আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সুনামগঞ্জে ধান সংগ্রহ অভিযান, নির্ধারিত সময়ে পূরণ হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৮-২০ ১৫:২২:০১

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জ জেলার হাওরের কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। কৃষকদের তালিকা চূড়ান্ত করতে বিলম্ব, রাজনৈতিক প্রভাবসহ নানা কারণে যথাসময়ে তালিকা চূড়ান্ত করতে না পারায় ধান সংগ্রহ অভিযান বিলম্বিত হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তাছাড়া কৃষকদের কাছে ধান না থাকায় দালাল-ফড়িয়ারা কৃষকের কার্ড ব্যবহার করে ধান দেওয়ার কারণেও বিলম্বিত হচ্ছে প্রক্রিয়া। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় জানিয়েছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৯ হাজার ৪৪৪ মেট্রিক টন ধান সংগৃহিত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে বরাদ্দের ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত দুই দফা ১৭ হাজার ৩৫৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। আগামী ৩১ আগস্ট সংগ্রহ অভিযান শেষ হওয়ার কথা। সূত্র জানায়, নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ সম্ভব নয়। তাই সময় বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টরা মন্ত্রণালয়কে চিঠি লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ধান সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে যথাসময়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবেনা বলে আশঙ্কা করছেন কৃষক নেতারা। এদিকে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন গত মাসে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনে চালের আগে ধানকাটার সময়ই ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা মাঠে গিয়ে নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। খাদ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, সুনামগঞ্জ সদরের মল্লিকপুরে ২ হাজার ৯৮৬ মে.টন, দোয়ারাবাজারে ১ হাজার ১৩ মে.টন, ছাতকে ১ হাজার ১৪৪ মে. টন, জগন্নাথপুরে ৯০৩ মে.টন, রাণীগঞ্জে ৭০০ মে.টন, দিরাইয়ে ২ হাজার ২৩৭ মে.টন, ঘুঙ্গিয়ারগাঁওয়ে ১ হাজার ৭০১ মে.টন, ধর্মপাশায় ১ হাজার ২০২ মে.টন, মধ্যনগরে ১ হাজার ২৫৭ মে.টন, সাচনায় ১ হাজার ৯০৭ মে.টন, তাহিরপুরে ১ হাজার ৪১৫ মে.টন এবং বিশ্বম্ভরপুরে ৮৮৮ মে.টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিš‘ কোনো খাদ্যগুদামেই বরাদ্দের অর্ধেকের বেশি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।


হালুয়ারগাঁও গ্রামের কৃষক রইসুল ইসলাম বলেন, লটারির কারণে অনেক কৃষক বঞ্চিত হয়েছেন। তালিকা চূড়ান্ত করতেও অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে। তাই্ ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেক কৃষক ধান দিতে পারেননি। তিনি বলেন, এখন বড় কৃষক ছাড়া আধিভাগা ও প্রান্তিক কৃষকের কাছে ধান নাই। তাদের কার্ড নিয়ে ধান ব্যবসায়ী ফড়িয়া ও দালালরাই এখন গুদামে ধান দিচ্ছে।

উমেদশ্রী গ্রামের কৃষক মাহমুদ আলী বলেন, পয়লা মনে করছিলাম সরকারকে ধান দিতা পারমু। চেষ্টামেষ্টা কইরাও তালিকাত নাম উঠাইতাম পারছিনা। এখন আর উগারো ধান নাই। ব্যবসায়ীরা ধান কিইন্যা নিছে, কৃষকের কার্ডও নিছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া মোস্তফা বলেন, নানা প্রক্রিয়ার কারণে প্রথমে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত আমরা অর্ধেকের বেশি ধান সংগ্রহ করেছি। নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধানসংগ্রহ সম্ভব হবে না। তবে সময় বাড়ানোর জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ডিসি মহোদয় সময় বাড়ানোর জন্য শীঘ্রই মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখবেন।

কৃষক নেতা অমরচাঁন দাস বলেন, বৈশাখ শেষ হওয়ার সাথে সাথে ধানসংগ্রহ অভিযান শুরু করা গেলে কৃষক উপকৃত হতেন।কিন্তু এখন কৃষকের কাছে ধান নাই। তাই দালাল-ফড়িয়ারাই কৃষকের নামে কার্ড নিয়ে গুদামে ধান দিচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আমি ডিসি সম্মেলনে প্রস্তাব দিয়েছি চালের আগে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য। প্রয়োজনে মওসুমে মাঠে গিয়ে বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। তাহলে প্রকৃত কৃষকরা সহজে ধান দিতে পারবেন এবং তারা লাভবান হতে পারবেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ আগস্ট ২০১৯/শহীদনুর/মিআচ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন

সাম্প্রতিক সুনামগঞ্জ খবর

  •   জগন্নাথপুরের মোশাহিদের স্বপ্ন ঝড়ল ফ্রান্সের সড়কে
  •   তাহিরপুরে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
  •   দিরাইয়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
  •   দক্ষিণ সুনামগঞ্জে এসএসসি ১৪ ব্যাচের মিলনমেলা
  •   দোয়ারাবাজারে ৩শ’ টাকার জন্য সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু, আটক ২
  •   সুনামগঞ্জে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
  •   দক্ষিণ সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট'র উদ্বোধন করলেন পরিকল্পনামন্ত্রী
  •   ছাতকে ভাবির সাথে দেবরের পরকিয়া, ভাতিজা খুন
  •   দোয়ারাবাজারে হামলায় সম্ভাব্য ইউপি সদস্য প্রার্থী আহত, উত্তেজনা
  •   গ্রামে এসে নৌকা নিয়ে ঘুরলেন পরিকল্পনামন্ত্রী