Sylhet View 24 PRINT

নাতি তোফাজ্জলকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন দাদা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-১৫ ২২:৩২:৩৪

তাহিরপুর প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে নির্মমভাবে শিশু তোফাজ্জল হত্যার দায় স্বীকার করেছে তোফাজ্জলের দাদার ফুফাতো ভাই (সম্পর্কে তোফাজ্জলের দাদা) রাসেল মিয়া। রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে সে ।

মঙ্গলবার বিকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে সে। বুধবার এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়া অন্য ৬ জনকেও পুলিশ আদালতে হাজির করলে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন ।

পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাসেল মিয়া বলেছে, ঘটনার দিন তার খাটেই শুয়েছিল শিশু তোফাজ্জল। সে নিজে শুবার সময় হঠাৎ করে বিছানার উপর পড়লে তোফাজ্জল চিৎকার দিয়ে ওঠে। তোফাজ্জল যাতে চিৎকার না দেয় এজন্য সে তাকে (তোফাজ্জলকে) বালিশ চাপা দিয়েছিল। এক পর্যায়ে তোফাজ্জল দমবন্ধ হয়ে মারা যায়।

পুলিশকে রাসেল বলেছে, তোফাজ্জলকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে বালিশ চাপা দেয়নি সে। কিন্তু সে মারা যাওয়ার পর সে হতবাক হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এই দোষ অন্যদের ঘাড়ে চাপানোর জন্য তোফাজ্জলের চোখ উপড়ে ফেলে, পা ভেঙে রাসেলের মৃতদের বস্তাবন্দি করে রাখে সে।

এই হত্যাকাণ্ডের পর সন্দেহ হওয়ায় শিশু তোফাজ্জলের চাচা-ফুফু এবং সম্পর্কে দাদা রাসেল মিয়াসহ ৭ জনকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল মিয়াকে সন্দেহ করে পুলিশ। সোমবার সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস টিম খুন হওয়া তোফাজ্জলের বাড়ী গিয়ে রাসেল মিয়ার শোবার ঘরের খাটের পাশের ছোট ওয়ারড্রব থেকে একটি রক্তভেজা লুঙ্গি ও দুটি বালিশের কাভার উদ্ধার করে।  এদিকে ঐদিনই আটক ৭ জনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সুনামগঞ্জের কোর্ট ইন্সপেক্টর আশেক সুজা মামুন জানান, রাসেল মিয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুভদীপ পালের আদালতে মঙ্গলবার বিকালে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

তিনি জানান, এ ঘটনায় আটক তোফাজ্জলের ফুফু শিউলী বেগম, ফুফা সেজাউল কবির ও তার বাবা কালা মিয়া, হাবিবুর রহমান হবি মিয়া, চাচা সালমান মিয়া ও লোকমান মিয়ার রিমাণ্ড শেষ হওয়ায় বুধবার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুভ দীপ পালের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, রাসেল মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় অন্যদের রিমান্ডে রাখার যৌক্তিক কারণ না থাকায় তাদেরকে বুধবার আদালতে হাজির করা হয়।

প্রসঙ্গত. তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাসতলা গ্রামের জুবায়েল হোসেনের ছেলে ৭ বছরের শিশু ৪ দিন নিখোজ ছিল। শনিবার ভোর রাতে শিশুর চোখ উপড়ে ফেলা পা ভাঙা অবস্থায় বস্তাবন্দি লাশ হবি মিয়ার ছেলে রাসেলের বাড়ীর পাশেই পাওয়া যায়। এ ঘটনায় জুবেলের ফুফু-ফুফা ও চাচাসহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই দিনই আটক করেছিল পুলিশ। পরে রাসেল মিয়া ও শিউলি বেগমের ৫ দিন এবং অন্য ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের জন্য রিমাণ্ডে নেয় পুলিশ।

পরে এ ব্যাপারে নিহতর পিতা জোবায়েল হোসেন একটি অজ্ঞাতনামা হত্যা মামলা করেন তাহিরপুর থানায়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ জানুয়ারি ২০২০/স্বাধীন/পিডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.