আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নফাঁস হতে সাবধান! আসছে ডিজিটাল সিস্টেম

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৩-২৮ ১৬:২৯:৩৮

আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। তবে এসব উদ্যোগ বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে না পারলেও নির্ধারিত প্রশ্নটি যে সুরক্ষিত থাকবে সেটি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।

প্রশ্নফাঁস রোধে কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হবে এবং উক্ত কাজে কাদের সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে সে বিষয়েও কোনো ধারণা দেয়নি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিকিউর্ড, ডিজিটাল ও আংশিক এনালগ পদ্ধতির সংমিশ্রণে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। এমনকি একাধিক প্রশ্নপত্র ডিজিটাল সিস্টেমে দেয়া থাকবে যা নির্দিষ্ট সময়েই পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে।

মজার বিষয় হলো, পরীক্ষার জন্য যে প্রশ্নটি দেয়া হবে তা কোন মানুষ দ্বারা নির্ধারিত হবে না। প্রশ্নপত্রের সকল সেট পরীক্ষাকেন্দ্রে যথাসময়ে সরবরাহ করা হবে এবং একাধিক সেটই পরীক্ষার্থীরা দেখতে পাবে তবে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার ঘণ্টা বাজার পরেই পরীক্ষাকেন্দ্রে স্থাপিত ডিজিটাল ডিভাইস বা সিস্টেমের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা কোন সেটে পরীক্ষা দেবে তা জানতে পারবে।

আর এটি লটারি পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয়ভাবে স্থাপিত ডিজিটাল সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেকোন সেট নির্ধারণ করবে যথাসময়ে। ফলে প্রশ্নপত্রের সকল সেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কয়েক মিনিট আগে দেখতে পারলেও প্রশ্নপত্র নির্ধারণটা একদম পরীক্ষার সময় শুরু হলে জানা যাবে বলে তা আর ১ মিনিট আগেও ফাঁস হওয়ার সুযোগ থাকছে না।

এ কারণে পরীক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পেলেও সেটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক ও প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই হবে না।

এদিকে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে জানা গেছে, ফেসবুকে সঠিক প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি একেবারেই ভুল। ফেসবুকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রগুলো নামি স্কুলের শিক্ষকদের অনেকগুলো সাজেশন এক করে করা। এগুলোকে পরীক্ষার প্রশ্ন বলে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এভাবে পরীক্ষার্থীরা বারবার প্রতারিত হয়।

তবে সঠিক প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের সত্যতা এই নয় বছরে একবারই প্রমাণিত হয়। গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠিত গণিত (আবশ্যিক) বিষয়ের যে প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগে সকালে বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া গিয়েছিল, তার সঙ্গে মূল প্রশ্নের মিল পাওয়া যায়। কিন্তু তখনও সেই সেট পরিবর্তন করে পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

এছাড়া এ যাবত ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সর্বোচ্চ পঞ্চাশ শতাংশের মিল পাওয়া যায়, যা কিনা যেকোন অভিজ্ঞ শিক্ষকের সাজেশন থেকে আরো বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তা শতভাগ মিল থাকার কথা। কাজেই প্রশ্নপত্রের নামে যা ফাঁস করা হয় তা একটি চক্রের প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কৌশল ছাড়া আর কিছুই না।

তাই এবার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় এমন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নপত্র থেকে সাবধান থেকে প্রতারিত না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ, পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার এক মিনিট আগেও কারো পক্ষেই সঠিক প্রশ্নপত্রটি জানার সুযোগ থাকছে না।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সময়ে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, বিশেষভাবে সর্বশেষ এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগের পর এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ২ এপ্রিল শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন