আজ মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

আমরা গুরুতর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে: প্রধানমন্ত্রী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-২৫ ১২:৪২:৩৯

রুহুল আমিন রাসেল শাহ দিদার আলম নবেল, নিউ ইয়র্ক থেকে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুতর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি। এটি বাংলাদেশের মত জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য অস্তিত্বের হুমকি। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের একটি কনফারেন্স কক্ষে গ্লোবাল কমিশন অন এ্যাডাপটেশন (জিসিএ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিকালে আমাজনের জঙ্গলে আগুন এবং বাহামা দ্বিপপুঞ্জে ঘূর্ণিঝড় ডরিয়ান সমগ্র বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দেয় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কতটা বিধ্বংসী রূপ নিতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ক্রমাবর্ধমানভাবে আমাদের সভ্যতার ক্ষতি সাধন করছে।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর বিভিন্ন উদ্যোগে অর্থায়নের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য সকল দেশের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন, পরিবেশ বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম প্রমুখ।

এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি উন্নত জাতিগুলোকে কার্বন নিঃসরণ নিয়ে তাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপে অর্থায়নের আহবান জানাই। একটি অনিঃসরণকারী দেশ এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতা এবং সামর্থের স্বল্পতা থাকার পরেও বাংলাদেশ স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের অংশীদারিত্বের অঙ্গীকার এমন একটি প্লাটফর্মের সৃষ্টি করবে যেখানে উদ্ভাবনী এবং অভিযোজনমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ জলবায়ু পরিবর্তনের সহযোগিতামূলক বিভিন্ন কার্যপ্রণালী নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত আন্তঃসরকার প্যানেল’র (আইপিসিসি) ৫ম মূল্যায়ন প্রতিবেদনে (এআর-৫) পরিষ্কার বলা হয়েছে-  কার্বন নিঃসরণ কার্যকরভাবে বন্ধ বা হ্রাস করা সম্ভব না হলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বর্তমান শতাব্দীতে তীব্রতর হতে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরো ২০১৮ এবং ২০১৯ সাল জুড়েই জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রা নির্বাহে জনগণের মাথা ব্যথার কারণ হয়েছিল। আমরা দুটি ক্ষেত্রে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। প্রথমত, ভবিষ্যতে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থাগ্রহণে আর দ্বিতীয়ত যেসব অঞ্চলে পর্যাপ্ত ক্ষতি সাধিত হয়ে গেছে সেখানে অভিযোজন ব্যবস্থা গ্রহণে।

তিনি বলেন, কোটি কোটি মানুষের জীবন এবং জীবিকা ঝুঁকির মুখে থাকবে যদি আমরা এই দুটি ক্ষেত্রে সমানভাবে কাজ করতে না পারি। আমরা জিসিএ’র ঢাকা কার্যালয় স্থাপনের ঘোষণায় আরও আনন্দিত কেননা আমাদের অভিজ্ঞতা এবং অঙ্গীকার নিয়ে জিসিএ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বড় আকারের কার্যকর অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই অফিস অন্যান্য জিসিএ আন্তর্জাতিক অফিসসমূহের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হবে। অভিযোজন বিষয়ে তাদের সেরা অনুশীলণের উদাহারণ টেনে তিনি বলেন, কমিশনের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ঢাকা বৈঠক সেই অপার সম্ভবনাই দেখিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল কমিশন অন এ্যাডাপটেশন’র (জিসিএ) প্রতিষ্ঠার একটি অংশ হতে পেরে বাংলাদেশ আনন্দিত, যা অভিযোজন ব্যবস্থা উদ্ভাবন করতে এবং বিদ্যমান সেরা অনুশীলনগুলো পরষ্পরের মাঝে ভাগ করতে সহায়তা করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী কমিশনকে, কো-চেয়ার এবং কমিশনারদের ‘ফ্লাগশিপ রিপোর্ট’ প্রণয়নের জন্য অভিনন্দন জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপ, এটি জলবায়ু পরিবর্তনে এবং পানিজনিত বিভিন্ন হুমকি এবং চ্যালেঞ্জের কারণে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেক্ষেত্রে জলবায়ুর চরমভাবাপন্ন বৈরি আচরণ এবং পরিবেশের অবনমন আমাদের টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

ব-দ্বীপ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভবনাকে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেদারল্যান্ড সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ডেল্টা পরিল্পনা-২১০০ প্রণয়ন করেছে। এটি একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা, নীতি এবং অঙ্গীকার টেকসই ব-দ্বীপ বাস্তবায়নে। ডেল্টা মানেজমেন্ট অ্যাপ্রোচ গ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করে দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্যই এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’র স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা জিসিএ বাংলাদেশ, এটির সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সেরা অনুশীলন এবং অর্থ সংস্থান করতে কাজ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন

সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র খবর

  •   নিউইয়র্ক পুলিশে প্রথম নারী বাংলাদেশি ফজিলা
  •   নিউইয়র্কে ইউএস বাংলা অনলাইন প্রেসক্লাবে মেহেদী কাবুল সংবর্ধিত
  •   কমিউনিটি নেতা শাহিনের খুনীদের শাস্তির দাবীতে আমেরিকাতে প্রতিবাদ সমাবেশ
  •   আমেরিকার মিশিগানে হচ্ছে প্রথম স্থায়ী শহিদ মিনার
  •   নিউইয়র্কে পিতার জীবন বাঁচাতে বাঙালি যুবকের কিডনি দান
  •   জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা’র ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি লোকমান
  •   স্বাধীনতার সূবর্নজয়ন্তীতে মিশিগান স্টেট যুবলীগের আলোচনা সভা ও শ্রদ্ধা নিবেদন
  •   ২৫ মার্চ ‌‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণার দাবি মিশিগান স্টেট ছাত্রলীগের
  •   নিউইয়র্কে কাইযুম চৌধুরীর রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল
  •   জুয়েল সাদতের "সাদা মার্জিন" বেরিয়েছে