সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৪-৩০ ১৪:০০:৫৮
মুনজের আহমদ চৌধুরী, লন্ডন :: জন আকাঙ্খার বাংলাদেশ ও জামায়াতের সদ্য সাবেক নেতাদের নিয়ে পর্দার অন্তরালে তোলপাড় চলছে লন্ডনে জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী ডা. শফিকুর রহমান সাংগঠনিক সফরে এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে ঘুরে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাত করছেন তিনি। অনেকের সাথে ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক করেছেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে একাধিক দায়িত্বশীল সুত্র।
লন্ডনে বসবাসরত জামায়াতে ইসলামীর পদত্যাগী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের সাথেও তিনি বৈঠক করেছেন বলে একটি সুত্রে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার শফিকুর রহমান লন্ডনে আসেন।
এসব ব্যাপারে কথা বলতে, জামায়াতে ইসলামীর যুক্তরাজ্য সফররত কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী ডা. শফিকুর রহমানের সাথে সোমবার কয়েকদফা যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হন নি।
তবে, জামায়াতে ইসলামী ইউকে ও ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা সোমবার বিকেলে বলেন, দলের সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। দলের নেতাকর্মীদের সাথে উনি দেখা সাক্ষাত করছেন। আমার সাথেও কথা হয়েছে। এখনো আনুষ্ঠানিক কোন দলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ডা. শফিকের সাথে ব্যারিস্টার রাজ্জাকের কোন বৈঠক হয়েছে কি না সেটা তার জানা নেই। ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা আরো বলেন, দলের সেক্রেটারী জেনারেল সাংগঠনিক সফরে নয়, ব্যাক্তিগত সফরে লন্ডনে এসেছেন। কবে এসেছেন, কতদিন থাকবেন এসব তার জানা নেই।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমদ রেজা। বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী সাবেক এই শিক্ষক ১৯৮২ সালে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন। ফরিদ আহমেদ রেজাসহ তার বলয়ের অনেকেই ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন জনআকাঙ্খার বাংলাদেশ নামের দলের সংস্কারপন্থীদের উদ্যোগকে।
এ প্রসঙ্গে ফরিদ আহমদ রেজা বলেন, নৈতিকভাবে মজিবুর রহমান মঞ্জুর জনআকাঙ্খার বাংলাদেশ নামের উদ্যোগটির প্রতি আমার পুর্ন সমর্থন আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু আমি নই, মজিবুর রহমান মঞ্জুর জনআকাঙ্খার বাংলাদেশ নামের উদ্যোগটির প্রতি জামায়াতের পদত্যাগী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকেরও সমর্থন থাকবে বলে আমার ধারণা। যদিও তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, তিনি আর রাজনীতিতে যুক্ত হবেন না। কিন্তু, তারপরও ব্যারিস্টার রাজ্জাক তার পদত্যাগপত্রে দল ত্যাগের যেসব কারণ উল্লেখ করেছেন, সেসব ইস্যুতেই জন্ম হচ্ছে জন আকাঙ্খার বাংলাদেশ নামের রাজনৈতিক প্লাটফর্মটির। এ কারণে রাজ্জাক সাহেব সম্পৃক্ত না হলেও অন্তত তার সমর্থন থাকবে বলে আমার ধারণা।
ফরিদ আহমেদ রেজা অপর এক প্রশ্নের জবাবে জানান, যুক্তরাজ্য সফররত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী ডা. শফিকুর রহমানের সাথে তার কোন বৈঠক হয়নি। তবে কয়েকদিন আগে ইস্ট লন্ডন মসজিদে তার সাথে দেখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামীর পদত্যাগকারী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনও ইচ্ছা আমার নেই। ভবিষ্যতে নতুন কোনও রাজনৈতিক দল করারও ইচ্ছা নেই।’
‘অ্যান ইভিনিং উইথ ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক’ নামে গত ১১ এপ্রিল লন্ডনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানেও তিনি এসব কথা বলেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী লিখিতভাবে দলত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। ঐ সভায়ও জামায়াতের দলীয় নেতাকর্মীরা যোগ না দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও শতাধিক প্রবাসী আইনজীবী ও দলীয় বিপুলসংখ্যক সমর্থক যোগ দেন।
জানা গেছে, যুক্তরাজ্যে জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। গেল কয়েক বছরে ব্রিটেনে বিপুল সংখ্যক জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মী দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ও পেয়েছেন। দলের নীতি অনুসারে এখানকার নেতাকর্মীরা নিয়মিত দলের ফান্ডে চাদা ও আর্থিক অনুদান দেন। যা বাংলাদেশে সংগঠনের কাজে খরচ হয়। আর দলীয় গন্ডির বাইরেও এখানে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের একটি সমর্থক বলয় রয়েছে। তাই রাজ্জাকের দলত্যাগ আর মঞ্জুর নতুন দল গড়বার চেষ্টায় যুক্তরাজ্যে জামায়াত যাতে সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সে চেষ্টাই চালাচ্ছেন পার্টি সেক্রেটারী ডা. শফিকুর রহমান।