সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৩-০৯ ১১:৫৪:৩৭
মুনজের অাহমদ চৌধুরী :: বাংলাদেশের প্রত্যেক ত্যাগী,অাত্বনিবেদিত রাজনীতিবিদ বা রাজনৈতিক কর্মীর জীবনের বাস্তবতা একই। যিনি মাঠে থাকেন,দলের জন্য শ্রম,মেধা অার অর্থ দিয়ে সর্বাত্বক সংগ্রাম করেন; তিনি থেকে যান অবমুল্যায়িত। কারন,পদবি-মনোনয়ন বিএনপি,অাওয়ামীলীগ অার জাপার মতো দলগুলিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিক্রি হয় টাকায়,সুবিধায়। যারা পদ-পদবি বা মনোনয়ন কিনে রাজনীতিতে অাসেন,তারা দল বা কর্মীকে মুল্যায়ন করবেন সেটা অাশা করাই তো অবান্তর। অাবার,সারা জীবন দল করবার পরও পদ পেতে টাকা লাগে,উপরের নেতারা কমিটি ছাড় করেন না টাকা ছাড়া,এমন উদাহরন হাজারো। অার, টাকা দিয়ে যদি পদ কিনতেই হয়,তাহলে মিছিল-মিটিং অার অান্দোলন সংগ্রাম করে পুলিশের মার খাবার দরকারটাই বা কি?
অারেকদল অাছেন বাই-প্রোডাক্ট। যারা রাজনীতি করেন,বাবা-চাচা-মামা নয়তো ভাইয়ের নামে; উত্তরাধীকারের রাজনীতি। যেভাবে পীর সাহেবের মৃত্যুর পর পীরের ছেলে হন দরবারের গদীনশীন পীর।
অামার সিলেট অঞ্চলের কেবল বড় দুই সংগঠনের ছাত্ররাজনীতির কথাই বলি। জেলা কমিটি দেবার সময় কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদক জেলার সভাপতি অার সাধারন সম্পাদক এ দুটি পদের জন্য রীতিমত যেন নিলাম বসান। অামার নিজের জেলায় একটি সংগঠনের দুটি পদ ১২ লাখ টাকায় বিক্রি হয় কয়েকবছর অাগে। এখন প্রশ্ন হল, যিনি পদটি কিনলেন,অধীনস্থ ইউনিটের কর্মীর কাছে,দলের কাছে,সমাজের কাছে তার কমিটমেন্টটি কোথায় থাকল? ফেসবুকের যুগে বহু এমপি,এমনকি পাতি নেতারও অালাদা লোকই ঠিক করা থাকে,ফেসবুকে স্যোশাল মিডিয়ায় তাদের গুনকীর্তনের। কৃত্রিম ছবি ছাপাছাপি,পুলিশের ভয়ে কানা গলির ভেতরে ঢুকে ফটোসেশনের রাজনীতি চলে। অনেক নেতার ফেসবুকে লাখ লাখ ফলোয়ার,নির্বাচনে দাড়ালে তবু ভোটের সংখ্যা হাজার পেরোয় না।
প্রতিটি দলে গ্রুপ-উপগ্রুপের বলয়ভিত্তিক রাজনীতি অাছে। সেখানে অাধিপত্যের বলিখেলায় প্রান যায় সাধারন কর্মীর। অনেক ত্যাগী কর্মীর চাকুরীর বয়স পেরিয়ে যায় ছাত্র রাজনীতির মোহজালে। কিন্তু,নেতা হয় নেতার ভাই, দেশী নয়তো প্রবাসী বিত্তবান। সময়-সুযোগে কখনো বড় নেতাই বিক্রি হয়ে যান সুবিধার দামে। তখন কর্মীটি অার পারেন না জীবনের অপচয়ের হিসেব মেলাতে।
বড় দলগুলির মালিকরা যে সেটা কমবেশি জানেন না, তাও না। অাসলে অামাদের রাজনীতির রন্দ্রে রন্দ্রে নীতিহীনতা। নীতিহীনতার এ চলতি স্রোতে নেতারা প্রায় ক্ষেত্রে নীতি,বিবেক অার কর্মীর সাথে বেঈমানী করেই বড় নেতা হন। উপায়ও নেই। না হলে যে রাজনীতির নীতিহীনতা তাদের সাথেই বেঈমানী করবে।
এই নীতিহীন,টাকায় পদ কেনা,ফটো রাজনীতির মধ্য দিয়ে সমাজ দেশ উপকৃত হবে,এমন মিথ্যে কথাগুলি অামি ঘৃনা করি স্বযত্নে। যতদিন নেতারা নীতিতে ফিরবেন না,দলগুলি পদ অার মনোনয়ন বেচাঁ বন্ধ করবে না,ততদিন এই নষ্ট রাজনীতি কোন কল্যান বয়ে অানতে পারবে না। নেতারা নীতিতে না ফিরলে সব সেক্টরে অনিয়ম কখনো থামবে না।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/৯মার্চ২০১৮/এমএসি/এক