Sylhet View 24 PRINT

‘ব্রি‌টে‌নের বর্নবাদই অামা‌কে জ‌ঙ্গিবা‌দে ঠে‌লে‌ছে’

অাইএস ফেরত ব্রি‌টিশ বাংলা‌দেশী জয়া

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-১১-১৩ ১৩:৫২:৪৯

জয়া

মুন‌জের অাহমদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য ::   ধ‌র্মের না‌মে ক‌থিত জিহা‌দে যোগ দেয়া ব্রি‌টিশ বাংলা‌দেশী জয়া চৌধুরীর বক্ত‌ব্যে ব্রি‌টে‌নে জ‌ঙ্গিবাদ বিত‌র্কে নতুন মাত্রা দি‌য়ে‌ছে।

জয়ার পৈ‌ত্রিক বা‌ড়ি বৃহত্তর সি‌লেটে। চল‌তি সপ্তা‌হে জর্জলেস নামধারী তা‌নিয়া অা‌মে‌রিকার টেক্সা‌সের বর্তমান বাসস্থল থে‌কে দ্যা অাটলা‌ন্টিক‌ কে খোলা‌মেলা সাক্ষাতকার দেন।

ঐ সাক্ষাতকা‌রে জয়‌া ব‌লেন, "লন্ডনে বেড়ে ওঠবার সময়ে এখানকার বর্ণবাদই তার মধ্যে মৌলবাদ এর বীজ বুনে দিয়েছে। "
জয়া চৌধুরী একজন উগ্রপন্থীকে বিয়ে করেন যিনি  হয়ে ওঠেন একজন জেষ্ঠ্য পশ্চিমা জিহাদি।
তিন সন্তানসহ অসুস্থ হয়ে পড়ার এক মাসের মাথায় চতুর্থ বারের মত সন্তানসম্ভবা জয়া তুর্কিতে ফিরে আসেন এবং উগ্রবাদী আইসিস জীবন থেকে ‌ছে‌ড়ে পু‌রোদস্তুর এখন সন্তান‌দের দেখভাল কর‌ছেন।

সাক্ষাতকা‌রে জয়া অকপ‌টে ক‌রে‌ছেন নানা বি‌স্ফোরক মন্তব্য। তি‌নি ব‌লেন,"অামার  বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ পরিবারকে বর্ণবাদীদের হাতে লাঞ্চনার শিকার হতে দেখেই অা‌মি ধী‌রে ধী‌রে মৌলবাদের পথে ঝুঁকে পড়ি।

"লন্ডনে বেড়ে ওঠার সময়টা কঠিন ছিল।আমার পরিবার ছিল হতদরিদ্র,আমরা ছিলাম অভিবাসী দ্বিতীয় প্রজন্ম এবং চূড়ান্ত বর্ণবাদের শিকার। হীনম্মন্য প্রতিবেশিদেরকে আমাদের বাড়ির জানলা ভেংগে গুড়িয়ে দিতে দেখেছি যখন, তখন থেকে আমার নিজেকে বহিরাগত মনে হতে শুরু করে।
আমি হারানো সম্মান ফিরে পাবার একটা রাস্তা খুজছিলাম।

আল কায়েদার ৯/১১ আক্রমণ এর সময় আমার বয়স ছিল ১৪ বছর, তার কিছুদিনের মাথায় কিশোরী থাকাকালীন একটি মৌলবাদী আলজেরীয় দলের সংগে যুক্ত হয়ে আমার জিহাদি জীবন শুরু হয়।
প‌রে অনলাই‌নে হবু স্বামী ধর্মান্তরিত আমেরিকান মুসলিম জন জর্জ‌লে‌সের  সংগে পরিচয়ের কিছুদিন পরে কিশোরী থাকতেই গাঁটছড়া বাধেন জয়া।
অনলাইন এই কোর্টশিপ এর পর থেকেই স্বামী-স্ত্রী দুজনে নিজেদের জিহাদি ভাবনা বিনিময়ের পাশাপাশি সন্তান দের জিহাদি যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন।

তাদের জিহাদি সম্পৃক্ততার কথা জানাজা‌নি হ‌তে শুরু করে একসময়। ২০০৬ সালে তার স্বামী জন জিহাদি ওয়েবসাইট প‌রিচালনায় তথ্যপ্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান এবং আল-কায়েদাকে অনলাইন সহায়তা প্রদানের ইচ্ছা পোষণ-এই দুই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হোন।
পরবর্তীতে মুক্তি পেলে ইংল্যান্ড এবং আমেরিকায় অস্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেন। অার তার পরিবারের নতুন ঠিকানা হয় মিশর। প‌রে জন ইয়াহিয়া আবু হাসান নাম ব্যবহার করে একজন সুপরিচিত জিহাদি স্কলার হয়ে ওঠেন এবং ইসলামি খিলাফত গড়ার ডাক দেন।

জয়ার ভাষ্যমতে, ২০০৩ সালে তিনি তার পরিবারকে আযায নামের শহরে পাঠিয়ে দেন,যদিও জয়ার দাবি সন্তানসহ অসুস্থ হওয়ার পরেই তিনি পালিয়ে যান এবং তার পর থেকে টেক্সাসেই অবস্থান করছেন এই বাঙালি বংশোদ্ভূত ব্রি‌টিশ নারী।
বিবাহবিচ্ছেদ এর পর থেকে স্বামী সিরিয়াতেই অবস্থান করছেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
জয়া বলেন,"স্বামীকে আমি ভালোবাসি,কীভাবে এই ভালোবাসা মন থেকে মুছে দিতে হয় আমার জানা নেই। "

পালিয়ে ফেরার পর তিনি ইসলামের পথ থেকে সরে দাঁড়িয়ে চার্চ মুখী হ‌য়ে‌ছেন ব‌লে দাবী করেছেন জয়া। তি‌নি ঐ সাক্ষাতকা‌রে মৌলবাদবিমুখ আইসিস ফেরতদের সহায়তার ইচ্ছাও পোষণ করেন।
বেশিরভাগ প্রাক্তন আইসিস জিহাদিরা পারিবারিক দৈন্য,শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের অভাব,দারিদ্র,বর্ণবাদ এবং প্রচলিত ইসলাম-ভীতিকেই তাদের উগ্রপন্থী হওয়ার কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন।
৩৩ বছর বয়সী জয়ার বাবা অা‌শির দশ‌কের শুরু‌তে যুক্তরা‌জ্যে অা‌সেন।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৩ নভেম্বর ২০১৭/এমএসি/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.