২০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৫০ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাহাড়ীঢল ও টানা বৃষ্টিতে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, ছাতক, দুক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদরের নিম্নাঞ্চলের মানুষ এমন দুর্ভোগে পড়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ওই সড়কের আনোয়ারপুর,শক্তিয়ারখলা, লালপুর, চালবন্ধ এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে পানি ওঠেছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়ন, ফতেহপুর, সলুকাবাদ ও বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এই চার ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সমীর বিশ্বাস জানান, উপজেলার রঙ্গারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাতগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় এবং ফতেপুরের হাজী মজিদ উল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কিছু বন্যার্তরা ওখানে আশ্রয়ও নিয়েছেন। অন্যান্য এলাকার পানিবন্দি মানুষের জন্য বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর, সুরমা, ভোগলা, বাংলাবাজার, নরসিংহপুর এবং দোয়ারা সদর ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। দোয়ারাবাজার-ছাতক উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কের বিভিন্নস্থান ডুবে যাওয়ায় এই সড়ক দিয়ে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কের মাঝেরগাঁও, মংলারগাঁও ও নৈনগাঁও এলাকায় হাটু থেকে কোমর সমান পানি।
জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এই উপজেলার সুনামগঞ্জ-সাচনা সড়কের নিয়ামতপুর, ইচ্ছারচর, বেরাজালী, সেলমস্তপুর ও কলাইয়া অংশে হাটু থেকে কোমর সমান পানি। এই উপজেলার আরেক সড়ক সুনামগঞ্জ-জয়নগর-জামালগঞ্জ সড়কের জয়নগর পার্শ্ববর্তী অংশে, আ¤্রয়িা-রূপাবলি এবং ধনপুর অংশে পানি ওঠেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক জানান, সুরমা নদীর পানি রাত ৮ টায় বিপদ সীমার ৯০ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃষ্টি এবং পাহাড়ী ঢল অব্যাহত থাকায় দ্রæত পানি বাড়ছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেছেন, জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের স্কুলে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১২ জুলাই ২০১৯/এসএনএ/পিডি