Sylhet View 24 PRINT

দোয়ারাবাজারে সাফল্য ধরে রেখেছে মুহিবুর রহমান মানিক সোনালীনূর উচ্চ বিদ্যালয়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৬-০১ ১৮:৩৪:০৩

তাজুল ইসলাম, দোয়ারাবাজার ::  এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে দোয়ারাবাজার উপজেলার পশ্চাৎপদ হাওর এলাকার বিদ্যাপীঠ মুহিবুর রহমান মানিক সোনালী নূর উচ্চ বিদ্যালয়। উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুরের হাওরপারে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত এ বিদ্যালয়টি ১৯৯৮ সালে এলাকার হাতেগোনা উদ্যোগী কিছু হৃদয়বান লোকদের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবছরই ফলাফলের দিক দিয়ে চমক দেখিয়ে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এবারও  এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুহিবুর রহমান মানিক সোনালী নূর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৫৬ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১টি জিপিএ -৫সহ কৃতকার্য হয়েছে  ৫২ জন। পাসের হার ৯২.৮৬% । এবার পাসের হারের দিক দিয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করায় হাওরপারের জনপদে বইছে আনন্দের বন্যা।

স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের একান্ত সহযোগিতায় ২০১০ সালে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের প্রাথমিক অনুমোদন পায় প্রতিষ্ঠানটি। তাই এলাকাবাসী তার ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে তার নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করেন মুহিবুর রহমান মানিক সোনালী নূর উচ্চ বিদ্যালয়।

প্রতিষ্ঠাকাল থেকে কয়েকজন উদ্যমী শিক্ষকের নিরলস প্রচেষ্টায় অনেকটা বিনা পারিশ্রমিকেই পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন। বিগত দিনের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ চলতি বছর এ বিদ্যালয়টি জুনিয়র সেকশনে এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নানা সমস্যা, সংকট ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও থেমে যায়নি ওই বিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা।
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে আলীপুর, নূরপুর, সোনাপুর, নন্দীগ্রাম, বৈঠাখাই, বরকাটা, হাছনবাহার, সুলতানপুর ও পশ্চিম টিলাগাঁওসহ আশাপাশের ৮-১০ গ্রামের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ণ করছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় রয়েছেন মোট ৮জন শিক্ষক-কর্মচারী। আলাপকালে বিদ্যালয়ের প্রথম ও প্রধান উদ্যোক্তা মুহম্মদ মশিউর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, 'আশপাশে কোনো মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এখানকার শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক শিক্ষার গন্ডি পেরোবার আগেই ঝরে পড়তো। যারা এই প্রতিষ্ঠানটি দাঁড় করাতে অর্থ, শ্রম ও মেধা ব্যয় করেছেন তাদের অনেকেই এখন আর জীবিত নেই, এসব মহান ব্যক্তিদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তাদের সহযোগিতা না পেলে অজোপাড়া গাঁয়ের এ প্রতিষ্ঠানটি আজ আলোর মুখ দেখতো না। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টা ছাড়া কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠানটি এতোদূর অগ্রসর হতোনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যবধি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সেচ্ছায় শ্রম দিয়ে বিদ্যালয়টি টিকিয়ে রেখেছেন। যার সুফল হাওরপারের জনগন আজ উপভোগ করছেন। বিদ্যালয়কে কলেজ পর্যায়ে উন্নীতকরণ এখন সময়ের দাবি।'

বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ও জেলার শ্রেষ্ঠ মৎস্যচাষী আব্দুর রহিম বলেন, 'অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়মুখী পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে খাসিয়ামারা নদীতে একটি সেতু এবং আলীপুর থেকে নূরপুর ও বৈঠাখাইগামী রাস্তা পাকাকরণ অতি জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।'

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, 'বিজ্ঞান বিভাগ না থাকায় এলাকার অনেক শিক্ষার্থীরা বাইরের প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষক সংকটও রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগ এবার চালু হয়েছে কিন্তু অনুমোদন হয়নি। বিদ্যালয়ে একটি কম্পিউটার ল্যাবরেটরীসহ সাইন্স ল্যাবরেটরী অত্যাবশ্যক। আমাদের শিক্ষক সংকট থাকা স্বত্ত্বেও বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে পাঠদান অব্যাহত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সংকট ও সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে পারলে আমরা খুব শিগগির সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।' 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মেহের উল্লাহ বলেন, 'সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত দুর্গম হাওরাঞ্চলের প্রতিষ্ঠান হিসেবে মুহিবুর রহমান মানিক সোনালী নূর উচ্চ বিদ্যালয় বেশ ভালো রেজাল্ট করেছে। সুযোগ সুবিধা পেলে প্রতিষ্ঠানটি সামনে আরো ভালো করবে।' 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১  জুন ২০২০/ ডেস্ক/ জুনেদ


সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.