আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং
সামিউল কবির :: সারা বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারনে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানী ঘটছে। ঠিক সেই সময়ে মরণঘাতি করোনার থাবায় দিন দিন আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যাও বেড়েই চলছে। একের পর এক মৃত্যুর সংবাদ শুনে মানুষ আজ দিশেহারা। গণপরিবহন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা,সরকারী বেসরকারী অফিস আদালত ২৬ মার্চ থেকেই ছুটি ও বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
দিনদিন ছুটি শুধু বেড়েই চলছে, কবে এর অবসান হবে আদৌ কারও জানা নেই। ঠিক সেই সময়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের একমাত্র শস্য ভান্ডার অনেক স্বপ্নের সোনালী বোর ফসল পাকতে শুরু করেছে। এই এলাকায় ধান কাটার মৌসুমে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা ধান কাটার শ্রমিকের (নাইয়ার) উপর নির্ভরশীল কৃষক সমাজ।
বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন গিয়ে অধিকাংশ কৃষকদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, আর ৫-১০ দিন পর ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু মহামারী করোনা পরিস্থিতির কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এবং মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন উপজেলা তথা দূর দুরান্ত থেকে ধান কাটার শ্রমিক আসতে নারাজ এবং কেউ কেউ আসতে চাইলেও পথে পথে প্রশাসনের চেকপোষ্টের ভয়ে আসতে চাচ্ছেন না। এই অবস্থায় যদি শ্রমিক না আসে তাহলে গোলায় ধান তুলা কঠিন হয়ে যাবে এবং ধান না তুলতে পারলে করোনার চেয়েও ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিবে দক্ষিণ সুনামগঞ্জে।
উপজেলার সাংহাই হাওরের এক কৃষক চমক আলী বলেন, চিন্তায় আছি কিভাবে ধান ঘরে তুলবো। করোনা ভাইরাসের কথাশুনে মারাত্মক ভয় হচ্ছে কখন জানি কি হয়। যদি অবস্থার পরিবর্তন না হয় তাহলে আমাদের কষ্টের শেষ থাকবে না।
আরেক কৃষক শামীম মিয়া বলেন, ঘরে ধান তোলার আগ পর্যন্ত আমাদের দুশ্চিন্তা থাকবেই। আল্লাহ জানেন এবার আমাদের ভাগ্যে কি আছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ৮ টি ইউনিয়নের কয়েকটি হাওরে এবার ২২ হাজার ৩ শত ৩৯ হেক্টর বোর ফসল আবাদ হয়েছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের কৃষকদের খোজঁখবর নেওয়া হচ্ছে এবং যে সমস্ত ইউনিয়নের ধান কাটার মেশিন ও ধান মাড়াই করার মেশিন দেওয়া হয়েছে তা সচল রাখার জন্য তাগিদ দেওয়া হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুরত্ব বজায় রেখে ধান কাটার শ্রমিকরা যাতে ধান কাটতে আসতে পারে সেই ব্যাপারেও খোঁজখবর রাখছেন তারা।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন নাহার শাম্মী জানান, এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা হয়েছে। ধান কাটার শ্রমিক যদি এলাকায় আসতে চান তাহলে তারা স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ধান কাটায় আসতে পারবেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/৮ এপ্রিল ২০২০/এসকে/এসএইচ