সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৮-১০ ০০:৫৫:০৯
শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ :: করোনা মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের শর্তে গণপরিবহন চালানোর অনুমতি দেয় সরকার। সেজন্য পরিবহন মালিকদের ক্ষতি পোষাতে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির নির্দেশনা দেয়া হয়। পরিবহণে সরকারি নির্দেশনায় পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা লাভবান হলেও যত ক্ষতি সাধারণ যাত্রীদের। পরিবহনে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে বাস, লেগুনা, সিএনজি, অটোরিকশাসহ চলাচলকারী যানবাহনে সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত না করে যানবাহন ভর্তি যাত্রী উঠানো হলেও ঠিকই ৬০% ভাড়া আদায় করা হচ্ছে যাত্রীদের। কোথাও কোথাও নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন চালকরা বলে অভিযোগ যাত্রীসাধারণের। অতিরিক্ত যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া, যাত্রীদের উপর স্টিমরোলার চালিয়ে ফায়দা লুটছেন পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা। সড়ক পথে প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় সড়ক পথে অরাজকতা হচ্ছে বলে অভিযোগ সাধারণ যাত্রীদের।
যেসব গণপরিবহন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি ২০১৮ সালের ‘সড়ক পরিবহন আইন'র সংশ্লিষ্ট ধারা/প্রচলিত বিধি-বিধান অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট বাতিল করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ-সিলেট, সুনামগঞ্জ-পাগলা-জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ-দিরাই, সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর- তাহিরপুর, সড়কে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত করে যাত্রী বহন করার কথা থাকলেও গা ঘেঁষাঘেঁষি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। পরিবহণে বোঝাই ভর্তি যাত্রীবহন করলে ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে চুল পরিমাণ ছাড় দিচ্ছেন না পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা। কোথাও কোথাও মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতেও দেখা গেছে। সিণেট সুনামগঞ্জ সড়কে গেইটলক বাস সার্ভিসে সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত করে যাত্রী বহন করা হলেও লোকাল বাসসার্ভিসে তার তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। এছাড়াও জেলার আন্তঃউপজেলা সড়কে লেগুনা ও সিএনজির ক্ষেত্রে আরও ভয়াবহ চিত্র। লেগুনাতে ১৪ জন ও সিএনজিওতে ৫ জন যাত্রী বহন করলেও ভাড়া ঠিকই অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে প্রায় সময় যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে বাকবিতন্ডার ঘটনাও ঘটনাও ঘটছে।
একদিকে করোনারকালীন আর্থিক সংকট অন্যদিকে পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে বিপাকে পড়ছেন যাত্রীসাধারণকে পোহাতে হচ্ছে বিড়ম্বনা।
লাল মিয়া নামে এক যাত্রী বলেন, আমি পাগলাবাজার থেকে লেগুনাতে করে সুনামগঞ্জ আসছি। আমার কাছ থেকে ৫০ টাকা নেয়া হয়েছে। গাড়িতে প্রায় ১১জন যাত্রী ছিলেন। সবার কাছ থেকে এমন ভাড়া আদায় করা হয়েছে। যাত্রী কম নিয়ে ভাড়া বেশি নেয়ার কথা হলেও গাড়ী চালকরা তা মানছেন না।
জাবেদ আহমেদ নামে আরেক যাত্রী বলেন, আমি দিরাই থেকে সুনামগঞ্জ আসছিলাম। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েও ভাড়া নির্ধারিত হারের চেয়ে অতিরিক্ত নেয়া হয়েছে। এটা এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে। দেখার কেউ নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেখা উচিৎ।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক সফিউল আলম রাসেল বলেন, পরিবহনে সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা এবং অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। আগামীতেও তা অব্যাহত রাখা হবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১০ আগস্ট ২০২০/এসএনএ/ডিজেএস