আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সম্প্রতি পাঠক প্রিয় সিলেটভিউয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ শহীদ মিনার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণে বিদ্যালয় প্রশাসন বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে না আসলেও ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত শহীদ মিনারটি পুনঃনির্মাণে এগিয়ে এসেছেন বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও প্রবাসীরা।
এলক্ষ্যে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে যাবতীয় বিষয় এগিয়ে নিয়ে আসলেও বাঁধ সাধে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। নিজেদের ধাম্ভিকতার দরুন সাবেক শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে উড়িয়ে দিচ্ছেন তারা বলে জানা যায়। সরকারি অর্থায়ন ছাড়া সাবেক শিক্ষার্থী ও প্রবাসীদের টাকায় শহীদ মিনার করা যাবে না বলে উদ্যোক্তাদের জানিয়েছেন তারা।
এ উদ্যোগকে সরকার স্বাগত জানালেও ম্যানেজিং কমিটির এমন নেতিবাচক সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতনমহল।
এব্যাপারে বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক মরজুরুল আজাদ পাভেল প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, শহীদ মিনারের বেহাল অবস্থা দেখে আমরা সাবেক ছাত্ররা উদ্যোগী হয়ে শহীদ মিনার নির্মাণে টাকা সংগ্রহ করেছি।
দ্রুত কাজ শুরু করার ব্যবস্থাও চলছিল। কিন্তু সাবেক ছাত্রদের এমন উদ্যোগকে উড়িয়ে দিয়ে বাঁধা দিচ্ছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। তাদের ধাম্ভিকতা আর ভিলেজ প্রলিটিক্স এর ফলে ছাত্রদের এমন মহৎ উদ্যোগকে বাঁধাগ্রস্ত হতে হচ্ছে। সরকার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির এমন হীনমন্যতায় আমরা অবাক।
বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ফ্রান্স প্রবাসী মজিরুল ইসলাম বলেন, অনেক আশা নিয়ে তরুণ প্রজন্ম শহীদ মিনার নির্মাণে এগিয়ে এসেছিলেন। আমরা সাবেক ছাত্র প্রবাসীরা এগিয়ে এসেছিলাম। আমি নিজেও ৩০ হাজার টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। কিন্তু ম্যানেজিং কমেটি বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন। আমি তরুণদের বলবো হতাশ হওয়ার কারণ নেই। ভালো কাজে বাঁধা আসবেই।
অন্যদিকে বীরগাঁও ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আজিজ মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ে একটি শহীদ মিনার নির্মাণে সাবেক ছাত্ররা উদ্যোগী হয়েছেন। তারা আমাদের অনুমতি নিয়েছেন। আমরা প্রথমে টাকা সংগ্রহের বিষয়টি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে বললেও পরে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্যে বলেছিলাম। তবে পাশের খাল ভরাট করে সরকারি অনুদানে শহীদ মিনারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটি ।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জামিনুল হকের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূর কালাম বলেন, বিদ্যালয়ে একটি শহীদ মিনার নির্মাণে এলাকার সাবেক শিক্ষার্থীরা টাকা সংগ্রহ করছেন। তারা আমার কাছেও সহযোগিতা চেয়েছিলেন। আমি তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। সাবেক শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। তবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি কেনো বাঁধা দিচ্ছেন জানি না।
এছাড়া দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.সফি উল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলবো।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২৫ আগস্ট ২০১৯/ এমএসএনএ/এসএইচ