সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৪-০৬ ০০:৪৬:৪৯
অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকালে গত ছয় মাসে একই স্থান থেকে প্রায় ১৪০ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মেক্সিকো সীমান্ত ঘেঁষা লারেদো নামক এই ছোট্ট শহর থেকে চলতি বছরের মার্চ মাসেই প্রায় ২৪ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছিল।
বর্ডার সিকিউরিটি গার্ডের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা মিগুয়েল কন্ট্রেরাস গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অন্য যেকোনও স্থানের চেয়ে এই লারেদো থেকে বাংলদেশি গ্রেপ্তারের সংখ্যা অনেক বেশি। অবৈধ পথে পাড়ি জমানো বাংলাদেশিরা কেন এই নির্দিষ্ট স্থানটিকে বেছে নিয়েছেন তা জানা যায়নি। এমনকি লারেদো সিটি কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এর সঠিক কোনো জাবাব পাওয়া যায়নি।
কন্ট্রেরাস আরো বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধী সংগঠনগুলো এই সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে। তারাই নির্ধারণ করে দেন কারা কখন এবং কোন পথ দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করবে। তবে গ্রেপ্তারের পরই অনুপ্রবেশকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখেন এই সীমান্ত নজরদারি সংস্থা। প্রয়োজনে তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়ে থাকে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মিগুয়েল কন্ট্রেরাস বলেন, দক্ষিণ টেক্সাস এলাকায় বর্ডার সিকিউরিটি গার্ডের সদস্যদের নানাবিধ সমস্যায় থাকতে হয়। তারপর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশিকে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক কাগজপত্র ঠিক করার পর গ্রেপ্তারকৃত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়ে থাকে।
এদিকে ‘ধরো এবং ছাড়ো' এ প্রক্রিয়াকে আরো কঠোর করার চিন্তা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। আর ঠিক এ সময়ই ওই সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি খবরের শিরোনাম আসে।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোর মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসন বন্ধের জন্য তিনি সামরিক বাহিনী পাঠাবেন। আর বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কট্টর ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম ব্রেইটবার্ট নিউজের খবরে তাদের সঙ্গে ইসলামী চরমপন্থীদের যোগসাজশের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য এ ব্যাপারে বাংলাদেশ দূতাবাস বলেছে, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিদের সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছেন। আটক ব্যক্তিদের সঠিক পরিচয় নিশ্চিত করতে মার্কিন সরকারকে তারা পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।
দূতাবাসের প্রেস সেক্রটারি শামীম আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমরা মার্কিন আইনকে শ্রদ্ধা করি তাই এই বিষয়টি দেখার জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আটক ব্যক্তিদের অনেকেই ক্ষমতাসীন সরকারকে দোষারোপ করে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। কিন্তু তাদের এ দাবির পক্ষে কোনও দলিল নেই।
তিনি আরো বলেন, এই মানুষগুলো তাদের জীবনকে উন্নত করতে চায়। আর এজন্য যে কোনও উপায়ে যু্ক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে মরিয়া হয়ে উঠেন।