আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং
শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ :: প্রতিদিনই করোনার সক্রমণ বাড়ছে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জে। দফায় দফায় বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে পুরো জেলা।
একদিকে করোনা আর অন্যদিকে বন্যা। বিপদ পিছু ছাড়ছেনা দেশের সীমান্তিক হাওর অধ্যুষিত জেলা সুনামগঞ্জকে।
করোনার এমন ভয়াবহতার মধ্যে পর পর বন্যা যেন মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সপ্তাহের মাথায় দুই বার বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে এই জেলায়। পাহাড়ী ঢল আর টানা বৃষ্টিতে সুরাম নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সরমার পানি উপছে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ শহরসহ জেলার নিম্নাঞ্চল।
সুনামগঞ্জের সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারবাজার, ছাতক, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলায় পানিবন্ধী অবস্থায় রয়েছেন লাখো মানুষ। দ্বিতীয় ধাপে আবারও ৫০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানাগেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সুরাম নদীর বিপদসীমা ৭.৮০ সেন্টিমিটার থাকলেও টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ী ঢলে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বন্যার পানি বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৩৩ মিলিমিটার।
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ না বাড়লে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান।
এদিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্র ও কন্টোল রুম খোলা হয়েছে। বন্যার্তদের আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বন্যায় ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। জরুরী ভিত্তি ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
অপর দিকে প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনার সক্রমণ।
শুক্রবারে যুক্ত হওয়া নতুন আরো ১৩ জন রোগী মিলে শনিবার দুপুর ২ টা পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১শত ৬২ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮ জন। সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৮১জন। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরুত্ব না মানার কারণে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়াও বন্যার কারণে আশ্রয় কেন্দ্রে শারিরীক দুরুত্ব নিশ্চিত না করে একত্রে অবস্থান করায় করোনা ঝুঁকি থাকছেন বন্যার্তরা।
বন্যার্তদের জরুরী মেডিকেল সেবা প্রদানে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন।
তিনি বলেন, জেলার করোনা রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণ। বন্যা চলাকালীন শারিরীক দুরুত্ব নিশ্চিত না করতে পারলে সংক্রমণ বাড়বে বলে জানান তিনি। তাই স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত সচেতন থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ বলেন, পর পর বন্যায় সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে সুনামগঞ্জ আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্টোল রুম ও আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দ্বিতীয়ধাপে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সংগ্রহে স্ব স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশণা দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরী ত্রাণ সামগ্রি পৌঁছে দেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ জুলাই ২০২০/এসএনএ/এসডি