সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-০৭ ২২:২৯:২২
জুয়েল সাদত :: যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফ্লোরিডায় প্রথমবারের মত উন্মুক্ত বাস পিকনিক ও কমিউনিটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ২ নভেম্বর। আমার জন্য ছিল একটা বাড়তি অকর্ষন, কারন সেদিন ছিল আমার জন্মদিন । দলমত নির্বিশেষ সকল সংগঠন এর জন্য ছিল উন্মুক্ত আমন্ত্রণ। বাংলাদেশে সমিতি ফ্লোরিডা শহরে একটি নবীন সংগঠন। মাত্র ৫ মাসে বেশ কয়েকটি ভাল অনুষ্ঠান উপহার দিয়ে প্রমান করল, সদিচ্ছা ও সততা এবং সঠিক নেতৃত্ব বদলে দিতে পারে সমাজ।
শহরের ভিন্ন প্রান্ত থেকে তিনটি বাস ছাড়ে সকাল ৯ টায়। সময় নিয়ে বাংলাদেশীদের যে দুর্নাম কিন্তু এদিন ছিল ব্যাতিক্রম। সবাই ৮.৩০ মধ্যে বাসে উঠে বসেন। বাংলাদেশী অধ্যুষিত তিনটি বড় সিটি থেকে তিনটি বাস ছাড়ে সকাল ৯টায় । গন্তব্য সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার হানিমুন বিচ । তিনটি বাসের তত্বাবধানে ছিলেন দুজন করে ভলান্টিয়ার, তারা তালিকা থেকে সকলের আসনসহ নিশ্চিত করেন সাথে সবার জন্য সকালের নাস্তা । আগে থেকে সকল পরিবারের রেজিষ্ট্রৈশন থাকলেও তিনটি বাসে আসন সংকুলান হয় নি । সাড়ে তিন বাসের যাত্রী হিসাবে আমরা যাত্রা করি ।
অনেকে আসন থাকা সত্বেও মজা করার জন্য দাঁড়িয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ ফুর্তি করে বাস পিকনিক উপভোগ করেন । শহরে বাস পিকনিক আগে হয়ে থাকলেও এবারের বাংলাদেশ সমিতির বাস পিকনিক সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকায় তা প্রবাসীদের মধ্যে অন্যরকম উচ্ছাস ছিল ।সকাল ৯ টায় সবাইকে প্যাকেটে করে নাশতা প্রদান করা হয়। তিনটি বাসে ১০৫টি পরিবার সর্বমোট ২৫০ জন, অনেকে নিজস্ব গাড়ীতেও পিকনিকে যুক্ত হন।
হানিমুন বিচে বেলা সাড়ে এগারোটায় আমরা পৌঁছি। চমৎকার আয়োজন, অসাধারন টিমওয়ার্ক সকল প্রবাসীদের নজর কাড়ে। প্রথমে হানিমুন বিচের পার্কে কিছুটা মশার উপদ্রুব ছিল, বাঙালিদের বুদ্ধিমত্তায় সামান্য আগুনের উত্তাপ দেয়া মশা উধাও, স্বস্তির নিঃশ্বাস।
দিনব্যাপী চলে খেলাধুলা ও আড্ডা এবং অফুরন্ত খাবারের ব্যবস্থা সাথে চলে গান বাজনা আর কবিতা। ছোট বাচ্চাদের থেকে শুরু করে সকল বয়সীদের নানা ব্যাতিক্রমী খেলাধুলা থাকায় সকল প্রবাসীরা ছিলেন খুশি ।খেলাধুলার মাঝে মাঝে প্রবাসীরা হানিমুন বিচে ঘুরে বেড়ান ।
বাংলাদেশ সমিতির সংগঠক আনোয়ার হোসেন সেন্টু বেশ কয়েকটি নতুন খেলাধুলার সংযোজন করেন, যা ছিল বাড়তি পাওয়া । তাকে সহযোগিতা করেন মুরাদ হোসেন, নাজিমুউল্লাহ লিটন , ইসহাক আলী. হেলাল আহমদ, শোভন আহমদ, মিজান মোস্তফা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের চেষ্টা ছিল প্রবাসীদের আনন্দ দেবার । সকল প্রবাসীদের উচ্ছ্বাস আমাদের অনুপ্রেরনা ।
বাংলাদেশ সমিতির সাধারন সম্পাদক জাহিদ বলেন, তিনটি বাসের পিকনিকের আয়োজনে প্রবাসীরা খুশি হয়েছেন। ভবিষ্যতে আমরা শহরের বাইরে এরকম আয়োজনে যাবো।
হানিমুন বিচে পিকনিকের নানা আয়োজন চলে দুপুর ১২টা থেকে কে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত । স্বপন অধিকারী ও মোহাম্মদ চৌধুরী রানা গানে ও সুরে মূর্ছনায় মাতিয়ে রাখেন সবাইকে । তিনটি বাস যাত্রা কালে বাসের ভেতর চলে গান আড্ডা ও নৃত্য ।
আয়োজকদের সুন্দর ব্যবন্থাপনা সকলের ধন্যবাদ পায় সাধারন প্রবাসীদের নিকট । । বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জাহিদ অনেক সুন্দর একটি সর্ববৃহৎ বাস পিকনিক উপহার দেন যাতে সাধারন প্রবাসীদের কাছে তাদের মুল্যায়ন চোখে পড়ে । আগামীতে যাতে এরকম সুন্দর আয়োজন অব্যহত থাকে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন অনেকে ।
এই আয়োজনের পেছনে যারা ছিলেন তাদের নাম না বললে কেমন অপরাধী মনে হবে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-আনোয়ার হোসেন সেন্টু, নাজিম উল্লাহ লিটন, জাহাঙ্গীর সরদার, মুরাদ হোসেন, আব্দুল জলিল, সামস ইউ শোভন, ইসহাক আলী,হেলাল আহমদ, শামীম মৃধা, স্বপন অধিকারী, মোহাম্মদ রহমান রানা, জয়নাল চৌধুরী, জালাল আহমদ, মিজান মোস্তফা ও মো. শফি প্রমুখ।
সন্ধ্যার দিকে যখন বাস শহরমুখি তখন প্রত্যেক পরিবারকে গরম পিঠার বাক্স উপহার দেয়া হয়। সবাই গাড়িতে বসে পীঠা খান। অনেক সুন্দর একটি বাস এর কেক ছিল বাড়তি আকর্ষন, আমার জন্মদিনের শুভেচ্ছা হিসেবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/৭ নভেম্বর ২০১৯/পিডি