সৌন্দর্যের জানান দিচ্ছে তাহিরপুরের শাপলার বিকি বিল

এম.এ রাজ্জাক, তাহিরপুর :: পুরোপুরি শীত না এলেও শীতের সৌন্দর্য্য জানান দিচ্ছে জলের রানী শাপলার বিকিবিল। ১৪.৯৫ একর জমির পুরো বিল জুড়ে লাল শাপলার সমারোহ দেখে যে কারো মনে আকর্ষণ জেগে উঠছে। লাল আর সবুজের সমারোহ দূর থেকেই চোখে পড়ছে। কাছে গেলেই সবুজের পটভূমিতে লালের অস্তিত্ব আরো গাঢ় হয়ে ধরা দিচ্ছে। চোখ জুড়িয়ে যায় জাতীয় ফুল জলের রানী শাপলার বাহারি সৌন্দর্য্যে।

সূর্যের সোনালি আভা শাপলা পাতার ফাঁকে ফাঁকে পানিতে প্রতিফলিত হয়ে বিকিবিলের সৌন্দর্য্য আরো কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। জলের রানী শাপলা ফুলের বিকিবিলে ইতিমধ্যে পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত হচ্ছে। ভোর থেকে সকাল ১২টা পর্যন্ত ফুটে থাকা লাল শাপলাগুলো সবুজের মধ্যে লাল চাদরে ঢেকে রাখে। অপরূপ সৌন্দর্য্যের শাপলা বিকিবিল যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে পর্যটন এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন পর্যটক ও স্থানীয়রা।

এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ সরেজমিন পরিদর্শন করে টাঙ্গুয়া হাওর, নিলাদ্রী ডিসি পার্ক, শহীদ সিরাজ লেক, বারেকটিলা, যাদুকাটা নদী, জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান ও প্রতœতাত্তিক নির্দশন লাউড়ের রাজধানী হলহলিয়া জমিদার বাড়ীর পাশাপাশি লাল শাপলার বিকিবিল কেও জেলা প্রশাসনের আওতাভুক্ত করে একটি সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাগজে কলমে হাওরের নাম বিকি বিল থাকলেও লোকমুখে বেকি বিল নামেই পরিচিত। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল (উত্তর) ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের সামনে বাদাঘাট ও কাউকান্দি বালিয়াঘাট নতুন বাজার সড়কের মাঝা মাঝিতে এর অবস্থান। কাশতাল, বরোখাড়া ও আমবাড়ী গ্রাম বিকিবিল কে তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। মুলত বোর ফসলি জমির হাওর এটি। বার মাস’ই কম বেশি শাপলার দেখা মিলে এ হাওরে। তবে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এর বিস্তৃতি বেড়ে যায় বহু গুণে। দুর থেকে বুঝা যায় কি পরিমান ফুল ফুটেছে বিকি বিলের বুকে। কাছে গেলেই স্পষ্ঠ হয়ে উঠে ফুলের বিস্তৃতি। কোথাও হাঁটু পানি কোথাও কোমর পানি। যে দিকেই চোখ যায় শুধু লাল আর সবুজের খেলা।

ট্রাভেলার বাবরুল হাসান বাবলু বলেন, গত কিছুদিন আগে লোকমুখে শুনে আমরা কয়েকজন শাপলা ফুল দেখার জন্য হাজির হয় বিকিবিলে। বিকিবিলে গিয়ে দেখী এখানে এলাহীকান্ড। যে যার মতো ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং গণ্যমাধ্যমে প্রকাশ করলে চারদিকে হৈ চৈ পড়ে। আর এর সূত্রে ধরেই জেলা জেলা প্রশাসক স্থানটি পরিদর্শন করে একটি সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে বিকিবিলকে জেলা প্রশাসনের পর্যটন এরিয়ার সঙ্গে নতুন একটি স্থান অন্তভুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি জেলা প্রশাসনের হাত ধরেই তাহিরপুরের পর্যটন শিল্প সম্পট গুলো বিকশিত হবে তার আপন মহিমায়।

বড়দল (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম বলেন, এ বিকিবিল হলহলিয়া ও দিঘলবাঁক মৌজার প্রায় ১৪.৯৫ একর জায়গা নিয়ে গঠিত। প্রায় ১০/১২ বছর পূর্বে এ বিলে সামান্য ফুল ছিল, গত ৩/৪ বছর ধরে পুরো হাওরে লাল শাপলা ফুটে বিশাল আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, রাস্তাঘাট উন্নয়ন হলে শাপলা মৌশমে এখানে পর্যটকদেরও সমাগম ঘটবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ অক্টোবর ২০১৯/এমএআর/ডিজেএস

আপনার মতামত দিন