আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি :: মরচে ধরা টিনের চালা ও হেলেপড়া ঝুঁকিপূর্ণ মাটির বেঁড়া ধসে যেকেনো মূহুর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। জীর্ণশীর্ণ নড়বড়ে ওই ভাঙা ঘরেই ৬ সদস্যের বসবাস।
মাটিতে গাদাগাদি করে কোনোরকম থাকছেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের পূর্বচাইরগাঁও গ্রামের দুদমেহের, চাঁনমেহের, হাসিম পাগলাসহ পরিবারের ৬ সদস্য।
নেই তাদের নিজস্ব কোনো ভিটেমাটি। ১০ বছর ধরে তারা থাকছেন এক আত্মীয়র উঠোনের কোণে এক চালার ওই ভাঙা ঘরে। পরিবারের সবাই কর্মহীন তাই মাথাগোঁজার ঠাঁই একমাত্র এই ঘরটিই মেরামত করতে পারছেন না তারা। নিরুপায় হয়েই ভাঙা ঘরে রোদ-বৃষ্টি আর ঠান্ডায় কষ্টে দিন কাটছে ওই পরিবারটির।
মানুষিক রোগী হয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা ঘরে বসেই সময় কাটছে হাসিম পাগলার।
দুদমেহের জানান, নিজেই খেতে পারিনা। কর্মহীন ছেলে, পঙ্গু নাতিসহ সকলের খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব নয়, তার উপর ভাঙা ঘর মেরামত করাই দূরূহ ব্যাপার! আল্লাহ ছাড়া আমাদের কেউ নেই।
চাঁনমেহের জানান, ভিক্ষুক সেজে সারাদিন মানুষের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে যা পাই তা দিয়ে কোনোমতে চলছি। প্রতিবন্ধী নাতির মুখে রীতিমতো দু’মুঠো খাবার দিতে পারি না। ভাঙা ঘরখানা মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্তত: একটু ভালোভাবে মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকু পেলে খেয়ে না খেয়ে অসুস্থ পাগল ভগ্নিপতি, সন্তান ও প্রতিবন্ধী নাতি নিয়ে বাকি দিনগুলো একটু স্বাচ্ছন্দে কাটাতে পারতাম। কয়েক বছর আগে প্রতিবন্ধী নাতি, এক ছেলে ও পাগল স্বামী রেখে আমার বোন মারা গেছে। তাদেরকে নিয়েও পড়েছি মহা সংকটে। একসাথে এক বাড়িতেই ১০ বছর ধরে আছি। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের দেখাশোনা করছি।
প্রতিবেশি আবুবক্কর ও স্বপন মিয়া জানান, হাসিম পাগলা , দুদমেহের ও চাঁনমেহেরের পরিবার একদম অসহায়ভাবে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলে অসহায় ওই পরিবারটি অন্তত মাথাগোঁজার ঠাঁই পেতো।
পাশাপাশি প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের বিত্তবানদের ওই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আকুতি জানাই।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/টিআই/এসডি-১০